ইতালিতে নতুন সরকার, স্বস্তিতে প্রবাসীরা
কট্টর ডানপন্থি সালভিনির জোট সরকার ভেঙ্গে ইতালিতে গঠিত হল নতুন সরকার। ইতালির জনপ্রিয় তরুণ নেতা দি মায়িওর দল ফাইফ স্টার মুভমেন্ট ও নিকোলা জিঙ্গারেত্তির ডেমোক্র্যাটিক পার্টি জোট হয়ে নতুন এ সরকার গঠিত হয়।
বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) এই সরকার গঠিত হয়েছে।
নবগঠিত এ সরকারের প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন ইতালির সদ্যবিদায়ী প্রধানমন্ত্রী জুসেপ্পে কন্তে। দেশটির রাষ্ট্রপতি সার্জিও মাত্তারেল্লা বৃহস্পতিবার জুসেপ্পে কন্তেকে প্রধানমন্ত্রী করে নবগঠিত এ সরকারের অনুমোদন দেন। এছাড়াও আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশ নবগঠিত এ সরকারকে সমর্থন জানিয়েছেন বলে জানান দি মায়িও।
নতুন এ সরকার প্রবাসীদের জন্য কেমন হবে সেটা নিয়ে ইতিমধ্যে নানা আলোচনা হচ্ছে ইতালি জুড়ে। যদিও ধারণা করা হচ্ছে, নবগঠিত এ সরকারের দুটি দলই যেহেতু মধ্যপন্থী দল সেহেতু প্রবাসীদের জন্য কোন সুখবরও বহন করতে পারে নতুন এ সরকার। যদিও বিগত দিনে তরুণ নেতা দি মায়িওর দল ফাইফ স্টার মুভমেন্ট প্রবাসীদের পক্ষে কোন কাজ না করলেও বিপক্ষে কোন কাজ করেনি।
ফাইভ স্টার মুভমেন্ট প্রবাসীদের বেলায় সবসময় মধ্যবর্তী অবস্থানে ছিল। অপরদিকে নিকোলার ডেমোক্র্যাটিক পার্টি সবসময় প্রবাসীদের পক্ষে কাজ করে আসছে।
এ বিষয়ে বাঙ্গালী কমিউনিটি ব্যক্তিত্ব ইতালি প্রবাসী এম কে রহমান লিটন বলেন, কট্টরপন্থী সালভিনির দল ক্ষমতায় এসে সরাসরি প্রবাসীদের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে অনেক আইন পাল্টে দিয়েছেন। এসব আইনের মারপ্যাঁচে পড়ে এদেশে বসবাস করাই অনেকটা কঠিন হয়ে যেত। কিন্তু নবনির্বাচিত সরকার প্রবাসীদের পক্ষে থাকায় এসব আইন অনেকটাই শিথিল হবে বলে মনে হচ্ছে।
আরেক প্রবাসী টিটু আনিসুজ্জামান বলেন, নতুন সরকার গঠিত হওয়ায় সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সালভিনি এখন থেকে সংসদে বিরোধী দলের আসনে বসবেন । এতে পরবর্তীতে যখন এদেশে নির্বাচন হবে তখন সালভিনির জয়লাভের সম্ভাবনা প্রায় নব্বই ভাগ। কারন সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হওয়া ইউরোপীয় পার্লামেন্ট নির্বাচনে ডানপন্থী দলই বেশি আসনে জয়লাভ করেছে। এথেকে ধারণা করা যায় পরবর্তী নির্বাচনে সালভিনি বিরোধীদল হয়ে নির্বাচন করলে তার জয়লাভের সম্ভাবনাই বেশি।
যদিও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাত্তেও সালভনি বৃহস্পতিবার এক ফেসবুক লাইভে এসে খুব শীঘ্রই আন্দোলনের' ডাক নামবেন বলে জানান। এছাড়াও তিনি বলেন, এখন সময় এসেছে জনগনের মতামতের উপর সরকার গঠন করার। এদেশের জনগন যাকে চাইবে সেই দেশ পরিচালনা করবে। কিন্তু সংবিধানের নিয়ম বলছে ভিন্ন কথা। এদেশে নির্বাচনের পর সরকার গঠনের জন্য রয়েছে কিছু সাংবিধানিক নিয়ম। সরকার গঠনের জন্য সংবিধানের নিয়ম মানতেই হবে বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি সার্জিও মাত্তারেল্লা।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে কোনদলই এককভাবে সরকার গঠনের জন্য ভোট পায়নি বলে মধ্যপন্থী দি মায়িওর ফাইভ স্টার মুভমেন্ট ও কট্টর ডানপন্থী লেগা নর্দের মাত্তেও সালভিনি জুসেপ্পে কন্তেকে প্রধানমন্ত্রী করে সরকার গঠন করেন। কিন্তু নানাকারনে সালভিনির উপর ক্ষিপ্ত হয়ে কন্তে প্রধানমন্ত্রী থেকে পদত্যাগ করলে পুনরায় ফাইভ স্টার মুভমেন্ট ও ডেমোক্র্যাটিক পার্টি কন্তেকে প্রধানমন্ত্রী করে সরকার গঠন করেন। সালভিনি দেশের নিরাপত্তা বানানোর নামে প্রথম থেকে বিদেশিদের বিপক্ষে নানা আইন চালু করতে থাকে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে এপর্যন্ত ইতালিতে ৬৫ টি সরকার ক্ষমতা গ্রহন করেছিলেন।