ছয় মাস পর ইতালিতে খুলল স্কুল
মহামারি করোনার কারণে ছয় মাস বন্ধ থাকার পর সোমবার (১৪ সেপ্টেম্বর) থেকে ইতালিতে স্কুল খুলে দেওয়া হলো। ২০টি অঞ্চলের ১৩টির স্কুল খুলে দেওয়া হয়েছে। বাকি সাত অঞ্চলে স্কুল খোলা হবে আরও এক সপ্তাহ পর।
৫৬ লাখ শিক্ষার্থীকে তাদের ডেস্কে ফিরতে বলা হয়েছে। সরকারের এই স্কুল খোলার সিদ্ধান্তে রোমাঞ্চিত শিক্ষার্থীরা। একই সঙ্গে কাজ করছে আনন্দ আর আতঙ্ক। রোমের প্রাইমারি স্কুল শিক্ষক পাত্রিজিয়া জুচেত্তা বলেছেন, ‘আমাদের শিক্ষক ও শিশুদের মধ্যে অনেক উত্তেজনা কাজ করছে। আমরা আবারও একে অন্যকে দেখতে পাবো, এটা খুব আনন্দের। কিন্তু অনেক কাছাকাছি না হতে পারাও একটা সংগ্রাম।’
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে গত মার্চ থেকে স্কুল বন্ধ করে দেয় ইতালি সরকার। স্কুল খোলার সিদ্ধান্তের পর ক্লাসরুমকে আবারও নিরাপদ করার ও নতুন সংক্রমণ সীমিত করার প্রচেষ্টা কিছুটা হলেও বিতর্ক তৈরি করেছে। রোববার প্রধানমন্ত্রী জিউসেপ্পে কন্তের স্বীকারোক্তি, ‘শুরুতে হয়তো সমস্যা তৈরি হবে।’
সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে ২৪ লাখ সিঙ্গেল ডেস্কের অধিকাংশ এখনও ক্লাসরুমে পৌঁছায়নি। শিক্ষকদের হাজার হাজার পদ খালি এবং বয়স্ক স্টাফরাও ঝুঁকি নেওয়ার আগে ভাবছে। ইকোনোমিক কর্পোরেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন বলেছে, ইতালির প্রাইমারি ও সেকেন্ডারি স্কুলের ৫৯ শতাংশ শিক্ষক পঞ্চাশোর্ধ্ব। এই করোনাভাইরাস মহামারিতে তারাই সবচেয়ে ঝুঁকিতে।
তাই স্কুল খোলার সিদ্ধান্তে কারও মনে আনন্দ আর উত্তেজনা কাজ করলেও অনেকে আতঙ্কিত জানালেন রোমের আভোগাদ্রো সেকেন্ডারি স্কুলের উপপ্রধান আলেসান্দ্রে কাপাতা, ‘আমরা নিরাপত্তা প্রোটোকল অনুসরণ করছি। কিন্তু ভয় আছে। তবে এই বছরের শিক্ষা কার্যক্রম নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে। অনেক শিক্ষক খুব উদ্বিগ্ন।’
শিক্ষার্থীদের বাবা-মার মনেও উদ্বেগ। স্কুলগুলো বলছে, ঠাণ্ডা বা জ্বরের মতো হালকা উপসর্গ থাকলে অবশ্যই বাচ্চাদের বাসায় থাকতে হবে। ছয় বা তার চেয়ে বেশি বয়সী শিক্ষার্থীদের ক্লাসরুমের বাইরে মাস্ক পরতে হবে এবং শারীরিক স্পর্শ এড়িয়ে চলতে হবে।
প্রাইমারি স্কুলের দুই শিক্ষার্থীর মা ক্লাউদিয়া কোস্তান্তিনি বলেছেন, ‘আমি আমার বাচ্চাদের শারীরিক সংস্পর্শ, চুমু ও আলিঙ্গন করতে বারণ করেছি। কিন্তু আমি তাদের ভয়ের রাজ্যে থাকতে দিতে চাই না। তাদের বোঝাতে হবে যে সব কিছু ঠিক হয়ে যাবে।’