লুহানস্ক দখলের পর ইউক্রেনে হামলা চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ পুতিনের
গত মাসের শেষের দিকে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় লুহানস্কের বৃহত্তম শহর সেভেরোদোনেতস্কের দখল নিয়েছিল রাশিয়া। আর দিন দু’য়েক আগে একই অঞ্চলের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর লিসিচানস্কের পতন হয়েছে রুশ বাহিনীর হাতে।
রুশ সেনাদের এই অগ্রযাত্রার মধ্যেই ইউক্রেনে আক্রমণ অব্যাহত রাখতে প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগুকে নির্দেশ দিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। মঙ্গলবার (৫ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাশিয়ার সেনারা পুরো লুহানস্ক অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর ইউক্রেনে মস্কোর আক্রমণ অব্যাহত রাখতে সোমবার প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগুকে নির্দেশ দেন রুশ প্রেসিডেন্ট।
প্রতিরক্ষামন্ত্রী শোইগুকে ভ্লাদিমির পুতিন বলেন, ‘পূর্বে অনুমোদিত পরিকল্পনা অনুযায়ী সেনাবাহিনীর পূর্ব এবং পশ্চিম শাখাসহ অন্যান্য সামরিক ইউনিটগুলোকে তাদের কাজ অব্যাহত রাখতে হবে।’
পুতিন আরও বলেছেন, ‘আমি আশা করি এখন পর্যন্ত লুহানস্কে যা ঘটেছে সামনে সবকিছুই তেমন ভাবেই চলতে থাকবে।’
এর আগে গত রোববার শোইগু প্রেসিডেন্ট পুতিনকে বলেছিলেন, মস্কোর বাহিনী এখন লুহানস্ক অঞ্চলের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। আর এটি ছিল ইউক্রেনে সেনা পাঠানোর চার মাসেরও বেশি সময়ের মধ্যে ক্রেমলিনের জন্য বড় একটি বিজয়।
এএফপি বলছে, পুতিন সোমবার বলেছেন, লুহানস্ক অভিযানে অংশ নেওয়া সৈন্যদের ‘বিশ্রাম নেওয়া উচিত এবং তাদের যুদ্ধের সক্ষমতা আবারও জোরদার করা উচিত’।
লিসিচানস্ক শহরটি ছিল লুহানস্ক অঞ্চলের ইউক্রেনীয়-নিয়ন্ত্রিত শেষ শহর। এই শহরটি মূলত ডনবাসের শিল্পাঞ্চলীয় এলাকার অংশ। এর আগে রাশিয়া গত মাসে নিকটবর্তী শহর সেভেরোদোনেতস্ক দখল করে।
উল্লেখ্য, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ভোরে ইউক্রেনে হামলা শুরু করে রাশিয়ান সৈন্যরা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপের প্রথম দেশ হিসেবে রাশিয়ার সশস্ত্র বাহিনী স্থল, আকাশ ও সমুদ্রপথে ইউক্রেনে এই হামলা শুরু করে। একসঙ্গে তিন দিক দিয়ে হওয়া এই হামলায় ইউক্রেনের বিভিন্ন শহরে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র পড়েছে বৃষ্টির মতো।
মস্কো অবশ্য ইউক্রেনে তাদের এই আগ্রাসনকে ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ বলে আখ্যায়িত করছে। এছাড়া যুদ্ধের শুরুতে পুরো ইউক্রেনীয় ভূখণ্ড আক্রান্ত হলেও রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর মূল মনোযোগ এখন দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় ডনবাস এলাকায়।
বার্তাসংস্থা রয়টার্স বলছে, ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে শুরু হওয়া রাশিয়ার আগ্রাসনের কারণে ইউক্রেনে হাজার হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। ঘর-বাড়ি হারিয়ে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন আরও লাখ লাখ মানুষ। আর এর জেরে পশ্চিমা দেশগুলোর কঠোর আর্থিক নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়েছে মস্কো।