খেরসন ছেড়েছে রুশ সেনা, ইউক্রেনীয়দের উল্লাস
রাশিয়ার দখলকৃত খেরসন শহরে নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনী। দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিও কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ শহর এখন তাদের হাতে বলে ঘোষণা দিয়েছেন।
শনিবার (১২ নভেম্বর) যুক্তরাষ্ট্রও মিত্র দেশটি ‘অসামান্য বিজয়’ অর্জন করেছে বলে মন্তব্য করেছে।
বিবিসির লাইভ প্রতিবেদনে এসব তথ্য দেওয়া হয়েছে। খবরে আরও বলা হয়েছে, খেরসন পুনর্দখলের সংবাদ প্রকাশের পর স্থানীয়দের মধ্যে ব্যাপক উল্লাস দেখা গেছে। ইউক্রেন ও সেনাবাহিনীর প্রশংসা করে শ্লোগান দিচ্ছেন তারা। সিংহভাগ উল্লাসকারীদের হাতে জাতীয় পতাকা দেখা গেছে।
রুশ সেনা প্রত্যাহারের পর শুক্রবার (১১ নভেম্বর) খেরসনে ঢোকে ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনী। এরপরই কার্যত পুরো শহর দখলে নেয় তারা। তার আগে গত বুধবার রুশ সেনাদের খেরসনের পশ্চিম তীর থেকে চলে যাওয়ার নির্দেশ দেন রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগু।
রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় শুক্রবার দাবি করেছে, চলমান যুদ্ধে রাশিয়ার দখল করা ইউক্রেনে একমাত্র প্রাদেশিক রাজধানী ও বৃহত্তম ভূখণ্ড খেরসন থেকে রুশ সেনা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে।
কিন্তু ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনীর দক্ষিণাঞ্চলীয় অপারেশনাল কমান্ড ইঙ্গিত দিয়েছে, রুশ সেনাদের ডিনিপ্রো নদীর পূর্ব তীরে যাওয়ার কাজ পুরোপুরি সম্পন্ন হয়নি।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, খেরসন থেকে রাশিয়ার সেনা প্রত্যাহার- চলমান যুদ্ধে মস্কোর বৃহত্তম ব্যর্থতা।
খেরসন হাতে পাওয়ার পর শহর পরিষদের প্রথম উপ-প্রধান ইউরি সোবোলেভস্কি টেলিগ্রামে লিখেছেন, আমাদের স্বাধীন মানুষগুলো ফ্রিডম স্কয়ারে ইউক্রেনের পতাকা হাতে আসতে পেরেছেন। শত্রুরা আমাদের শহর দখল করেছিল। কিন্তু খেরসনকে ভেঙে ফেলা যাবে না।
রুশ সেনারা খেরসন ছেলে চলে যাওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সাতটি সেতু ধ্বংস অবস্থায় পাওয়া গেছে। মাক্সার টেকনোলজিসের ছবি ও তথ্যে এ খবর জানা গেছে।
বেশ কয়েকটি ছবি প্রকাশ করেছে মাক্সার। কাখোভকাতে বাঁধের ওপরে অবস্থিত দুটি সেতু ক্ষতিগ্রস্ত। এর মধ্যে একটি রেল সেতু। শহরের দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত আন্তোনিভস্কি সড়ক সেতুটি আগেও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। বর্তমানে দুটি সেতুই পুরোপুরি বিধ্বস্ত।
দবিবকাতে ইনহুলসেটস নদী পার হওয়ার সেতুটিও বিধ্বস্ত হয়েছে। ধ্বংস করা হয়েছে কাখোভকা বাঁধের পূর্বে অবস্থিত দুটি ব্রিজ।
এ ঘটনায় কারা দায়ী তা স্পষ্ট নয়। বক্তব্য পাওয়া যায়নি ইউক্রেনে বা রাশিয়ার পক্ষ থেকেও।
খেরসন থেকে সেনা প্রত্যহার করে নেওয়া হলেও শহরটি রাশিয়ার বলে মন্তব্য করেছে ক্রেমলিন। প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের কার্যালয় বলছে, অঞ্চলটির অবস্থান বদলাবে না শহরটি রাশিয়ার অংশই থাকবে।
শুক্রবার প্রেসিডেন্ট পুতিনের ঘনিষ্ঠ ও ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, এটি রাশিয়ান ফেডারেশনের একটি বিষয়। এটি আইনগতভাবে ব্যাখ্যা করা আছে। এর কোনো পরিবর্তন নেই, হতেও পারে না। গত ৩০ সেপ্টেম্বর খেরসনসহ আরও তিনটি অঞ্চলকে রাশিয়ার সঙ্গে সংযুক্তির ঘোষণার জন্য রাশিয়া অনুতপ্ত নয় বলেও তিনি মন্তব্য করেন।