শত ব্যস্ততার মধ্যে একটু অবসর পেতে চান, বেড়াতে যেতে চাচ্ছেন কোথাও? কিন্তু হাতে লম্বা সময় নেই দূরে কোথাও যাওয়ার! ঢাকা সিটির খুব কাছাকাছিই রয়েছে ঘুরতে যাওয়ার জন্য অনেক সুন্দর সুন্দর স্থান। পরিবারসহ ঘুরে আসতে পারেন সেই জায়গাগুলো থেকে। চাইলে বন্ধুদের নিয়েও বেড়িয়ে আসতে পারেন। ঢাকার আশপাশেই রয়েছে এমন অনেক জায়গা যেখান থেকে স্বল্পসময়ে ঘুরে আসতে পারবেন আর নিতে পারেন আনন্দের পরশ।
মেঘনা ভিলেজ: মুন্সীগঞ্জ জেলার গজারিয়া উপজেলায়, মেঘনা নদীর কাছে মেঘনা ব্রিজ থেকে ১ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত মেঘনা ভিলেজ। সারাদিনের জন্য পরিবার বা বন্ধুদের নিয়ে খুব সহজেই ঘুরে আসতে পারেন এখান থেকে। আপনি চাইলে রিসোর্ট ভাড়া করে থাকতে পারেন। সেখানে রয়েছে এসি-ননএসি উভয় প্রকার কটেজ। এখানকার কটেজগুলো একটু ভিন্নভাবে তৈরি হয়েছে, যা দেখতে অনেকটা নেপালি কটেজের মতো। আছে খেলাধুলার সুব্যবস্থা। এমনকি নৌকা ভ্রমণ করতে চাইলে তারও ব্যবস্থা আছে। এখানকার খাবারে ঘরোয়া স্বাদ পাবেন। আপনি চাইলে শুধু একদিনের জন্যও কটেজ ভাড়া করতে পারেন। আবার দিনে দিনে গিয়েও ফেরত চলে আসতে পারেন।
ড্রিম হলিডে পার্ক: ফ্রান্টাসি কিংডম, নন্দন, ওয়াটার কিংডমের নাম তো আমরা অনেকেই জানি। কিন্তু ঢাকার কাছে বিশ্বমানের থিমপার্ক ড্রিম হলিডের কথা কি আমরা জানি? ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের নরসিংদীর পাঁচদোনার চৈতাবাতে মনোরম এই পার্কটির অবস্থান।
৬০ একর জমির ওপর নির্মিত এ পার্কে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের রাইডার- ট্রেন, ওয়াটার বাম্পার কার, বাইসাইকেল, রকিং বর্স, জেড ফাইটার, স্পিডবোট, সোয়ানবোট, নাগেট ক্যাসেল, এয়ার বাইসাইকেল। এছাড়া রয়েছে অস্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত ইমু পাখি, মায়াবি স্পট, কৃত্রিম অভয়ারণ্য, ডুপ্লেক্স কটেজ, কৃত্রিম হিমালয় পর্বত। যেখানে বসবাস করছে ২০টিরও বেশি ভূত। ইতালি থেকে আনা হয়েছে ভূতগুলো। পাশাপাশি যোগ করা হয়েছে ওয়াটার পুল। পুলে দাঁড়িয়ে কান পাতলে শোনা যাবে সমুদ্রের গর্জন।
জল জঙ্গলের কাব্য: গাজীপুর জেলার টংগীর পুবাইলে অবস্থিত জল জঙ্গলের কাব্য রিসোর্ট। প্রাকৃতিক এক ভূমিকে অবিকৃত রেখে আরো প্রাকৃতিক করা হয়েছে ডিজাইনারের নিপুণ ছোঁয়ায়। জোছনা দেখতে চাইলে ঘুরে আসতে পারেন এখান থেকে।
বিলের ওপর জোছনার আলো এক অন্যরকম অনুভূতি দেবে আপনাকে। অল্প খরচে সারাদিনের ঘুরে আসার জন্য এর চেয়ে ভালো জায়গা হবে না। মাত্র ২০০০ টাকা দুপুর, রাত, সকালের খাবারের ব্যবস্থা হয়ে যায়। শুধু দুপুরও রাতের খাবার নেবে ১৫০০ টাকা। আপনার অবসর সময়গুলো কাটিয়ে আসতে পারেন ভালোলাগার এ জায়গাগুলো থেকে। একটু প্রশান্তি এনে দেবে মনের আনাচে-কানাচে।
মোহাম্মদী গার্ডেন: ঢাকার খুব কাছে অবস্থিত মোহাম্মদী গার্ডেন। ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের পাশে ধামরাই মহিষাশীতে অবস্থিত মোহাম্মদী গার্ডেন। ঢাকার কাছে এতো সুন্দর একটা বিনোদনের কেন্দ্র আছে না দেখলে বোঝা যাবে না।
গার্ডেনের ভেতরে রয়েছে পুকুর। সেই পুকুরে ভেসে বেড়াছে কাঠের হাঁস, মাটির শাপলা, নৌকা। পানির ওপরে তৈরি হয়েছে তিনতলা বাড়ি। পুকুরের চারপাশে রয়েছে ফুলফলের বাগান। শিশুদের জন্য রয়েছে ট্রেন, স্লিপার, নাগরদোলা, নৌকা, দোলনা ইত্যাদি। হরিণ, বানর, কবুতর বিভিন্ন প্রাজাতির প্রাণীর দেখা মিলবে এই গার্ডেনে। সবচেয়ে আকর্ষণীয় হলো এখানকার ব্রিজ। পার্কের চারপাশে উঁচু দেয়াল দিয়ে ঘিরে দেয়া রয়েছে। তাই নিরাপত্তার বিষয় নিয়ে চিন্তার কিছু নেই।
উয়ারী-বটেশ্বর: ইতিহাস আপানার পছন্দ! আগ্রহ আছে প্রত্মতাত্ত্বিক বিষয়ে তবে ঘুরে আসতে পারেন ওয়ারী-বটেশ্বর থেকে। নরসিংদী জেলার বেলাব উপজেলা থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার পশ্চিমে অবিস্থত উয়ারী এবং বটেশ্বর গ্রাম।
এটি বাংলাদেশের সবচেয়ে প্রাচীন জনপদ। অসম রাজার গড় নামে এটি সমধিক পরিচিত। এখানে প্রায় তিন হাজার পূর্বের প্রাচীন শিলালিপি মুদ্রাসহ সভ্যতার অনেক নিদর্শন পাওয়া গেছে। এখানে পর্যটকদের জন্য রেস্ট হাউজ রয়েছে। এখানে প্রাগৈতিহাসিক যুগ থেকে শুরু করে তাম্র প্রসার যুগ, আদি-ঐতিহাসিক যুগ, প্রাক মধ্যযুগের সভ্যতার নিদর্শন দেখতে পাওয়া যায়। মাটির একটি ঘরে ব্যক্তিগত উদ্যোগে তৈরি হয়েছে একটি প্রতসংগ্রহশালা ও গ্রন্থাগার। আর এই সংগ্রহশালায় রক্ষিত আছে খ্রিস্টপূর্ব সময়ের মূল্যবান কিছু প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন।
নিউইয়র্ক মেইল/বাংলাদেশ/২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৮/এইচএম