বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ ‘সেন্ট মার্টিন’। এর অবস্থান বাংলাদেশের সর্ব দক্ষিণের জেলা কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলায়। টেকনাফের সর্বশেষ অংশ অর্থাৎ শাহ্পরীর দ্বীপ হতে প্রায় ১৩ কিলোমিটার এবং টেকনাফ হতে প্রায় ৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর এর বুকে এই দ্বীপ এর অবস্থান। মাত্র ৩ বর্গকিলোমিটারের কিছু বেশি আয়তনের এই দ্বীপটির জনসংখ্যা প্রায় ৮ হাজার।
১৮৯০-১৯০০ সালের দিকে মাত্র ১৩টি পরিবারের ৫০ জন সদস্য প্রথম এই দ্বীপে বসতি গড়ে তোলেন। বর্তমানে স্থানীয় প্রায় সবাই তাদেরই বংশধর।
সেন্ট মার্টিন মূলত দুটি নামে পরিচিত। নারিকেল জিঞ্জিরা আর সেন্ট মার্টিন। জীন মানে জীন বা পরী আর জাজিরা মানে দ্বীপ। কথিত আছে সেকালে জীন-পরীরা চলাচলের সময় এই দ্বীপে বিশ্রাম নিত। সেখান থেকেই এই দ্বীপের নাম হয়েছে জিন-জাজিরা বা জিঞ্জিরা। এদিকে সেন্ট মার্টিন ছিলেন একজন ব্রিটিশ ধর্মযাজক। তিনি এই দ্বীপে কিছুকাল অবস্থান করেন। ব্রিটিশ সরকারের এক আর্মি অফিসার মিস্টার কক্স (যার নামে কক্সবাজার) ছিলেন সেন্ট মার্টিনের ভক্ত। মিস্টার কক্স তার প্রিয় ধর্মযাজকের নাম স্মরণীয় রাখতে এই দ্বীপের নাম রাখেন সেন্ট মার্টিন।
কেন যাবেন সেন্ট মার্টিন
প্রশ্ন আসতেই পারে আপনি কেন সেন্ট মার্টিন যাবেন। উত্তর যদি হয় সমুদ্র দেখতে তাহলে বলবো ‘সমুদ্র দেখার জন্য সেন্ট মার্টিন যাওয়ার প্রয়োজন নেই’। সমুদ্র আপনি কক্সবাজার, টেকনাফ, কুয়াকাটাতেও তো দেখতে পারেন। সেন্ট মার্টিন মূলত যাওয়া উচিৎ রহস্যের সন্ধানে। নির্জনতার রহস্য, প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের রহস্য আর সাগর তলের বিস্ময়কর রহস্য। সৃষ্টিকর্তা এখানকার প্রকৃতিকে দুহাত ভরে দান করেছেন। চতুর্দিকের নীল-সাদা আকাশের নিচে যেদিকেই তাকাবেন শুধু পানি আর পানি। নীল পানিতে আকাশটা যেন হঠাৎই ঝুঁকে পড়েছে ওল্টানো বাটির মতো। অদ্ভুত এক ভালোলাগা কাজ করে এখানে।
কী কী দেখবেন
সেন্ট মার্টিনে কী দেখবেন তা আলাদা করে বলতে গেলে একটু বিপদেই পড়তে হবে। ৭টি পাড়া নিয়ে গঠিত এই দ্বীপটির প্রতিটি অংশই রূপের ডালা সাজিয়ে রেখেছে। স্বতন্ত্র তাদের প্রত্যেকের রূপ কিন্তু এক সুতায় গাঁথা। ঠিক মুক্তমালার মত। তবে প্রকৃতি একেক সময় একেকভাবে সুন্দর। বিকেল বেলাটা এক কাপ চায়ের সাথে দ্বীপের পশ্চিম পাড়ের বিচ থেকে আপনি হয়তো দেখতে পাবেন আপনার জীবনের সেরা সূর্যাস্ত। সকালটা কাটিয়ে দিন পূর্ব বিচে। মায়ানমারের পাহাড় ডিঙ্গিয়ে সূর্যের প্রথম কিরণ যখন আপনার চোখে ধরা দেবে তখন পূর্ব বিচ মায়াবী রূপ ধারণ করে। দ্বীপের সর্ব দক্ষিণে বেশ কিছু অংশ নিয়ে কোরালের ওপর ভর করে তৈরি হয়েছে ছেঁড়াদ্বীপ। বর্ষা মৌসুমে মূল দ্বীপ থেকে ছিঁড়ে যায় বা আলাদা হয়ে যায় বলেই এর নাম ছেঁড়াদ্বীপ। হেঁটে বা বোটে করে যেতে পারেন এই দ্বীপে। মূল দ্বীপে সকাল ৮টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ট্রলার, স্পিড বোট যায় এই দ্বীপে। চাইলে তাঁবুতে এক রাত থেকে যেতে পারেন এখানে। তবে নিরাপত্তার বিষয়টি অবশ্যই মাথায় রাখবেন।
কেমন হওয়া উচিৎ ট্যুর প্ল্যান
যারা কক্সবাজার থেকে প্যাকেজ নিয়ে সেন্ট মার্টিনে আসেন তাদের জন্য সমবেদনা। আমি অন্তত ১০০ মানুষকে চিনি যারা ডে-লং প্যাকেজ নিয়ে সেন্ট মার্টিনে গিয়ে ফিরে এসে সেন্ট মার্টিনে যাওয়া নিয়ে আফসোস করেছেন। তারপরও যারা সময়ের অভাবে ডে-লং ট্রিপে সেন্ট মার্টিন যাবেন তারা শিপ থেকে নেমেই ভ্যান নিয়ে চলে যাবেন পশ্চিম বিচে। সেন্ট মার্টিনে পানিতে নামার জন্য পশ্চিম বিচের বিকল্প নেই। যদিও পশ্চিম বিচ পর্যন্ত হেঁটে যেতে ২০-২৫ মিনিট সময় লাগে তবুও ভ্যান নিতে পারলে ভালো। এইটুকু যেতে ভ্যান ভাড়া গুণতে হবে ১৫০-২০০ টাকা। পশ্চিম বিচে গিয়েই নেমে পড়–ন স্বচ্ছ পানিতে। মনে রাখবেন যখনই পানিতে নামুন না কেন বেলা ২টার আগেই পানি থেকে উঠে পড়ুন। মনে রাখবেন আপনার ফেরার শিপ কিন্তু ৩টায়। তাই ২টার আগে না উঠে পড়লে আপনি খাওয়ার সময়টুকুও পাবেন না। এই টাইপ ট্রিপ আসলে মড়ড়ফ ভড়ৎ হড়ঃযরহম টাইপ ট্রিপ। মানে আসলাম, খেলাম, ফিরে গেলাম আর কি!
যারা এক দিনের জন্য সেন্ট মার্টিনে যাবেন তাদের জন্য প্রথম পরামর্শ হলো শিপ থেকে নামতে তাড়াহুড়া করবেন না। আস্তে ধীরে শিপ থেকে নেমে হোটেলে উঠে পড়ুন। ফ্রেশ হয়ে দুপুরের খাবার খেয়ে ঘণ্টাখানেক বিশ্রাম নিয়ে চলে যান ছেঁড়াদ্বীপ। চেষ্টা করবেন ৪টার দিকে রওনা দিতে। তাতে রোদ যেমন কিছুটা পড়ে যাবে, তেমনি ছেঁড়া দ্বীপে সূর্যাস্ত দেখে ফিরতে পারবেন। মনে রাখবেন ছেঁড়া দ্বীপের সূর্যাস্ত অসাধারণ।
রাতে চাইলে বার-বি-কিউ করতে পারেন। যতো রাত পর্যন্তই জেগে থাকুন না কেন ঘুম থেকে উঠে পড়ুন ৫:০০-৫:৩০ এর মধ্যে। পূর্ব দিক থেকে হাঁটা শুরু করুন। উদ্দেশ্য পুরো দ্বীপ ঘুরে দেখা। পুরো দ্বীপ চক্কর দিতে আপনার সময় লাগবে ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা। মনে রাখবেন সেন্ট মার্টিনের দক্ষিণ-পশ্চিম অংশ আপনাকে মুগ্ধ করতে বাধ্য। ১০টা নাগাদ ফিরে আসুন হোটেলে। মুখে কিছু দিয়ে নেমে পড়ুন সমুদ্রে। ১২টা নাগাদ ফ্রেশ হয়ে ব্যাগ গুছিয়ে খেয়ে নিন। ২:৩০ এর দিকে উঠে পড়ুন আপনার নির্ধারিত শিপে। মনে রাখবেন ২:৩০ এর পরে শিপে উঠতে বেশ বেগ পেতে হয়।
দুই দিনের প্ল্যান কেমন হবে?
প্রথমেই ধীরে শিপ থেকে নেমে হোটেলে উঠে পড়ুন। একটু পরে নেমে পড়ুন সমুদ্রে। এরপর ফ্রেশ হয়ে দুপুরের খাবার খেয়ে ঘণ্টাখানেক বিশ্রাম নিন। ৫টা নাগাদ চলে যান বিচের পাড়ে। ঝিরঝিরে বাতাসে জেটিতে বেশ আমুদে একটা ভাব এসে যায়। অনেক রিসোর্টে রাতে স্থানীয় শিল্পীদের পরিবেশনায় জমজমাট গানের আসর বসে। রাতে চেষ্টা করুন একটু তাড়াতাড়ি ঘুমাতে। সারা দিনের ধকল তো আর কম যায়নি!
পরদিন সকাল ৮টার মধ্যে নাস্তা শেষ করে চলে যান ছেঁড়াদ্বীপ। ছেঁড়াদ্বীপে গোসলও করতে পারেন। সে ক্ষেত্রে ছেঁড়াদ্বীপের শেষ মাথায় গিয়ে পানিতে নামাই ভালো। এখানে কোরাল তুলনামূলক কম আর ঢেউগুলোও চমৎকার। দুপুর নাগাদ ফিরে আসুন মূল দ্বীপে। দুপুরের খাবার খেয়ে বিশ্রাম নিন। আগের দিনের মতো বিকেলে পশ্চিম বিচে সূর্যাস্ত দেখে বিচ ধরে উত্তর দিকে হাঁটতে হাঁটতে জেটি পর্যন্ত চলে যান। অসাধারণ ভিউ আর ছবি পাবেন। এই রাতে বার-বি-কিউ করতে পারেন।
এখানে মোট ১১টি বিপদজনক স্থান বা ডেঞ্জার জোন আছে। এই জোনে পানিতে না নামাই ভালো। কয়েকটি জায়গাতে লাল পতাকা দেয়া আছে তবে সবগুলো পয়েন্টে নেই। পানিতে নেমে প্রবালে পা কেটে ফেলেন অনেকে। এ বিষয়ে সতর্ক থাকা জরুরি। এ অঞ্চলের মানুষ ধর্মীয় বিষয়গুলোতে বেশ সেনসিটিভ। তাই ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত লাগে এমন কাজ করা থেকে বিরত থাকুন।
ঢাকা থেকে সরাসরি শ্যামলী, হানিফ, রিলেক্স, তুবা লাইন (নন-এসি) এবং সেন্ট মার্টিন সার্ভিস, বাগদাদ এক্সপ্রেস, গ্রীন লাইন (এসি)সহ বেশ কিছু বাস টেকনাফ যায়। নন-এসি বাসের ভাড়া ৯০০ টাকা আর বেশিরভাগ এসি বাসের ভাড়া ১৫৫০ টাকা। দমদমিয়া ঘাট থেকে বেশ কয়েকটি শিপ ছাড়ে সেন্ট মার্টিনের উদ্দেশে সকাল ৯:৩০ মিনিটে। যা দ্বীপে পৌছায় ১২টার মধ্যে। এগুলো ফিরে আসে বিকেল ৩টার দিকে সেন্ট মার্টিন থেকে। শিপ ও ক্লাস ভেদে এগুলোর ভাড়া ৫৫০ থেকে ১৭০০ টাকা পর্যন্ত। তবে অফ সিজনে (এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত) শিপগুলো চলে না, এই সময়টাতে সেন্ট মার্টিন যাওয়ার একমাত্র উপায় হলো ট্রলার।
কক্সবাজার থেকে গেলে প্যাকেজ নিয়ে যাওয়াই ভালো। কক্সবাজারে যে হোটেলে থাকবেন, তাদের কাছে বললে তারা ব্যবস্থা করে দিবে। তবে তাদের কাছে শুধু ট্রান্সপোর্ট এর সুবিধাও আলাদা করে নেয়া যায়। এর সুবিধা হলো খুব ভোরে উঠে টেকনাফ যাওয়ার জন্য বা শিপের টিকেটের জন্য আলাদা করে দৌড়ঝাঁপ করতে হবে না। কক্সবাজার থেকে টেকনাফ, শিপের রিটার্ন টিকেট (সেন্ট মার্টিন যাওয়া ও আসা) এবং আবার টেকনাফ থেকে কক্সবাজার নিয়ে আসা সব মিলিয়ে খরচ হয় ১,০০০-২,০০০ টাকা (শিপের ক্লাস ভেদে খরচ বাড়ে-কমে)।
কিভাবে নেবেন যাওয়ার প্রস্তুতি
নতুন কোনো জায়গায় যাওয়ার ক্ষেত্রে একটি কথা সবসময় মাথায় রাখবেন, ইনফরমেশন হলো আপনার প্রধান অস্ত্র। আপনার কাছে যতো বেশি তথ্য থাকবে আপনার ভ্রমণ ততো স্বাচ্ছন্দময় হবে। সেন্ট মার্টিন যাওয়ার ক্ষেত্রে কিছু কানেক্টিং ফ্যাক্টর কাজ করে। এর প্রথম পর্যায়ে আপনাকে বাসের টিকেট কনফার্ম করতে হবে। সম্ভব হলে যাওয়া আসা দুটোরই। এর পরের কাজ হলো শিপের টিকেট কনফার্ম করা এবং সর্বোপরি সেন্ট মার্টিনে কোনো হোটেল বা রিসোর্ট বুক করা। এই তিনটি ধাপ কনফার্ম হলেই আপনি সেন্ট মার্টিন যাওয়ার জন্য প্রস্তুত।
কিভাবে বুকিং করবেন
নন-এসি বা এসি যাই হোক না কেন সবগুলো বাস মোটামুটি ফকিরাপুল থেকে যাত্রা শুরু করে। তাই টিকেট কাটার জন্য ফকিরাপুল যাওয়াই ভালো। তবে সায়দাবাদ বা যাত্রাবাড়ী থেকেও উপরে উল্লেখিত বাস কাউন্টার থেকে আপনি টিকেট সংগ্রহ করতে পারেন। একটা কথা মাথায় রাখুন, আগে বাস কোম্পানিগুলো ফোনে বুকিং নিলেও এখন আর নেয় না। তাই ফোন করে বুকিং দেয়ার চেষ্টা না করে একটু কষ্ট করে হলেও কাউন্টারে গিয়ে টিকেট করে ফেলুন।
শিপ বুকিং এর ক্ষেত্রে চলে যেতে পারেন শিপ কোম্পানিগুলোর টিকেট সেলিং সেন্টারে। কেয়ারী সিন্দাবাদ এবং কেয়ারী ক্রুজের অফিস ধানমন্ডিতে। ফোন নাম্বার ০১৮১৭১৪৮৭৩৫। এল সি টি কুতুবদিয়ার অফিস পল্টনে। ফোন নাম্বার ০১৭১৪৬৩৪৭৬২। ** নাম্বারগুলো নিশ্চিত করে নিন। এছাড়াও এম ভি ফারহান, কাজল, বে-ক্রুজ, গ্রীন লাইনের (০২৯৩৩৯৬২৩, ০২৯৩৬২৫৮০) শিপও রয়েছে।
সেন্ট মার্টিনে হোটেল বা রিসোর্ট বুকিং এর ক্ষেত্রে একটু সাবধানী সিদ্ধান্ত নেয়া জরুরি। মেইন ল্যান্ডের মতো সুযোগ সুবিধা দেয় এমন একটিও হোটেল/রিসোর্ট এখানে খুঁজে পাওয়া যাবে না। এর মূল কারণ হলো বিদ্যুৎ। ১৯৯১ এর আগে সেন্ট মার্টিনে সীমিত আকারে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা থাকলেও ১৯৯১ এর প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ¡াসে সব লন্ডভন্ড হয়ে যায়। এর পরে সেন্ট মার্টিন আর বিদ্যুতের মুখ দেখেনি। তাই হোটেল/রিসোর্টগুলো নিজস্ব জেনারেটরের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে থেকে। এর ফলে বিদ্যুৎ সংশ্লিষ্ট সুবিধাগুলো (ফ্রিজ, রুমে এসি, ২৪ ঘণ্টা ফ্যান) এখানে পর্যাপ্ত নয়।
হোটেল/রিসোর্ট বুকিং এর ক্ষেত্রে কে কতটুকু সুযোগ সুবিধা দেবে তা নিশ্চিত হয়ে নিন।
কিছু হোটেল ও রিসোর্ট
আবাসিক হোটেলগুলো মূলত বাজারকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে। মানসম্মত হোটেলগুলোর মধ্যে বøু মেরিন (০১৮১৫৬৩২০৩৭), সেন্ড শোর (০১৮১৫৬৪৮৭৩১), হোটেল সি ইন বেশ ভালো। এগুলোর ভাড়া রুম ভেদে ১৫০০-৪০০০ টাকার মত।
মানসম্মত কিছু রিসোর্ট
সায়রী ইকো রিসোর্ট। পরিবেশের কথা মাথায় রেখে যথাসম্ভব স্থানীয় উপকরণ ব্যবহার করে তৈরি হয়েছে রিসোর্টটি। এটি জায়গার দিক দিয়ে সেন্ট মার্টিনের সবচেয়ে বড় রিসোর্ট। এদের সেন্ট্রাল সোলার সিস্টেম থাকায় ২৪ ঘণ্টা লাইটের সুবিধা পাওয়া যায়। ফ্যানগুলো অবশ্য জেনারেটরের সাহায্যে রাত ১২টা পর্যন্ত চলে। নিজস্ব রেস্তোরাঁ, কফি জোন, দোকান থাকায় এই রিসোর্টের গেস্টদের বাইরে যাওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। প্রাইভেট বিচ, বিচ চেয়ার, হেমক, বোতলের তৈরি বোট গেস্টদের জন্য ফ্রী। এটি বিচ থেকে এতো কাছে যে পূর্ণিমার দিনগুলোতে জোয়ারে সমুদ্রের পানি রিসোর্টের বিচ পাড়ের দরজা ছুঁই ছুঁই করে। ওয়াচ টাওয়ার থেকে চায়ের কাপে চুমুক দিতে দিতে সূর্যাস্ত দেখা হতে পারে আপনার বাড়তি পাওনা। এখান থেকে ছেঁড়া দ্বীপ যাওয়া বা স্কুবা করতে চাইলে ব্যবস্থা করে দেয়া হয়। এই রিসোর্টের বড় একটি সমস্যা হলো এটি বাজার থেকে বেশ কিছুটা দূরে। ভাড়া রুম ভেদে ১৫০০-৩৫০০ টাকা।
নীল দিগন্ত: সমুদ্র পাড়ের রিসোর্টগুলোর মধ্যে নিলদিগন্ত অন্যতম। বেশ গুছানো ও পরিপাটি। এই রিসোর্টটির ওয়াচ টাওয়ার থেকে সমুদ্র দর্শন বেশ উপভোগ্য। নিজস্ব রেস্তোরাঁ, বার-বি-কিউ, মিউজিক, সব মিলিয়ে নীল দিগন্ত বেশ জমজমাট। তবে সায়রী ইকো রিসোর্টের মতই এটাও বাজার থেকে বেশ কিছুটা দূরে। এদের রুম ভেদে ভাড়া ২৫০০-৩৫০০ টাকা। যোগাযোগ: ০১৭৩০০৫১০০৪।
ব্লু লেগুন রিসোর্ট: সেন্ট মার্টিন দ্বীপের পশ্চিম বিচে অবস্থিত। হোটেল অবকাশ থেকে হেঁটে যেতে হয় ৫ মিনিট। রিসোর্ট থেকে আপনি সূর্যাস্ত এবং রাতের নয়নাভিরাম দৃশ্য দেখতে পাবেন। রিসোর্টে রয়েছে খাবার সুব্যবস্থা। রুম ভাড়া- কাপল (১৫০০-২০০০টাকা); ডাবল (১৪০০-২৫০০)। যোগাযোগ: ০১৭২৩৫৮৬৮৭৭; ০১৬৭৩১১১২৩৭।
কোরাল ভিউ রিসোর্ট: পূর্ব বিচে যতগুলো রিসোর্ট আছে কোরাল ভিউ তাদের মধ্যে সবচেয়ে পরিপাটি। হ্যামক, বসার জায়গা, রেস্তোরাঁ সব মিলিয়ে বেশ ভালো। বাজার থেকে খুব বেশি দূরেও নয়। কিন্তু এটিরও সমস্যা আছে। সেটি হলো পূর্ব অংশে সমুদ্রে ঢেউ নেই। রিসোর্টে বসে আপনি সাগরের নয় বরং নদীর ঢেউ পাবেন। রুম ভেদে ভাড়া ৩০০০-৬৫০০ টাকা।
নিউইয়র্ক মেইল/বাংলাদেশ/২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৮/এইচএম