ব্রিটেন ফার্স্ট’ নামের ব্রিটিশ উগ্রবাদী রাজনৈতিক দলের ফেসবুকের সব অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দিয়েছে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ। মুসলিম বিদ্বেষী ছবি, স্ট্যাটাস ও ভিডিও ক্রমাগত পোস্ট করে যাওয়ার প্রেক্ষিতে ফেসবুক এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
ফেসবুক কর্তৃপক্ষ দলটির অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ এবং দলটির নেতা পল গোল্ডিং ও জেইডা ফ্রানসেনের অ্যাকাউন্ট ফেসবুক থেকে সরিয়ে নেয়।
অ্যাকাউন্টগুলো বন্ধ করার আগে ফেসবুক শেষবারের মতো একটি লিখিত সতর্কতাও দিয়েছিল দলটিকে। কিন্তু তা সত্ত্বেও দলটি ফেসবুকের কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ড ভেঙেছে বলে তাদের অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয় বলে বুধবার এক ব্লগ পোস্টে ফেসবুক এ তথ্য জানায়।
ফেসবুক কর্তৃপক্ষ আরও জানায়, এখন ব্রিটেন ফার্স্ট এর নেতারা স্বনামে বা বেনামে নতুন করে কোনো পেজও চালু করতে পারবেন না।
এই বিষয়ে একটি ব্লগ প্রকাশ করে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ বলছে, আমরা সব ধরনের আইডিয়া এবং রাজনৈতিক মতামতকে স্বাগতম জানাই, আমরা মতপ্রকাশের স্বাধীনতায়ও বিশ্বাসী। কিন্তু রাজনৈতিক মতামতে কোনোভাবেই বিদ্বেষ ছড়ানো যাবে না।
ফেসবুকের কর্মকর্তারা বলছেন, ধর্ম, বর্ণ ও লিঙ্গ ইত্যাদিকে কেন্দ্র করে কেউ ঘৃণা ছড়ালে সেই পেজগুলো সরিয়ে নেয়াই তাদের নীতি। দলটির ফেসবুক পেজে যেসব ছবি এবং ভিডিও রয়েছে সেগুলো মুসলমানদের বিরুদ্ধে ঘৃণা ছড়াতে উৎসাহিত করে বলে ফেসবুক মনে করছে।
ফেসবুকের মতোই টুইটারও গেলো ডিসেম্বর মাসে পল গোল্ডিং এবং জেইডা ফ্রানসেনের অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেয়।
বিবিসি জানায়, ব্রিটেন ফার্স্টের ফেসবুক পাতায় এই দলের একজন নেতার ছবিতে লেখা ছিল, ‘আমি মুসলমান-বিরোধী এবং এর জন্য আমি গর্বিত।’ আরেকটি ছবির ক্যাপশনে মুসলমানদের পশুর সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে।
পেজ থেকে বেশ কয়েকটি ভিডিও পোস্ট করা হয়েছে যার উদ্দেশ্য ছিল মুসলমানদের সম্পর্কে যাতে বিদ্বেষপূর্ণ মন্তব্য পোস্ট করা যায়।
গত বছরের নভেম্বরে, ব্রিটেন ফার্স্ট নামক এই উগ্র দলটির একটি ভিডিও এমনকি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও শেয়ার করেন। দলটির ডেপুটি লিডার ফ্রানসেন ‘মুসলিম অভিবাসী আঘাত করলো হল্যান্ডের এক ছেলের অন্ডকোষে’, ‘মুসলমানরা ভার্জিন ম্যারির মূর্তি ভাঙলো’ এইরকম শিরোনামের কয়েকটি ভিডিও ফেসবুকে পোস্ট করেন অথচ এই ঘটনাগুলো যে মুসলমানরাই ঘটিয়েছে এইরকম কোনো প্রমাণ খুঁজে পাওয়া যায়নি।
ব্রিটেন প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে দেশের সংসদে ফেসবুকের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। অন্য প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোও একই ধরনের পদক্ষেপ নেবে বলে তিনি আশা করেন।
লন্ডনের মেয়র সাদিক খানও বলেছেন, ব্রিটেন ফার্স্ট একটি 'নীচ এবং বিদ্বেষপূর্ণ সংগঠন'।
সূত্র: স্কাই নিউজ ও বিবিসি