logo
আপডেট : 20 March, 2018 14:06
দূষণে দখলে ঢাকার ৫০ খাল অস্তিত্বহীন
ঢাকা অফিস

দূষণে দখলে ঢাকার ৫০ খাল অস্তিত্বহীন

সুন্দর নগরি গড়ে তুলতে নানা পরিকল্পনা থাকলেও তা যেন বাস্তবতায় রূপ নিতে হিমশিম খাচ্ছে প্রতিনিয়তই। রাজধানীর ছোট বড় মিলিয়ে মোট ৫০টি খাল দখল আর দূষণে অস্তিত্ব হারাতে বসেছে দিন দিন। এসব খাল দখলে জড়িত রয়েছে নামে বেনামে সরকারি বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান।

পরিবেশবাদী সংগঠনগুলো বলছে, খাল উদ্ধারে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও কর্তৃপক্ষের সদি”ছার অভাবে তা বাস্তবায়ন হচ্ছে না। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলছে, খাল উদ্ধার করা সিটি কর্পোরেশনের দায়িত্ব, প্রয়োজনে সরকার সহযোগিতা করবে।

ষাটের দশকেও রাজধানীর খালগুলো মানবদেহের শিরা-উপশিরার মতো ছড়িয়ে ছিল। বুড়িগঙ্গা-তুরাগ-বালু-শীতলক্ষ্যা থেকে সরাসরি এসব খাল ব্যবহার করে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় চলাচল করত মানুষ। ওই সময় রাজধানীতে কোনো জলাবদ্ধতা ছিল না, পরিবেশ ছিল স্বাস্থ্যসম্মত। অর্ধশত বছরের ব্যবধানে খালগুলো দখল-ভরাটে অর্ধেকের বেশি হারিয়ে গেছে। ফলে তীব্র জলজট, জলাবদ্ধতা এবং চরম পরিবেশ বিপর্যয়ের কবলে পড়েছে রাজধানী ঢাকা। সামান্য বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা তৈরি হচ্ছে রাজধানীর সড়কগুলোয়।

পরিবেশবিদদের তথ্যমতে, রাজধানীর খালগুলো পানি নিষ্কাশনের অন্যতম মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করা হতো। স্বাধীনতার পর ঢাকাকে রাজধানী করায় আস্তে আস্তে জমির দাম বাড়তে থাকে। আর রাজধানীকেন্দ্রিক ব্যবসা-শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে উঠায় গ্রামবাংলার মানুষ কর্মসংস্থানের জন্য ঢাকায় জড়ো হতে থাকে। মানুষের আবাসনের ব্যবস্থা করতে গিয়ে অসাধু প্রভাবশালী মহল রাজধানীর খালগুলো দখল করে গড়ে তুলেছে অট্টালিকা। কেউবা গড়ে তুলেছে বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্সটিটিউট অব এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সের ২০১৫ সালের এক জরিপে দেখা গেছে, ১৯৬০ সালে ঢাকা শহরে জলাশয় ও নিুভূমি ছিল ১৬ হাজার ৪৭৯ দশমিক ৬ হেক্টর, ১৯৮৮ সালে তা কমে দাঁড়ায় ১৪ হাজার ৮২১ দশমিক ৩৫ হেক্টর। ২০০৮ সালে জলাধারের পরিমাণ কমে দাঁড়ায় ১০ হাজার ৭৭৫ দশমিক ৯ হেক্টরে। ২০১৩ সালে এর পরিমাণ আরও কমে দাঁড়ায় ৯ হাজার ৩২৫ হেক্টরে। ১৯৬০ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত এ হ্রাসের পরিমাণ ৬২ দশমিক ৫৩ শতাংশ।

ঢাকা ওয়াসার তথ্যমতে, রাজধানীর ৪৩টি খালের ১৭টির হদিস নেই। বাকি ২৬টি খালের ৫টি ব্যক্তি মালিকানায় রেকর্ড করে নিয়েছে অসাধু চক্র। এগুলো হচ্ছে : মাণ্ডা, হাজারীবাগ, কসাইবাড়ি, সাংবাদিকলোনা ও বাইশ টোকি খাল। বেদখল খাল উদ্ধার করতে নেমে জেলা প্রশাসন ও ওয়াসার কর্মকর্তারা তালিকাভুক্ত এসব খালের অস্তিত্বই খুঁজে পাচ্ছেন না।

অন্যদিকে ব্যক্তিমালিকানায় চলে যাওয়া খালগুলো ফিরে পেতে সরকারের সহায়তা চেয়েছে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো। খালগুলো দখলের পর অবকাঠামোর এমন পরিবর্তন আনা হয়েছে যে, ওই স্থানে কখনও খাল ছিল তা বোঝার কোনো উপায় নেই। অনুসন্ধানে এবং নগর সংস্থাগুলো থেকে প্রাপ্ত তথ্যমতে, রাজধানীর ৪৩টি খাল দখল করেছে অন্তত ১০ হাজার ৫০০ জন প্রভাবশালী। যাদের বেশিরভাগই বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের ২১২ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সহায়তায় সম্পন্ন হয়েছে এ দখল। ২০১০ সালে নগর সংস্থাগুলোর মাধ্যমে সরকারি এক তদন্তে এসব তথ্য বেরিয়ে আসে। ২০১২ সালে দুর্নীতি দমন কমিশন অবৈধ দখলদারদের ধরতে মাঠে নামলেও পরে রহস্যজনক কারণে তদন্ত থেমে যায়। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, ঢাকা জেলা প্রশাসন, জরিপ অধিদফতর থেকে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করা ছাড়া কার্যত কোনো অগ্রগতি হয়নি।

বর্তমান মহাজোট সরকারের প্রথম মেয়াদে সরকারের পক্ষ থেকে রাজধানীর খালগুলো অবৈধ দখলমুক্ত করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে অভিযানও পরিচালনা করা হয়েছিল। প্রভাবশালীদের প্রচণ্ড বাধার কারণে সেই উদ্যোগ কার্যত ব্যর্থ হয়ে যায়। খাল উদ্ধারের নামে গত ৫ বছরে গড়ে ১০ কোটি টাকা করে খরচ করলেও কার্যত কোনো সফলতা আসেনি।

সূত্রমতে, খাল বেদখলে জড়িত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চিহ্নিত করতে ২০১০ সালের ২৯ ডিসেম্বর ভূমি মন্ত্রণালয়ের একজন যুগ্ম সচিবের নেতৃত্বে¡ ৬ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়, মহানগর জরিপের সময় জরিপ কাজে সংশ্লিষ্ট ২১২ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে খালের জমি দখলের কাজে সহায়তা করেছেন। শুধু তাই নয় দখলকৃত কোনো কোনো খালের ওপর ইতিমধ্যে গড়ে উঠেছে বিভিন্ন ধরনের পাকাকাঁচা স্থাপনা। তদন্ত রিপোর্টে দখলকারীদের নাম-ঠিকানাসহ বিস্তারিত তথ্য এবং এ কাজে জড়িত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পরিচয়েরও উল্লেখ করা হয়।

অবিভক্ত সিটি কর্পোরেশনের ২০০৮ সালের এক জরিপে বলা হয়, রাজধানীতে একসময় ৪৪টি খাল ছিল। যার মধ্যে ৩৫টি খাল শুকিয়ে গেছে। অনেক খাল ভরাট করে সড়ক, ড্রেনেজ লাইন করে ফেলা হয়েছে। তবে ঢাকা ওয়াসা এবং ঢাকা জেলা প্রশাসনের যৌথ জরিপের তথ্যমতে, খালের সংখ্যা ৪৩। বর্তমানে ২৬টি খাল আছে শুধু তালিকায়, বাস্তবে নেই। ১৩টি খালের প্রস্থ ১০ ফুটের বেশি নয়।

দখল-ভরাটের কবলে খাল: বাসাবো খালের একসময় প্রস্থ ছিল ৬০ ফুট। এখন খালটির প্রস্থ মাত্র ২৫ ফুট। বেগুনবাড়ি খাল, মহাখালী খালের প্রস্থ ৬০ ফুট থেকে কমে এখন ৩০ ফুটে। রামচন্দ্রপুর খালের প্রস্থ ১১০ ফুটের স্থলে এখন আছে ৬০ ফুট। আবদুল্লাহপুর খালের প্রস্থ ১০০ ফুট থেকে কমে দাঁড়িয়েছে ৬৫ ফুটে। কল্যাণপুর খালের প্রস্থ ১২০ থেকে সংকুচিত হয়ে দাঁড়িয়েছে ৬০ ফুটে। এ ছাড়া গুলশান, বনানী, কাটাসুর, ইব্রাহিমপুর, বাউনিয়া, দিয়াবাড়ী, কল্যাণপুর, শাহজাদপুর খালের অস্তিত্ব থাকলেও এগুলো এখন দখলদারদের থাবায় সংকুচিত হয়ে পড়েছে।

খোঁজখবর করে আরও জানা যায়, সেগুনবাগিচা খালের ওপর জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ কমলাপুর স্টেডিয়ামের দক্ষিণের সীমানা তৈরি করেছে। মাদারটেক ব্রিজ থেকে ত্রিমোহনী পর্যন্ত নন্দীপাড়া খালের ওপর অ্যাপ্রোচ রোড নির্মাণ করা হয়েছে। বনানী ও গুলশান লেকের ওপর দিয়ে তৈরি করা হয়েছে ক্রসরোড। মাণ্ডা ব্রিজ থেকে নন্দীপাড়া পর্যন্ত প্রায় ২৫ জায়গা নতুন করে দখল হয়েছে। এসব জায়গায় গজিয়ে উঠছে টংঘর, দোকান, টিনের চালা ও বস্তি। সেগুনবাগিচা খালের সঙ্গে যুক্ত আড়াই হাজার ফুট দীর্ঘ গোপীবাগ খাল ভরাট করে রাস্তা নির্মাণ করা হয়েছে। বেগুনবাড়ি খালের ভেতরে গড়ে উঠেছে বিজিএমইএ ভবন। চারটি খালের অংশবিশেষ লেক হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। ঝিগাতলা-শুক্রাবাদ খালটির ধানমণ্ডি অংশের নাম হয়েছে ধানমণ্ডি লেক। সেগুনবাগিচা খালের নাম হয়েছে রমনা লেক। বেগুনবাড়ি খালের নাম হয়েছে হাতিরঝিল এবং আবদুল্লাহপুর খালের কিছু অংশ নিয়ে হয়েছে উত্তরা লেক। অন্যগুলো পেয়েছে নর্দমার আকৃতি।

জলবায়ু ইন্সটিটিউটের তথ্যমতে, রাজধানীর খালগুলোর সঙ্গে আশপাশের চারটি নদীর সংযোগ ছিল। সূত্রাপুর থেকে লোহারপুল হয়ে বুড়িগঙ্গা, মোহাম্মদপুরের বসিলা হয়ে বুড়িগঙ্গা, উত্তরার-আবদুল্লাহপুর হয়ে তুরাগ, উত্তরখান হয়ে তুরাগ, খিলক্ষেত ডুমনি হয়ে বালু ও মানিকনগর হয়ে শীতলক্ষ্যা নদ-নদীতে চলাচল করা যেত। বুড়িগঙ্গা নদীর বসিলা থেকে ধানমণ্ডি, তেজগাঁও, রামপুরা হয়ে তুরাগ নদে মিলেছিল শুক্রাবাদ খাল। এই খালের রায়েরবাজার, জিগাতলা ও শুক্রাবাদ এলাকায় এখন আর কোনো অস্তিত্ব নেই। এসব খালের ৮০ শতাংশই স্থায়ী স্থাপনার দখলে চলে গেছে। মোহাম্মদপুর ও পিসিকালচার হাউজিংয়ের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত কাটাসুর খাল। খালটি এখন নর্দমার আকৃতি পেয়েছে।

সেগুনবাগিচা খালটি একসময় পান্থপথ থেকে শুরু হয়ে হাতিরপুল, রমনা হয়ে সেগুনবাগিচা, বিজয়নগর, আরামবাগ, কমলাপুর, মানিকনগর, ডেমরা হয়ে শীতলক্ষ্যা নদীতে মিলিত ছিল। রমনা অংশটি রমনা লেক হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। ঢাকার অন্যতম বড় খাল বেগুনবাড়ি খালের মাঝখানের অংশ হয়েছে হাতিরঝিল। খালটি পান্থপথ থেকে শুরু হয়ে সোনারগাঁও হোটেলের পেছন দিয়ে তেজগাঁও শিল্প এলাকা হয়ে রামপুরা ব্রিজের তলদেশ দিয়ে বনশ্রী ও আফতাব নগরের মধ্য দিয়ে বালু নদের সঙ্গে মিশেছে। এ খালের একটি অংশ মহাখালী বাস টার্মিনালের পাশ দিয়ে নাখালপাড়া পাগলাপুল হয়ে পুরাতন বিমানবন্দর পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। কল্যাণপুর, শ্যামলী, আদাবর ও বায়তুল আমান হাউজিং এলাকা পর্যন্ত বিস্তৃত কল্যাণপুর খাল। একসময় এ খাল তুরাগ নদে সংযুক্ত ছিল। কিন্তু মোহাম্মদপুর-গাবতলী বেড়িবাঁধের কারণে গতিপথ বাধাগ্রস্ত হয়। কল্যাণপুর অংশের বহুতল ভবন ও ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা গড়ে ওঠায় খাল সরু হয়ে নর্দমার আকৃতি ধারণ করেছে। দুর্গন্ধময় পানি এলাকাবাসীর জন্য দুঃসহ যন্ত্রণার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। মোহাম্মদপুর ও বায়তুল আমান হাউজিংয়ের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত ছিল রামচন্দ্রপুর খাল। এ খালের ৭০ ভাগই এখন বেদখল হয়ে গেছে। এখন এলাকার প্রধান ভাগাড় হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে খালটি।

আবদুল্লাহপুর খালটি হরিরামপুর, রানাভোলা, আবদুল্লাহপুর, উত্তরা, দলিপাড়া হয়ে বাউনিয়ায় গিয়ে মিশেছে। রাস্তা ও রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের প্লটের কারণে খালটি এরই মধ্যে কয়েকটি ভাগে বিভক্ত হয়েছে। বেদখল হয়ে যাওয়া আরও কয়েকটি খালের মধ্যে রয়েছে- ক্যান্টনমেন্টের উত্তরাংশ এবং মিরপুরের পল্লবী এলাকা ঘেঁষে যাওয়া বাউনিয়া খাল, পল্লবীর রূপনগর, ইস্টার্ন হাউজিং, বোটানিক্যাল গার্ডেনের উত্তর প্রান্ত দিয়ে যাওয়া দ্বিগুণ খাল, খিলগাঁও, বাসাবো ও সবুজবাগ এলাকা দিয়ে প্রবাহিত খিলগাঁও খাল, মুগদাপাড়া, জিরানী ও সবুজবাগ দিয়ে যাওয়া জিরানী খাল, মাণ্ডা, গোলাপবাগ, গ্রিন মডেল টাউন, মানিকনগর এলাকা দিয়ে যাওয়া মাণ্ডা খাল। এ ছাড়া মিরপুরের কসাইবাড়ি ও বোয়ালিয়া এলাকা দিয়ে প্রবাহিত বোয়ালিয়া খাল, খিলক্ষেত পাতিরা ও ডুমনি এলাকা দিয়ে প্রবাহিত সুতিভোলা খালের ৬০ ভাগেরই কোনো অস্তিত্ব নেই।

পুরো ঢাকার প্রায় অর্ধেক পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা সঞ্চালন হতো মোহাম্মদপুরের বসিলার এই খাল দিয়ে। এক সময় বুড়িগঙ্গা থেকে তুরাগ তীরে সহজে পৌঁছার মাধ্যম ও ছিল এই খালটি। কিন্তু বর্তমানে এর দু’পাশ জুড়ে রয়েছে অবৈধ দখল, যুক্ত হয়েছে দূষণ। দখল আর দূষণের পরে এবার ভরাট করার পালা। সরকারের কোনো ধরণের অনুমতি ছাড়াই খালটিকে ভরাট করছে আন্ত:জেলা ট্রাক চালক ইউনিয়ন। বসিলার এ খালটি ভরাট করায় স্থায়ী দুর্ভোগের শঙ্কা এলাকাবাসীর।

এলাকাবাসী বলেন, যদি খালই আটকে যায় তাহলে তো ঢাকা শহর তলায় যাবে। তখন কেউ কূল কিনারা পাবে না। এজন্য এসব ট্রাক রাখার জন্য একটা ভালো ব্যবস্থা করে এই খাল পুনুরায় খনন করা উচিত।

আন্ত:জেলা ট্রাক চালক ইউনিয়নের সভাপতি নসু মিয়া বলেন, আমরা গেলো তিন চার মাস যাবত এখানে মাটি ভরাট করে ট্রাক রাখার ব্যবস্থা করছি। ট্রাক রাখার পারমিশন এখনও দেয়নি। তবে বলেছে আপনারা আগে জায়গা ভরাট করেন তারপর দেওয়া যাবে।

জলাশয় আইন থাকলেও বাস্তবায়ন নিয়ে সরকার দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করছে না বলে মন্তব্য পরিবেশবাদীদের।

বেলার নির্বাহী পরিচালক সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, সরকারি বাহিনী, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী থেকে শুরু করে বাস ট্রাক মালিক সমিতি পর্যন্ত ভরছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এগুলোর অনুমোদন নেই। সরকারি বাহিনীরা তাদের ক্ষমতা ব্যবহার করে এগুলো করছে।

তিনি সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে প্রশ্ন করে বলেন, সরকার কি আজ পর্যন্ত কোনো জলাশয় আইন ভঙ্গকারীর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে?’ জলাশয় আইন ভঙ্গকারীর বির“দ্ধে যদি আইগত ব্যবস্থা গ্রহণ করলে এই ধরনের ভরাট বন্ধ হতো।

খাল দখলের বিষয়টি স্বীকার করে স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী জানান, নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে খাল উদ্ধার করা জরুরী তবে সেক্ষেত্রে সিটি করপেরেশনকে এগিয়ে আসতে হবে।

স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মসিউর রহমান রাঙ্গা বলেছেন, যদি কোনো খাল কেউ ভরাট করে দখল করার চেষ্টা করে, এমন অভিযোগ সরকার যদি পায়, তাহলে সরকার অবশ্যই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে এবং একপর্যায়ে গিয়ে এগুলো উদ্ধার হবে অবশ্যই।

আগামীতে সুন্দর ও বাসযোগ্য নগরি গড়তে ঢাকার চার পাশে নদী-নালা ও খালগুলোকে রক্ষণাবেক্ষণ ও উদ্ধারে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা থাকা সত্যেও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে দখল করা হচ্ছে খালগুলো ।

পরিবেশবিদরা বলছেন, এসব খান উদ্ধার করা না হলে আগামী কয়েক বছরেই ঢাকা হবে বসবাসের অনুপযোগী।