ফেসবুকে বিজ্ঞাপন বন্ধ করে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে মজিলা ফাউন্ডেশন। বিশ্বখ্যাত ইন্টারনেট ব্রাউজার ফায়ারফক্সের নির্মাতা প্রতিষ্ঠান মোজিলা তথ্য সুরক্ষা ও ব্যক্তিগত তথ্যের গোপনীয়তা রক্ষায় সোচ্চার প্রতিষ্ঠানগুলোর একটি।
ফেসবুকের তথ্য বেহাত কেলেঙ্কারির প্রতিক্রিয়ায় প্রতিষ্ঠানটি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অলাভজনক প্রতিষ্ঠানটি ব্যবহারকারীদের তথ্য সুরক্ষিত করার বিষয়টি নিশ্চিত না হওয়া করা পর্যন্ত ফেসবুককে বিজ্ঞাপন প্রচারের জন্য কোনও অর্থ দেবে না। ব্যবহারকারীদের তথ্যেরসুরক্ষায় তারা অ্যাপ নির্মাতাদের তথ্য সংগ্রহের ক্ষমতা সীমাবদ্ধ করার পরামর্শ দিয়েছে।
মোজিলার প্রধান বাণিজ্য ও আইন কর্মকর্তা ডেনেলে ডিক্সন বলেছেন, ব্যবহারকারীদের তথ্য সুরক্ষা দিতে ফেসবুকের নেওয়া ব্যবস্থা অপ্রতুল। সেকারণেই ৫ কোটি ব্যবহারকারীর তথ্য বেহাত হওয়ার মতো ঘটনা ঘটতে পেরেছে। বর্তমানে ব্যবহারকারীদের তথ্য যেভাবে সংরক্ষণ করা হচ্ছে তাতে তৃতীয় পক্ষের হাতে অনেক তথ্য চলে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে। তার মতে, ‘তথ্য সুরক্ষা বাড়াতে মার্ক জাকারবার্গের প্রতিশ্রুতি আমাদের অনুপ্রাণিত করেছে। ব্যবহারকারীদের তথ্য সুরক্ষিত করার কার্যকর ব্যবস্থা এবং তৃতীয়পক্ষের কাছে ব্যবহারকারীদের তথ্য নিয়ন্ত্রণহীনভাবে চলে যাওয়া ঠেকাতে ব্যবস্থা নেওয়া হলে আমরা আবার ফেসবুকে বিজ্ঞাপন দেওয়া শুরু করব।’ ফেসবুকে যেসব পরিবর্তন বাস্তবায়ন করা হবে তা নিয়েবুধবার জাকারবার্গের দেওয়া বক্তব্যের আগেই মোজিলা করণীয় নির্ধারণে তাদের প্রস্তাবনা তুলে ধরেছে। মোজিলা বলেছে, অ্যাপব্যবহারকারীদের বন্ধুতালিকা দেখার যে সুযোগ তৃতীয়পক্ষের অ্যাপগুলো পায় তা অবিলম্বে বন্ধ করে দেওয়া উচিত।
উল্লেখ্য, ফেসবুক তথ্য বেহাত নিয়ে যে আলোচনা হচ্ছে তার মূলে রয়েছে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ড. কোগানের একটি অ্যাপ, যার নাম ছিল ‘দিস ইজ ইওর ডিজিটাল লাইফ’। সরাসরি ২ লাখ ৭০ হাজার ফেসবুক ব্যবহারকারী ওই অ্যাপের ব্যবহারকারী হলেও অ্যাপটি ব্যবহারকারীদের বন্ধুতালিকায় থাকা ব্যক্তিদের তথ্যও সংগ্রহ করেছিল। এভাবে সংগৃহীত প্রায় ৫ কোটি ব্যবহারকারীর তথ্য থেকে তাদের মানসিক অবস্থার চিত্র তৈরি করা হয়েছিল। ডোনাল্ড ট্রাম্পের পক্ষে নির্বাচনি প্রচারণায় ভুয়া খবর ছড়িয়ে জনমত প্রভাবিত করতে ওইসব তথ্য ব্যবহৃত হয়। পরবর্তীতে কেমব্রিজ অ্যানালাইটিকার ক্রিস্টোফার উইলি প্রতিষ্ঠানটির এই তথ্য হাতিয়ে নেওয়ার বিষয়ে সবকিছু ফাঁস করে দেন।