হেপাটাইটিস-বি পৃথিবীর অন্যতম সংক্রামক এবং ঘাতক ব্যাধি। বর্তমানে বিশ্বজুড়ে ৩০ কোটি মানুষ প্রাণঘাতি এই হেপাটাইটিস বি ভাইরাস (এইচবিভি) নিয়ে বেঁচে আছেন।
মঙ্গলবার এক গবেষণায় এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
তথ্য মতে, প্রাণঘাতি এই রোগের চিকিৎসা খুব কম সংখ্যক মানুষেই করছেন। ৩০ কোটি মানুষের মধ্যে গড়ে প্রতি ২০ জনের মধ্যে মাত্র একজন যথাযথ চিকিৎসা নিচ্ছেন।
এ রোগ হেপাটাইটিস-বি ভাইরাসের মাধ্যমে ঘটে। এই ভাইরাস এমন বিপজ্জনক যে প্রধানত তা লিভারকে আক্রমণ করে। হেপাটাইটিস-বি এমন এক রোগ, যা লিভারের প্রদাহ ঘটায় এবং লিভার ক্যানসার সৃষ্টি করে।
মায়েদের শরীরে এই ভাইরাস থাকলে তা সন্তানদের মাঝেও ছড়িয়ে পড়তে পারে। যদি সঠিকভাবে চিকিৎসা না নেয়া হয়, তবে এতে মানুষের যকৃতে ক্যান্সারসহ মারাত্মক রোগ হতে পারে।
যকৃতে হেপাটাইটিস সংশ্লিষ্ট রোগের কারণে প্রতি বছর ছয় লাখ লোকের মৃত্যু ঘটে। যেটা ম্যালেরিয়ার চেয়েও ব্যাপক বলে মনে করা হচ্ছে।
সত্তরের দশক থেকেই এই ভাইরাসের পরীক্ষার ব্যবস্থা থাকলেও প্রতি ১০জনে মাত্র একজন রোগী সেটার দারস্থ হন। রক্ত ও শরীর থেকে নির্গত অন্য তরল পদার্থের মাধ্যমে এই রোগের সংক্রমণ ঘটে। বিশেষ করে মায়ের কাছ থেকে তার সন্তানদের শরীরে ছড়িয়ে পড়ে এই ভাইরাস।
শরীরে একবার এই ভাইরাস ঢুকলে তা আর কোনোদিন তা নিরাময় ঘটে না। কিন্তু ওষুধ সেবনের মাধ্যমে রোগের লক্ষণগুলো নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব বলে প্রমাণিত হয়েছে।
গবেষক হামি রাজাভি বলেন, অধিকাংশ শিশুর শরীরে জন্মের সময় মায়ের শরীর থেকে এই ভাইরাসের সংক্রমণ ঘটে। কাজেই জন্মের সময়ে শিশুদের জীবন রক্ষাকারী টিকা দিতে হবে।
আশির দশক থেকেই হেপাটাইটিস বি ভাইরাসের টিকা পাওয়া যাচ্ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ১৯৯২ সাল থেকে বলে আসছে, শিশু জন্মের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই এই ভাইরাসের টিকার প্রথম ডোজ দিতে হবে। কিন্তু পৃথিবীতে জন্ম নেয়া অর্ধেক শিশুকে কেবল যথাসময়ে সেই টিকা দেয়া হয়।