ভারতে সুপ্রিমকোর্টের ‘তফসিলি জাতি-উপজাতি অত্যাচার বন্ধ আইন’ শিথিলকরণের রায়কে কেন্দ্র করে ক্ষোভ-প্রতিবাদ ও বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে উত্তর ও মধ্য ভারত।
দলিত সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরা ২০ মার্চ দেয়া এই রায়কে কেন্দ্র করে সোমবার ‘ভারত বন্ধ’র ডাক দেন।
এর প্রেক্ষিতে বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে রাজস্থান, পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশ, বিহার, ওড়িশা, মধ্যপ্রদেশ ও গুজরাট। মধ্যপ্রদেশে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে পাঁচ জনের মৃত্যুর খবর এসেছে। বাড়মেরে পুলিশ ও বিক্ষোভকারীদের মধ্যে সংঘর্ষে পুলিশসহ ২৫ জন আহত হয়।
এ দিন সকালেই রাস্তায় নেমে পড়েন সমর্থকরা। বিক্ষোভকারীরা রেল অবরোধ, সড়ক অবরোধ, দোকানপাট বন্ধ, ভাঙচুর ও গাড়ি জ্বালিয়ে দেন। অবরোধ করা হয় রেল চলাচল। পুলিশ পরিস্থিতি মোকাবেলায় লাঠি চার্জ এবং কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে। এছাড়া কারফিউ ও মধ্যপ্রদেশের কিছু এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। পাঞ্জাবে সোমবার ১১ টা পর্যন্ত ইন্টারনেট সেবা স্থগিত করা হয়েছে। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে রাজ্যটির স্কুল কলেজ বন্ধ রাখা ছাড়াও স্থগিত করে দেওয়া হয়েছে সিবিএসই-র দশম এবং দ্বাদশ শ্রেণির সমস্ত পরীক্ষা। রাজ্যটিতে দলিত মানুষের সংখ্যা প্রায় ৩২ শতাংশ।
এর আগে ২০ মার্চ সুপ্রিম কোর্টের রায়ে বলা হয়, তফসিলি জাতি ও উপজাতিদের উপর অত্যাচার বন্ধের আইন সরকারি কর্মীদের বিরুদ্ধে অন্যায়ভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে। তাই নিয়োগ কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া এই আইনে কোনও সরকারি কর্মীকে গ্রেফতার করা যাবে না। আদালতের রায়ে আরো বলা হয়, একই আদেশ কোন সাধারণ নাগরিকের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। এক্ষেত্রে তাঁকে গ্রেফতারের আগে ডিএসপি পদমর্যাদার পুলিশকে দিয়ে তা তদন্ত করাতে হবে। এর প্রতিবাদে রাষ্ট্রীয় সেবা দল, ন্যাশনাল দলিত মুভমেন্ট ফর জাস্টিস, সিআইটিইউ, ভারিপ বহুজন এর মত সংগঠনগুলো দাবি করে এই রায় দলিত স্বার্থের পরিপন্থী।
এদিকে দলিতদের অধিকার আইন শিথিল করণকে চ্যলেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করা হবে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী রাজনাথ সিং ও আইনমন্ত্রী। দলিত সংগঠনগুলিকে বিক্ষোভ থেকে সরে আসার আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
অন্যদিকে, কংগ্রেসের সভাপতি রাহুল গান্ধী দলিতদের আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়ে বলেন, দলিতদের সমাজের নিচুস্তরে রাখা বিজেপির রক্তে বইছে। সেই সঙ্গে তাদের ধারণার বিরোধীদের কঠোর হস্তে দমন করা হচ্ছে।