মুসলিম উম্মাহর চ্যালেঞ্জ, রোহিঙ্গা সংকট, সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদ প্রতিরোধ, ফিলিস্তিন সমস্যাসহ বিভিন্ন বিষয় প্রাধান্য পাবে ঢাকায় অনুষ্ঠেয় ইসলামী সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের ৪৫তম সম্মেলনে। এছাড়া এই সম্মেলনে অংশ নিতে আসা প্রতিনিধিদের রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনের আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ।
ওআইসি সম্মেলনের বিষয়ে অবহিত করতে বৃহস্পতিবার বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় ঢাকার বিভিন্ন মিশনের কূটনীতিক ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিদের এক ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী এসব জানিয়েছেন।
ব্রিফিংয়ে সৌদি আরব, কুয়েত, কাতার, মিশর, মালয়েশিয়া, ভিয়েতনাম, কানাডা, ফিলিস্তিন, পাকিস্তান প্রভৃতি দেশের কূটনীতিকরা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া ব্রিফিংয়ে জাতিসংঘ, আগা খান ইন্টারন্যাশনাল, আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা কেন্দ্রসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিরা যোগ দেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ওআইসির পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের ৪৫তম সম্মেলন আগামী ৫-৬ মে ঢাকায় অনুষ্ঠিত হবে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রী কূটনীতিকদের জানান, এবারের সম্মেলনের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে, ‘টেকসই শান্তি, সংহতি ও উন্নয়নের লক্ষ্যে ইসলামি মূল্যবোধ’। এই সম্মেলনে রোহিঙ্গা সংকট, ফিলিস্তিন ইস্যুসহ সংখ্যালঘু মুসলিমদের মানবিক সংকট আলোচনা প্রাধান্য পাবে। ওআইসি সম্মেলনে অংশ নিতে আসা প্রতিনিধিদের জন্য রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনের ব্যবস্থা থাকবে। যেসব প্রতিনিধিরা রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করতে চাইবেন, তারা সেখানে যেতে পারবেন।
প্রায় সাড়ে তিন দশক পর এ নিয়ে দ্বিতীয় বারের মতো বাংলাদেশ ওআইসির নীতিনির্ধারনী পর্যায়ের কোনো সম্মেলনের আয়োজন করতে চলেছে। এই সম্মেলন সামনে রেখে ব্যাপক তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ১৯৮৩ সালে ঢাকায় প্রথমবারের মতো ওআইসি পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। চলমান রোহিঙ্গা সংকট মোকাবেলায় আসন্ন এ সম্মেলন থেকে কূটনৈতিক তৎপরতা জোরদারে দেশের মাটিতে বড় ধরণের সুযোগ পাবে বাংলাদেশ। গত বছর মে মাসে আইভরি কোস্টের আবিদজানে ৪৪তম সম্মেলনে ওআইসিভুক্ত সদস্য দেশগুলোর পররাষ্ট্র মন্ত্রীদের সর্বসম্মতিক্রমে বাংলাদেশে ৪৫তম সম্মেলন হওয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
কূটনৈতিক সূত্র বলছে, সম্মেলনে রোহিঙ্গাদের নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করবে ওআইসি। আন্তর্জাতিক ফোরমগুলো রোহিঙ্গা সংকট মোকাবেলায় যেভাবে সোচ্চার রয়েছে, ঠিক এমন সময়ে এই ধরণের বড় আয়োজন বাংলাদেশকে আরও একধাপ এগিয়ে নেবে। সম্মেলন থেকে বিভিন্ন দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা নিজ নিজ দেশের অবস্থান আরও দৃঢ় ভাবে ব্যক্ত করবেন এবং সেখান থেকেও একটি রেজ্যুলেশন পাশ হবে। এতে করে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের বিষয়টি আরও সহজতর হবে।