রাখাইন থেকে রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের ঢল বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়ার আট মাস পর এবারই প্রথম রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শনে আসছে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের একটি প্রতিনিধি দল।
চলতি মাসের শেষের দিকে আগামী ২৭ ও ২৮ এপ্রিল নিরাপত্তা পরিষদের প্রতিনিধি দলটি কক্সবাজার সফর করবেন। রোহিঙ্গাদের সাথে কথা বলে নির্যাতনের বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত্ব সংগ্রহের পর তারা রাখাইনের উদ্দেশ্য মিয়ানমার সফর করবেন বলে জানিয়েছে ঢাকার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল একটি সূত্র।
নিরাপত্তা পরিষদ সদস্যরা এমন এক সময় ঢাকা সফরে আসছেন, যখন রোহিঙ্গাদের মানবাধিকার রক্ষায় আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ফোরামগুলো ব্যাপক সোচ্চার। একই সঙ্গে তারা রোহিঙ্গাদের হত্যার অভিযোগে মিয়ানমার সরকারের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ আনাসহ অর্থনৈতিক অবরোধের কথা ভাবছে।
তবে, নিরাপত্তা পরিষদের বাংলাদেশ সফরের আগেই মিয়ানমারের সমাজকল্যাণ, ত্রাণ ও পুনর্বাসনমন্ত্রী উইন মিয়াত আই সংক্ষিপ্ত সফরে কক্সবাজার রোহিঙ্গা ক্যাম্প ঘুরে বৃহস্পতিবার ঢাকা ত্যাগ করেন। আর এটাই ছিলো মিয়ানমারের তরফ থেকে প্রথম রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন।
কূটনীতিকরা বলছেন, নিরাপত্তা পরিষদের আগে মিয়ানমারের মন্ত্রীর এ সফর রোহিঙ্গা প্রত্যাসনের জন্য মোটেও স্বাভাবিক না। নিরাপত্তা পরিষদ রোহিঙ্গাদের কাছ থেকে ঠিক কি ধরণের বার্তা পেতে যাচ্ছে সেটা বোঝার জন্যই উইন মিয়াত আই তারাহুড়ো করে রোহিঙ্গাদের দেখতে গিয়েছিলেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর সাথে বৈঠকের পর মিয়ানমারের মন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেছেন, বাংলাদেশে অবস্থান রতদের (রোহিঙ্গা) আমরা ফিরিয়ে নিতে রাজি। যত দ্রুত সম্ভব রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু হবে। আমরা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি রোহিঙ্গা ফেরানো হবে। আমার মনে হয়, অবস্থার উন্নতি হয়েছে। এখন আমরা রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন খুব দ্রুত শুরু করতে পারবো।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র মতে, নিরাপত্তা পরিষদকে মিয়ানমার সফরের বিষয়ে সবুজ সংকেত দিয়েছে অং সান সুচি সরকার। তবে তারা রাখাইন রাজ্যে যেতে পারবেন কিনা, তাদেরকে সেই অনুমতি দেয়া হবে কিনা- তা এখন নিশ্চিত নয়। এর আগে গত ফেব্রুয়ারিতে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ মিয়ানমার সফরে যাওয়ার প্রস্তাব করেছিল। তখন সুচি সরকারের তরফে বলা হয়েছিল- সফরের এটা উত্তম সময় নয়।
তবে এবার নেপি’ডর তরফে নিরাপত্তা পরিষদকে মিয়ানমারে স্বাগত জানানোর সবুজ সংকেত দেয়া হয়েছে। তবে রাখাইন প্রশ্নে সিদ্ধান্ত পেতে হয়তো আরো কিছুটা সময় লাগবে। জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের এই সফর আয়োজন করছে বৃটেন, কুয়েত ও পেরু।