দুই হাতে অস্ত্র কিনছে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। এক সপ্তাহের মধ্যে পশ্চিমের দুই দেশের সঙ্গে বড় ধরনের অস্ত্র আমদানি চুক্তি করেছে সৌদি আরব। ইউরোপ সফরে গিয়ে ফ্রান্সের পর এবার স্পেনের সঙ্গেও অস্ত্রচুক্তি করলেন যুবরাজ সালমান।
বৃহস্পতিবার স্পেন থেকে যুদ্ধজাহাজ কেনার জন্য সৌদি যুবরাজ মোহাম্মাদ বিন সালমান ২২০ কোটি ডলারের একটি অস্ত্রচুক্তি করেছেন। চুক্তির আওতায় স্পেনের রাষ্ট্রীয় জাহাজ নির্মাণকারী কোম্পানি নাভানতিয়া পাঁচটি যুদ্ধজাহাজ বিক্রি করবে সৌদি রাজকীয় নৌবাহিনীর কাছে।
এছাড়া স্পেনের সামরিক বাহিনী ও ঠিকাদাররা সৌদি আরবে একটি জাহাজ নির্মাণ কেন্দ্র তৈরি করে দেবে।
অস্ত্রচুক্তিতে সই করেন সৌদি যুবরাজ ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী মুহাম্মাদ বিন সালমান। এর আগে তিনি স্পেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী মরিয়া ডলোরেস ডি কোসপেডালের সঙ্গে বৈঠকে করেন। খবর বিবিসির।
স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্স ইন্সটিটিউটের (এসআইপিআরআই) ২০১৭ সালের তথ্যানুসারে, বিশ্বের শীর্ষ অস্ত্রক্রয়ের দেশের তালিকায় ভারতের পরে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে সৌদি আরব। অস্ত্রক্রয় বাড়িয়ে সৌদি যুবরাজ যুদ্ধ মিশন শুরু করেছেন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
দারিদ্র্যপীড়িত ইয়েমেনের হামলা আরও জোরদার ও আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বী ইরানকে শায়েস্তা করার লক্ষ্যেই বিশ্বের অস্ত্রসমৃদ্ধ দেশগুলো থেকে যুদ্ধজাহাজ, যুদ্ধবিমান, ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এস-৪০০ ক্রয় করছে সৌদি আরব।
২০৩০ সালের মধ্যে দেশীয় রসদে অস্ত্র উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছেন সৌদি যুবরাজ।
এ লক্ষ্য পূরণে উঠেপড়ে লেগেছেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের দেশগুলোকে এর প্রধান অংশীদার বানাতে চাইছেন সালমান। এ জন্য পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে অস্ত্র চুক্তিসহ সামরিক বিনিয়োগ চুক্তি করছেন তিনি।
এর আগে তিন দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে ফ্রান্সে গিয়েছিলেন সালমান। ওই সফরে ফ্রান্সের সঙ্গে সৌদি আরবের মধ্যে ২০টি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে, যার মোট আর্থিক মূল্য ১ হাজার ৮০০ কোটি ডলার। সবচেয়ে বড় চুক্তিটি হয়েছে সৌদি আরামকো ও ফ্রান্সের টোটাল কোম্পানির সঙ্গে।
চুক্তি অনুযায়ী, সৌদি আরবের পূর্বাঞ্চলীয় এলাকা জুবাইল ইন্ডাস্ট্রিয়াল সিটিতে একটি পেট্রোকেমিক্যাল কমপ্লেক্স গড়ে তোলা হবে, এতে ফ্রান্স বিনিয়োগ করবে ৯০০ কোটি ডলার। ফ্রান্স বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অস্ত্র রফতানিকারক দেশ। তারা সৌদি আরবকে তাদের গুরুত্বপূর্ণ ক্রেতা হিসেবে দেখে।
পশ্চিমা দেশগুলোর গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্র ক্রেতাও এখন তেলসমৃদ্ধ দেশ সৌদি আরব।