কক্সবাজার জেলার মহেশখালীর মাতারবাড়ি এলাকায় দেশের প্রথম গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণের প্রাথমিক কার্যক্রম শুরু হচ্ছে আগামী মে মাসের প্রথম সপ্তাহে। কার্যক্রমের অংশ হিসেবে মের প্রথম সপ্তাহে সমুদ্রবন্দর নির্মাণের পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগ চূড়ান্ত করবে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। তবে মূল বন্দর নির্মাণে ফিজিক্যাল ওয়ার্ক শুরু হতে ২০২০ সাল পর্যন্ত সময় লেগে যেতে পারে।
চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ারম্যান কমোডর জুলফিকার আজিজ রাইজিংবিডিকে জানান, চট্টগ্রাম বন্দর দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দর। এই বন্দর দিয়ে দেশের সিংহভাগ আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম সম্পাদন হয়। দিন দিন চট্টগ্রাম বন্দরের কন্টেইনার হ্যান্ডলিং বৃদ্ধি পাচ্ছে। বর্তমানে চট্টগ্রাম বন্দরে দৈনিক ৩৫০০ থেকে ৩৮০০ টিইইউস আমদানি পণ্যের কনটেইনার হ্যান্ডলিং হয়ে থাকে, যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। বর্তমান বাৎসরিক হিসাবে কন্টেইনার হ্যান্ডলিং ৫ দশমিক ৭ মিলিয়ন টিইইউস। প্রবৃদ্ধির হার অনুযায়ী, ২০১৪ সাল নাগাদ বন্দরের কন্টেইনার হ্যান্ডলিংয়ের হার দাঁড়াবে ৬ দশমিক ৫ মিলিয়ন টিইইউস। এমন পরিস্থিতিতে আরো সমুদ্রবন্দর নির্মাণের বিকল্প নেই। ২০৪১ সালের প্রবৃদ্ধির হিসাবকে সামনে রেখে কক্সবাজার জেলার মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়ি এলাকায় নতুন গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
বন্দর চেয়ারম্যান জানান, আগামী মে মাসের প্রথম সপ্তাহে গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণের লক্ষ্যে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগের প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে। ২০২০ সালের আগস্টে এই বন্দরের ফিজিক্যাল ওয়ার্ক শুরু হবে। ২০২২ সালের মাঝামাঝিতে একটি টার্মিনাল এবং ২০২৩ সালের শেষে একটি মাল্টিপারপাস টার্মিনাল নির্মাণ কাজ শেষ হবে।
কমোডর জুলফিকার আজিজ বলেন, ‘গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণের লক্ষ্যে মাতারবাড়িতে ১৬ মিটার ড্রাফট ও ২৫০ মিটার চওড়া একটি চ্যানেল নির্মাণের কাজ ইতোমধ্যে শুরু করা হয়েছে।’
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (প্রশাসন ও পরিকল্পনা) জাফর আলম জানান, মহেশখালীর মাতারবাড়িতে গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ প্রকল্পের ফিজিভিলিটি স্টাডি, দুটি ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং এবং একটি এপ্রাইজল মিশন সম্পন্ন হয়েছে। চলতি বছরের মে মাসের মধ্যে জাইকার সাথে ঋণ নেগোসিয়েশন কার্যক্রম শুরু হবে। জুনের মধ্যে ডিটেইল ডিজাইনের (ইঞ্জিনিয়ারিং ডিজাইন) ঋণ চুক্তি করা হবে। নির্মাণ কাজ শেষে ২০২৩ সালে চট্টগ্রামে নতুন গভীর সমুদ্র বন্দর পূর্ণাঙ্গভাবে চালু করা সম্ভব হবে বলে আশা করা যায়।