৯৫ ভাগেরও বেশি মানুষ বিশ্বে অস্বাস্থ্যকর বায়ুতে শ্বাস নিচ্ছে। এবং গরিব দেশের মানুষের অবস্থা এক্ষেত্রে আরো শোচনীয়। গ্লোবাল এয়ার রিপোর্ট বলছে হেল্থ ইফেক্টস ইনস্টিটিউট’এর তথ্য অনুযায়ী ২০১৬ সালে দূষিত বায়ুজনিত রোগে ৬১ লাখ মানুষ মারা গেছে।
একই কারণে স্ট্রোক, হৃদরোগ, ফুঁসফুঁস ক্যান্সার, ফুঁসফুঁসের জটিল অসুখে অকাল মৃত্যুবরণ করছে অনেকে। বায়ু দূষণ বিশ্বে এখন চতুর্থ রোগে মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। উচ্চ রক্তচাপ, খাদ্যাভাস ও ধূমপানজনিত রোগের পরই দূষিত বায়ু মৃত্যু আরেক কারণ।
বায়ু দূষণের কারণে তরুণ থেকে বৃদ্ধ, সব বয়সের মানুষকেই বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে ছুটতে হচ্ছে হাসপাতালে। এক বিবৃতিতে হেল্থ ইফেক্ট ইনস্টিটিউটের ভাইস প্রেসিডেন্ট বব ও’কিফি বলেন, বায়ু দূষণে আক্রান্ত হবার পর অনেককে কাজ থেকে বিরত থাকতে হচ্ছে, বাচ্চাদের স্কুলে যাওয়া বন্ধ হয়ে পড়েছে। বিশ্বের কোনো কোনো স্থানে বায়ু দূষণ রোধে সত্যিকারের কিছু কাজ চোখে পড়লেও অধিকাংশ ক্ষেত্রে এটি এক বিরাট চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশ্বে বায়ু দূষণে রোগাক্রান্ত হয়ে মৃত মানুষের অর্ধেকই চীন ও ভারতের।
২০১৬ সালে ভারতে ১১ লাখ মানুষ বায়ু দূষণের কারণে মারা গেছে। ২০১০ সাল থেকে পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও ভারতে বায়ু দূষণ দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। মাটি পুড়িয়ে ইট তৈরি, রান্না ও ঘর গরমের জন্যে আগুনের ব্যবহারে বায়ু দূষণ হচ্ছে। ২০১৬ সালে বিশ্বের আড়াই বিলিয়ন মানুষ অর্থাৎ প্রতি তিনজনে একজন কাঠ বা কাঠের মত অন্যান্য জ্বালানি থেকে বায়ু দূষণে আক্রান্ত হয়। এদের অধিকাংশই নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারের যাদের বাস এশিয়া ও আফ্রিকার দেশগুলোতে যারা ঘরে ও ঘরের বাইরে উভয় স্থানে বায়ু দূষণের শিকার হয়।
গত বছর এপ্রিলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক পরিবেশ দূষণ প্রতিবেদনে বলা হয় পরিবেশ দূষণের শিকার হয়ে যারা বিভিন্ন রোগে মারা যাচ্ছেন তাদের মধ্যে ১৭ লাখই শিশু যাদের বয়স ৫ বছরের নীচে। ২০১৫ সালে বিশ্বে ৬ জনের ১ জন মারা গেছে এমন রোগে যার সঙ্গে বায়ু, পানি, মাটি, রাসায়নিক দূষণ বা পেশাগত কাজের সময় দূষণের সম্পর্ক ছিল। এদের সংখ্যা ৯০ লাখ। গবেষণায় দেখা গেছে দূষণ সম্পর্কিত মৃত্যুর ক্ষেত্রে ৯২ ভাগই গরিব আয়ের মানুষ।