সম্রাট আকবর তার রাজত্বকালে 'ফতেহপুর সিকরি' রাজধানী হিসেবে গড়ে তুলেছিলেন। আর সেই শহরের জুমা মসজিদের মাঝেই রয়েছে সুফি সাধক সেলিম চিশতির সমাধি।
আকবরের পরে মুঘল সাম্রাজ্য যে তার ছেলের হাতেই থাকবে, এমনটাই ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন সেলিম চিশতি। সে কারণেই, সাধকের মৃত্যুর পরে তার সমাধি তৈরি করেছিলেন সম্রাট আকবর।
মুঘল স্থাপত্যের এক অসামান্য উদাহরণ বলে ধরা হয় সেলিম চিশতির এই দরগাটিকে। প্রায় এক মিটার উচ্চতার একটি বেদির ওপরে তৈরি করা হয় সমাধিটি। মার্বেলের জাফরিবেষ্টিত একটি হলঘরের অন্দরে রয়েছে এই দরগা।
হিন্দু-মুসলিম নির্বিশেষে, এই মার্বেল জাফরিতে ‘ধাগা’, বা সুতো বেঁধে দেন তাদের মনোবাসনা পূরণের জন্য।
দরগার দেয়ালে রয়েছে নানা ধরনের ছবি ও লতাপাতার নকশা। ১৬-১৯ শতকের মধ্যেই দরগায় বিভিন্ন শিল্পকর্ম সংযুক্ত হয়।
ভারতীয়, পারসি ও আরবি ধারার মিশ্রণে গড়ে ওঠা এই শিল্পনিদর্শন রক্ষার্থেই এবার এগিয়ে এসেছে আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া (এএসআই)।
দেয়ালের গায়ে আঁকা ছবিগুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে ভক্তদের হাত লেগে। আলো ও বাতাসেও ক্ষয় হয়ে যাচ্ছে ঐতিহ্যের শিল্পকর্ম। একসময়ের শ্বেতশুভ্র মার্বেলের তৈরি স্থাপত্যটি কালো হয়ে গিয়েছে বলেই জানিয়েছে এএসআই।
প্রতি বৃহস্পতিবার হাজার হাজার ভক্ত ভিড় জমান সেলিম চিশতির সমাধিস্থলে। কিন্তু এএসআইয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, সংস্কারের কাজ চলাকালীনও দরগা খোলা থাকবে।
তবে দেয়ালের ছবিগুলো বৈজ্ঞানিক উপায়ে পুনরুদ্ধার করার পরে তা ল্যামিনেট করে দেয়া হবে। কালো হয়ে যাওয়া মার্বেল পরিষ্কার করা হবে ‘মাড প্যাক’ দিয়ে।