নিজেদের পূর্ণ নাগরিক অধিকার ফিরে পাওয়ার পাশাপাশি নির্যাতনকারী মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত-আইসিসিতে নালিশ জানানোর চেষ্টা করছে নির্যাতনের শিকার রোহিঙ্গারা।
বিশেষ করে গুম-খুন এবং ধর্ষণের ঘটনাকে গণহত্যা হিসাবে উল্লেখ করে তারা আন্তর্জাতিক আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য নানামুখী তৎপরতা চালাচ্ছে।
নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের মতে, আন্তর্জাতিক আদালতে অভিযোগ জানানোর মতো যথেষ্ট তথ্য প্রমাণ রয়েছে রোহিঙ্গাদের হাতে।
বিদেশি কোনো ব্যক্তি কিংবা সংস্থার লোকজন উখিয়া আশ্রয় শিবির পরিদর্শনে গেলেই নানা ধরনের প্ল্যাকার্ড এবং ব্যানার নিয়ে সমবেত হয়ে যায় হাজার হাজার রোহিঙ্গা। সব কিছু ছাপিয়ে একটি দাবি তাদের মূল হয়, তা হলো রোহিঙ্গাদের উপর অমানবিক নির্যাতনকারী মিয়ানমার সেনা সদস্যদের বিচার।
গত রোববার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদল উখিয়ার কতুপালং আসলে তার ব্যতিক্রম হয়নি। রোহিঙ্গা হিসাবে নিজ দেশে ফেরত যাওয়ার পাশাপাশি নির্যাতনকারী সেনা সদস্যদের বিচারের দাবি জানান তারা।
প্রাণ ভয়ে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা বলছেন, রাখাইন রাজ্যে সেনা সদস্যরা রোহিঙ্গাদের উপর যে নির্যাতন চালিয়েছে তার বিচারের জন্য আন্তর্জাতিক আদালতে যেতে চান তারা।
গত আগস্টের পর থেকে প্রায়ই বিভিন্ন দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানরা কক্সবাজার জেলার টেকনাফ এবং উখিয়ার রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবিরগুলো পরিদর্শনে আসছেন। সেই সুযোগে তাদের দাবিগুলো তুলে ধরার চেষ্টা চালায় বলে জানান সরকারি কর্মকর্তারা।
উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ নিকারুজ্জামান বলেন, ‘তাদের অধিকারের জন্য তারা সব জায়গায় আবেদন করছে। আসলে জাতিসংঘের দল খুবই ক্ষমতাসীন, তারা যদি তাদের কাছে সাহায্য কথা জানিয়েছেন।’
রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবির কতুপালং ক্যাম্প ইনচার্জ রেজাউল করিম বলেন, ‘আন্তর্জাতিক আদালত যদি তাদের ওপর নির্যাতনের বিচার করে তবে মিয়ানমার তাদের ওপর কৃতজ্ঞ থাকবে।’
নিরাপত্তা বিশ্লেষক লে কর্নেল (অব.) ফোরকান আহমেদ বলেন, ‘প্রমাণের কোন অভাব নেই। যদি আন্তর্জাতিক আদালত ওরকম হয়ে থাকে তাহলে আমার মনে হয়না মিয়ানমার সেনারা এর হাত থেকে রক্ষা পাবে।’
গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতার অপরাধে দায়ীদের শাস্তি নিশ্চিতে ১২০টি দেশের স্বীকৃতি নিয়ে ২০০২ সালের জুলাই মাস থেকে কাজ শুরু করে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত। নেদারল্যান্ডের হেগ শহর থেকেই এই আদালতের কর্মকা- পরিচালিত হয়।
নিউইয়র্ক মেইল/কক্সবাজার/১ মে ২০১৮/এসআর/এইচএম