logo
আপডেট : 8 May, 2018 18:04
নজরদারিতে শতাধিক প্রভাবাশালী
মাদক ব্যবসায়ীদের ধরতে কঠোর অবস্থানে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী
ঢাকা অফিস

মাদক ব্যবসায়ীদের ধরতে কঠোর অবস্থানে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী

প্রতীকী ছবি

জঙ্গী সন্ত্রাসের মতোই মাদককেও জিরো টলারেন্স নীতি নিয়ে অভিযানে নেমেছে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী। সীমান্তের জেলা গুলোর প্রশাসকদের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছোট বড় সব ধরণের ব্যবসায়ীদের তালিকা তৈরি করে পাঠাতে। 

ইতোমধ্যে সংস্থাগুলো স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে একটি তালিকা দিয়েছে। এরমধ্যে শতাধিক প্রভাবশালীর নামসহ ৩ হাজার মাদক ব্যবসায়ীর নাম রয়েছে তালিকায়।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, গত সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশের পর থেকে মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অভিযান বাড়িয়েছে র‌্যাব, পুলিশ ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, শতাধিক প্রভাবশালীদের মধ্যে বেশ কয়েকজন সংসদ সদস্য ও রাজনৈতিক নেতা রয়েছেন। প্রভাবশালীদের বিষয়ে সতর্ক অবস্থানে সংস্থাগুলো। তাদের উপর কঠোর নজরদারি রাখা হয়েছে। যথাযথ প্রমাণ সাপেক্ষে তাদের নাম ধাম ও কার্যক্রম প্রকাশ করা হবে। একাধিক সংস্থা থেকে এসব ব্যবসায়ীদের তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, তালিকাগুলো থেকে মন্ত্রণালয় একটি সমন্বিত প্রতিবেদন প্রস্তুত করেছে। এরমধ্যে কয়েকজন ব্যবসায়ী ধরা পড়েছেন। সোমবার গাজীপুরে র‌্যাব-১ এর অভিযানে ৪৮ মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতারের পর কারাদন্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। 

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় জিরো টলারেন্স নীতিতে মাঠে নেমেছে পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরসহ (ডিএনসি) সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সংস্থা। কয়েক দিনে দেশের বিভিন্ন এলাকায় ধরা পড়েছে ভয়াবহ মাদক ইয়াবা ট্যাবলেট।

প্রসঙ্গত, গত ৩ মে এলিটফোর্স র‌্যাবের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জঙ্গি দমনের মতো করে গুরুত্ব দিয়ে মাদকের বিরুদ্ধেও অভিযান চালানোর নির্দেশ দেন। এর আগেও প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন সময়ে মাদকের বিরুদ্ধে তার জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষণা করেন।

জানা গেছে, ৩ মে সে রাতেই বন্দর নগরী চট্টগ্রাম থেকে ১৩ লাখ পিস ইয়াবার একটি বড় চোরাচালানসহ দুইজন মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করে চট্টগ্রাম মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। 

গ্রেফতারকৃতরা হলেন আশরাফ আলী ও হাসান। জব্দকৃত ইয়াবার মূল্য প্রায় ৪৫ কোটি টাকা। এরপর ৪ মে (শুক্রবার) মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের (ডিএনসি) কর্মকর্তারা গোয়েন্দা জাল পেতে রাজধানীর শ্যামপুরের পোস্তগোলা ব্রিজ এলাকা থেকে ৬০ হাজার পিস ইয়াবাসহ ইমরানুল হক ও তাইজুল খানকে গ্রেফতার করেছে। তারা দুজনই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি সম্পন্ন করেছেন।

ডিএনসির কর্মকর্তারা বলেছেন, গ্রেফতারকৃত দুজনই মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের তালিকাভুক্ত মাদক ব্যবসায়ী। এদিকে ৫ মে র‌্যাব দেশের বিভিন্ন স্থানে ৫৯ জন মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে কারাদন্ড দিয়েছেন। এরপর রোববারও ঢাকা থেকে গ্রেফতারকৃত ২৪ জনকে র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত সাজা দিয়েছেন। এ দিন ঢাকা মহানগর পুলিশও (ডিএমপি) মাদকবিরোধী অভিযানে ৫৬ জনকে গ্রেফতার করে।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পরিচালক (গোয়েন্দা ও অপারেশন) ডিআইজি তৌফিক উদ্দিন আহমেদ বলেন, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীদের একটি তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। এ তালিকা ধরে গ্রেফতার অভিযান চালানো হচ্ছে। এরই মধ্যে একাধিক মাদক ব্যবসায়ীকে বিপুল মাদকদ্রব্যসহ গ্রেফতারও করা হয়েছে। 

র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার মুফতি মাহমুদ খান এ প্রসঙ্গে বলেন, র‌্যাব সারা বছরই মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে থাকে। তবে সম্প্রতি মাদকবিরোধী অভিযান আরও জোরদার করা হয়েছে। তালিকাভুক্ত এবং তালিকার বাইরেও গোয়েন্দা নজরদারির মাধ্যমে মাদক ব্যবসায়ী ও সেবনকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হচ্ছে।