ফ্লোরিডার স্থানীয় সময় ১০ মে বিকেল ৪টা ১২ মিনিট থেকে ৬টা ২২ মিনিটের মধ্যে বঙ্গবন্ধু-১ এর উৎক্ষেপণের কথা ছিল। বাংলাদেশ সময় তখন শুক্রবার রাত ২টা ১২ মিনিট থেকে ৪টা ২২ মিনিট। কিন্তু শেষ মুহূর্তে এসে তা স্থগিত হয়ে গেলো।
সব প্রস্তুতি সেরে উৎক্ষেপণের প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছিল; কিন্তু মিনিট খানেক আগে সমস্যা দেখা দেয়ায় স্যাটেলাইটটি আর যাত্রা করেনি লঞ্চ প্যাড থেকে।
ঠিক কী কারণে স্যাটেলাইটটি উৎক্ষেপণ স্থগিত করা হলো তাৎক্ষণিকভাবে কোনো কারণ জানায়নি স্পেসএক্স। তবে শুক্রবার দিবাগত রাত (শনিবার) ২টা ১৪ মিনিট থেকে ৪টা ২১ মিনিটের মধ্যে বঙ্গবন্ধু-১ উৎক্ষেপণের নতুন সময় ঠিক করা হয়েছে বলে স্পেসএক্সের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলেছে, স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণটি ২৪ ঘণ্টার মতো পিছিয়ে যাচ্ছে। কী সমস্যা দেখা দিয়েছে, তা চিহ্নিত করা যায়নি।
কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক জানান, উৎক্ষেপণের ঠিক দুই মিনিট আগে এটি কম্পিউটারের কন্ট্রোলে চলে যায়। হয়ত কিছু সমস্যায় আপতত উৎক্ষেপণ স্থগিত করা হয়েছে।
উৎক্ষেপণ দেখতে কেনেডি স্পেস সেন্টারে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে ও তার তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়।
তিনি তার ফেসবুকে লিখেন- ‘লঞ্চের চূড়ান্ত মিনিটগুলি সম্পূর্ণ কম্পিউটার দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। কম্পিউটার যদি কোনও পরিমাপ স্বাভাবিকের বাইরে খুঁজে পায় তবে তা লঞ্চটি বন্ধ করে দেয়। আজ এটি চালু করার আগে মাত্র ৪২ সেকেন্ডের লঞ্চ বন্ধ করে দিয়েছে। SpaceX সব পরীক্ষা করবে এবং একই সময়ে আগামীকাল (শুক্রবার দিনগত রাত) আবার লঞ্চটি চেষ্টা করবে। রকেট লঞ্চের জন্য এটি বেশ স্বাভাবিক কারণ আপনি কোন ঝুঁকি নিতে পারবেন না।’
প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে এই স্যাটেলাইট প্রকল্পের বাস্তবায়ন হচ্ছে। এর মাধ্যমে স্যাটেলাইট নির্ভর বাণিজ্য সম্ভাবনা দেখছে বাংলাদেশ সরকার। আশা করা হচ্ছে এ উপগ্রহ উৎক্ষেপণের পর বিদেশি স্যাটেলাইটের ভাড়া বাবদ বছরে ১৪ মিলিয়ন ডলার সাশ্রয় হবে বাংলাদেশের।
এই উৎক্ষেপণ দেখার জন্য আগ্রহীদের আমন্ত্রণ জানিয়েছে কেনেডি স্পেস সেন্টার। সংস্থাটি বলছে, আগ্রহীরা লঞ্চ প্যাড থেকে প্রায় ৩ দশমিক ৯ মাইল দূরে অ্যাপোলো বা স্যাটার্ন ভি সেন্টার এবং প্রায় সাড়ে ৭ মাইল দূরে কেনেডি স্পেস সেন্টারের মূল ভিজিটর কমপ্লেক্স থেকে এই উৎক্ষেপণ দেখার সুযোগ পাবেন।
রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত টেলিভিশন চ্যানেল বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) দেশের সব মানুষকেও এই উৎক্ষেপণ দেখার সুযোগ করে দিচ্ছে।
এছাড়া লাইভ স্ট্রিমিংয়ের মাধ্যমে ফেসবুকসহ বিভিন্ন ইউটিউব চ্যানেলে উৎক্ষেপণের দৃশ্য সরাসরি সম্প্রচার করা হবে।