রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে উভয় দেশের সমন্বয়ে গঠিত যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের প্রথম বৈঠকটি হয়েছিলো মিয়ানমারের প্রশাসনিক রাজধানী নেইপিদো। দীর্ঘ পাঁচ মাস পর গতকাল (বৃহস্পতিবার) দ্বিতীয় বৈঠকটি ঢাকায় অনুষ্ঠিত হলো।
বৈঠক শেষে উভয় দেশের পররাষ্ট্র সচিব গণমাধ্যমে খোলামেলা এবং ফলপ্রসু আলোচনার বিষয়টি তুলে ধরেন। তবে সম্পর্ক ও নিরাপত্তা বিশ্লষকরা বলছেন, আলোচনার বাইরে কূটনৈতিক তৎপরতা অব্যাহত এবং বৈশ্বিক চাপ ছাড়া সহসাই খুলছে না প্রত্যাবাসন জট!
নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) আবদুর রশিদের মতে, রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে উভয় দেশের মধ্যে যে সমঝোতা হয়েছে শুধু সেটার উপর ভিত্তি করলেই চলবে না। কারণ এ সংকট দক্ষিণ এশিয়ার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছ।
কাজেই সেসব দেশগুলোকে এখানে যুক্ত করতে হবে। যাতে করে এ ইস্যুটিকে কাজে লাগিয়ে সামনের দিনগুলোতে কেউ যেনো অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করতে না পারে। একই সঙ্গে তিনি বলেন, বাংলাদেশের নিরাপত্তার কথা ভেবেই সেটি করাটা এখন খুব জরুরী।
অবশ্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন বলছেন ভিন্ন কথা।
তিনি বলছেন, রোহিঙ্গা ইস্যু ছাড়া প্রতিবেশী মিয়ানমার-বাংলাদেশ সম্পর্কটা বেশ ভালো। সেখানে উভয় দেশের আলাপ আলোচনার মধ্য দিয়ে এর সমাধান হলে পরবর্তীতে আস্থার সংকট তৈরি হবে না। একই সাথে বৈশ্বিক ফোরামে কূটনৈতিক ভাবে বাংলােদশকে বিষয়টা আলোচনায় রাখতে হবে।
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ঠিক কবে নাগাদ শুরু হবে সেটি পরিস্কার না করলেও রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন মেঘনায় ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠক শেষে দেশটির স্থায়ী পররাষ্ট্র সচিব ইউ মিন্ট থো জানান, আমরা খুব ফলপ্রসূ আলোচনা করেছি।
রোহিঙ্গাদের সচেতন করার বিষয়টি এতে উঠে এসেছে। এতে ঢাকার পররাষ্ট্র সচিব এম শহীদুল হকের বক্তব্যও ছিলো একই রকম।
প্রত্যাবাসন চুক্তি অনুযায়ী গত ২৩ জানুয়ারী থেকে প্রতিদিন গড়ে ৩০০ এবং সপ্তাহে ১৫০০ রোহিঙ্গা ফেরত নেওয়ার কথা ছিলো মিয়নমারের। তিন মাস পর পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে সেটি বড়ানোর কথা থাকলেও কোনো রোহিঙ্গাকে ফেরত পঠাতে পারেনি বাংলাদেশ। চুক্তি অনুযায়ী দুই বছরের মধ্যেই প্রত্যাবাসন শেষ হওয়ার কথা ছিলো।