গভীর মরুভূমিতে লোকচক্ষুর আড়ালে ইরান উন্নত প্রযুক্তির ক্ষেপণাস্ত্র বানাচ্ছে বলে দাবি করেছে একদল মার্কিন অস্ত্র গবেষক।
তাদের দাবি, রাতের আঁধারে তেহরান উন্নত রকেট ইঞ্জিন ও রকেটের উন্নত জ্বালানি তৈরির চেষ্টা করছে। এক্ষেত্রে দেশটি সম্ভবত মাঝারি পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র বা উন্নত মহাকাশ গবেষণার কাজ করছে বলে মনে করছেন ওই অস্ত্র বিশেষজ্ঞেরা।
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী দৈনিক নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১১ সালে ইরানের দূরপাল্লার একটি ক্ষেপণাস্ত্র নির্মাণ কেন্দ্রে বড় ধরনের এক বিস্ফোরণে ক্ষেপণাস্ত্র বিজ্ঞানী জেনারেল হাসান তেহরানি মোকাদ্দাম নিহত হন।
এ ঘটনার পর দেশটি দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি বাদ দেয়। ইরানি নেতারাও বলেন, তারা আর দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র বানাতে চান না। তবে ক্যালিফোর্নিয়াভিত্তিক একদল অস্ত্র গবেষক সম্প্রতি এমন কিছু চিহ্ন ও প্রমাণ খুঁজে পেয়েছেন যার সারমর্ম হচ্ছে, মৃত্যুর কিছুদিন আগেও বিজ্ঞানী হাসান মোকাদ্দাম ইরানের মরুভূমির গভীরে গোপনে আরও একটি ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষাগার দেখভাল করতেন। মার্কিন গবেষকদের মতে, সেই ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষাগার আজও চালু রয়েছে।
অস্ত্র গবেষকদের দাবি, স্যাটেলাইটে পাওয়া পরীক্ষাগারের স্থিরচিত্র বিশ্লেষণ করে তারা দেখতে পেয়েছেন, উন্নত ধরনের রকেট ইঞ্জিন ও রকেটের জ্বালানি তৈরির জন্য কাজ চলছে ওই পরীক্ষাগারে।
তবে এটা মাঝারি পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র বা উন্নত মহাকাশ গবেষণার জন্যও হতে পারে বলে জানিয়েছেন তারা। সিনথেটিক এপারচার রাডার হিসেবে পরিচিত নতুন ধরনের স্যাটেলাইট স্থিরচিত্র ব্যবহার করে মার্কিন অস্ত্র গবেষকেরা বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছেন।
নিউইয়র্ক টাইমস বলেছে, ব্যালাস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষাগার এবং পরমাণু ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ ব্যবস্থা কোনো ভবন বা মাটির নিচে লুকিয়ে করা যায়। তবে উন্নত ক্ষেপণাস্ত্র এর ব্যতিক্রম।
এগুলো বড় কিছু স্ট্যান্ডের সঙ্গে বেঁধে উৎক্ষেপণ করতে হয় এবং কঠিন কাজটি অবশ্যই বাইরে উন্মুক্ত স্থানে করতে হয়। এক্ষেত্রে উৎক্ষেপণের সময় মাটিতে চিহ্ন থেকে যায়। একইভাবে ইরানের শাহরুদ মরুভূমিতে ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার চিহ্ন পাওয়া গেছে। চিহ্নগুলো সাম্প্রতিক।
একটি ২০১৬ সালের আরেকটি ২০১৭ সালের জুনের। এছাড়া ক্ষেপণাস্ত্র বানানোর অন্যান্য চিহ্নও পাওয়া গেছে বলে দাবি করেছেন ওই গবেষকেরা।