আর্জেন্টিনা ফুটবল দলের আপত্তির কারণে ইসরাইলের বিপক্ষে প্রীতি ফুটবল ম্যাচটি বাতিল করা হয়েছে। আগামী ৯ জুন জেরুজালেমের টেডি স্টেডিয়ামে ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল।
মঙ্গলবার দেশটির গণমাধ্যম ওলি এ খবর জানায়। এছাড়াও ফিলিস্তিনি একটি সামাজিক সংগঠন টুইট বার্তায় এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
আর্জেন্টিনার ক্রীড়া সংস্থার ওয়েবসাইট মিনুতুনোতে জানানো হয়, জেরুজালেমে আগামী শনিবারের নির্ধারিত ম্যাচটি বাতিল করা হয়েছে। সহিংসতা বৃদ্ধি সেইসাথে দলের অধিনায়ক লিওনেল মেসিকে হুমকি ও সমালোচনার শিকার হবার আশঙ্কায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এদিকে মঙ্গলবার বার্সেলোনায় আর্জেন্টিনার প্রশিক্ষণ ক্যাম্পের সামনে আর্জেন্টিনার জার্সিতে রক্ত লাগিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করা হয়।
দলটির কোচ জর্জ সাম্পাওলি এখন বার্সেলোনায় একটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলাতে পারেন।
আর্জেন্টিনা ফুটবল এসোসিয়েশন জানায়, তারা পরিস্থিতি বিবেচনায় প্রীতি ম্যাচটি বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এদিকে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এ বিষয়ে আর্জেন্টাইন প্রধানমন্ত্রীর সাথে কথা বলবেন বলে জানিয়েছে ইসরাইলি সংবাদমাধ্যম।
তবে গত মাসের শেষের দিকে ফিলিস্তিনি ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের (পিএফএ) সভাপতি জিবরিল রাজৌব প্রীতি ম্যাচটি বাতিল করার আহ্বান জানান।
তিনি আর্জেন্টিনার ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন, দক্ষিণ আমেরিকা ফুটবল কনফেডারেশন ও বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা’র কাছে পাঠানো এক চিঠিতে বলেন, খেলাকে রাজনীতিকরণ করা হচ্ছে।
চিঠিতে জেরুজালেমের টেডি স্টেডিয়ামকে ইসরায়েলের বিপক্ষে আর্জেন্টিনার প্রীতি ফুটবল ম্যাচের ভেন্যু করার প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন।
টেডি স্টেডিয়ামটি যে ভূমিতে নির্মাণ করা হয়েছে একসময় সেখানে একটি ফিলিস্তিনি গ্রাম ছিল। ১৯৪৮ সালে ইসরাইল গ্রামটি দখল করে ধ্বংস করে দেয়।
সেইসাথে গত ৩০ মার্চ থেকে বিক্ষোভে ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ইসরাইলের হামলাকালীন দেশটির সাথে আর্জেন্টিনার ফুটবল দলের প্রীতি ম্যাচকে অনেক ফিলিস্তিনি সমর্থক মেনে নিতে পারেনি।
চিঠিতে রাজৌব লিখেছেন, দখলদার ইসরায়েল খেলার সর্বজনীন মূল্যবোধ ও নৈতিকতা লঙ্ঘন করছে। তারা একই আর্জেন্টিনার জনগণকে বিপথে পরিচালিত করছে অখণ্ড জেরুজালেমকে ইহুদি মানুষের শহর দাবি করে।
উল্লেখ্য, গত বছরের ৬ ডিসেম্বর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জেরুজালেমকে ইসরাইলের একক রাজধানীর স্বীকৃতি দেন। বিশ্বজুড়ে নিন্দা আর তুমুল প্রতিবাদের মধ্যেও দূতাবাস স্থানান্তরের সিদ্ধান্তে অনড় থাকে যুক্তরাষ্ট্র। ফিলিস্তিনিদের ব্যাপক বিক্ষোভের মধ্যেই ১৪ মে জেরুজালেমে দূতাবাস স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করে যুক্তরাষ্ট্র। ওই দিন ইসরায়েলি গুলিতে নিহত হন অন্তত ৬০ জন ফিলিস্তিনি।