কলকাতায় জমে উঠেছে ঈদ বাজার। পোষাক আর পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে হরেক রকম জুতা, চুড়ি ও ব্যাগের বাজার এবারও জমজমাট।
কলকাতার ঐতিহাসিক নিউমার্কেটের পাশাপাশি ধর্মতলা, গড়িয়াহাট, শিয়ালদহ থেকে রাজাবাজার, বেলগাছিয়া, পার্কসার্কাস বা খিদিরপুর সর্বত্রই স্থানিয়দের সাথে পাল্লা দিয়ে বাংলাদেশি ক্রেতাদের পদচারনায় জমজমাট ঈদের বাজার।
তবে ঈদ এগিয়ে আসার সাথে সাথে মার্কেটগুলোতে কমছে বাংলাদেশিদের সংখ্যা, এমনটাই জানাচ্ছেন বিক্রেতারা।
কলকাতার নিউ মার্কেট পশ্চিমবঙ্গের সবচেয়ে বড় খুচরো পোষাক বেচাকেনার এই স্থানটি রমজান এলেই জমজমাট হয়ে ওঠে। সম্প্রতি কয়েকবছর যাবৎ ভারতীয় ভিসার সহজলভ্যতার জন্য মানুষের ভিড় এত বেড়ে যায় যেন অনেকটা স্রোতের মতো।
নিউমার্কেট ব্যাবস্যায়ি সমিতির হিসাব বলছে, মানুষের এই স্রোতের আশি শতাংশই বাংলাদেশি ক্রেতা। ব্যবস্যয়ি সমিতির নেতা কাজি ইমরান জানাচ্ছেন প্রতিদিন গড়ে ২০ হাজার বাংলাদেশি ক্রেতার সমাগম হয় এখানে। রমজানের আগে যে সংখ্যা ছিলো ২৫হাজারের বেশি। এর বাইরে নতুন প্রজন্মের বাংলাদেশি ক্রেতাদের একটা বড় অংশ ট্রাডিশনাল এসব বিপনি গুলোর বাইরেও ঈদের কেনাকাটায় ভিড় জমাচ্ছে- প্যান্টালুনস, ওয়েস্টসাইড, বিগবাজার, রিলায়েন্স ট্রেন্ড, বাজার কলকাতা, সিটি মারট, বিশাল মার্কেট, সাউথ সিটির মত শপিংমলে।
এবারও যার ব্যতিক্রম হয়নি। অন্যবারের তুলনায় ব্যাপক হারে এসব শপিং সেন্টারে ভিড় বেড়েছে বাংলাদেশি ক্রেতাদের।
বাংলাদেশি ক্রেতাদের বেশরভাগই রমজানের আগেই নিউমার্কেটসহ এসব এলাকা থেকে ঈদের বাজার সেরে যান। এরপরও অনেকেই ভ্রমন, চিকিৎসা, ব্যবসাসহ নানা কাজে কলকাতায় যান। সেই কাজের ফাঁকেও শেষ মুহূর্তে পরিবার পরিজনদের জন্য ঈদের কেনাকাটায় ব্যস্ত হয়ে পড়েন।
ঢাকার মিরপুরের বাসিন্দা সুলতানা জিমি জানান, ভ্যাপসা গরম নিয়ে হাজারো অভিযোগ থাকলেও কলকাতার ব্যাবস্যায়িদের পরিষেবা নিত্য নতুন কালেকশন আর বাংলাদেশের বাজারের সাথে সাথে দামের বিস্তর ফারাকের কারনেই কলকাতায় ঈদের বাজার করার কারণ।
যশোরের তাস্কিল শামিম জানান, ভালো পন্য আর দাম এই দুই কারনেই প্রতিবছরেই কলকাতায় ঈদের বাজার সারেন তিনি।
তবে কাপড়ে জিএসটি (গুডস সারভিস ট্যাক্স) বাড়িয়ে দেওয়ায় জামা কাপড়ের দাম বেড়েছে তবে তা ঢাকার তুলনায় অনেকটাই সহনিয় ও পকেট ফ্রেন্ডলি বলছেন ঢাকার রোডের বাসিন্দা নিপা আক্তার।
আর বিক্রেতারা বলছেন, বাংলাদেশি ক্রেতারা কলকাতায় এলে দামের পরোয়া করেনা। ভালো আর নতুন পন্য দেখলেই কিনছে। গত কয়েকবারের তুলনায় এবার বেশ ভালো ঈদের বাজার।
কোন ধরনের পোশাকগুলো বেশি কিনছেন? এমন প্রশ্নে কলকাতার প্রসিদ্ধ বিপনি মিলনের কর্ণধার প্রসেনজিত রায়চৌধুরি জানান, এবারের মেয়েদের ঈদের গাউন, প্লাজো ও সারারা, গারারা, বেশি চলছে।
ক্রেতাদের জন্য ১০শতাংশ ছাড় দিচ্ছে তারা। আর ছেলেরা মজে আছে ট্রাডিশনাল কুর্তা আর পাঞ্জাবিতেই।
নিউমার্কেটের সুলতান বিপনির কর্ণধার বাবলু আবেদিন জানান, বাংলাদেশি ক্রেতাদের সমাগম থাকায় ঈদের ব্যবসা বেশ ভালোই চলছে। বাংলাদেশি ক্রেতাদের মধ্যে পাঞ্জাবি আর কুর্তার চাহিদা বরাববের তবে খান স্যুটের চাহিদা এবার বেড়েছে বেশ কয়েকগুন। তবে পাইকারি বিক্রেতা হওয়ায় পন্যের উপরে ছাড় দেয়না তার প্রতিষ্ঠান।
নিউইয়র্কমেইল/পশ্চিমবঙ্গ/৯ জুন ২০১৮/শুভজিৎ/এইচএম