খাবার নষ্ট করার তালিকায় বিশ্বে শীর্ষে রয়েছে আরব বিশ্বের দেশ সৌদি আরব। দেশটির পরিবেশ, পানি ও কৃষি মন্ত্রণালয় এক প্রতিবেদন থেকে এটি জানা গেছে।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উৎপাদিত খাদ্যের প্রায় ৩০ শতাংশ নষ্ট হয়, যার মূল্য বছরে প্রায় ৪৯ বিলিয়ন রিয়াল। একজন সৌদি নাগরিক প্রতি বছর গড়ে ২৫০ কেজি খাবার নষ্ট করে। যেখানে বৈশ্বিকভাবে একজন ব্যক্তি গড়ে ১১৫ কেজি খাবার নষ্ট করে।
ডিনার পার্টি, বিয়ের অনুষ্ঠান, রেস্টুরেন্ট ও হোটেল বুফেতে অধিকাংশ খাবার নষ্ট হয়। বিশ্বে খাদ্যশস্য ভোগের দিক দিয়েও এগিয়ে সৌদিরা। যেখানে বিশ্বে একজন মানুষ বছরে গড়ে ১৪৫ কেজি খাবার গ্রহণ করে সেখানে সৌদিদের এই পরিমাণটা ১৫৮ কেজি।
জানা গেছে, চলতি মাসের শেষদিকে সৌদির শুরা কাউন্সিল খাবার নষ্ট বন্ধের একটি আইনের প্রস্তাবের বিষয়ে পর্যালোচনা করবেন।
ওই প্রস্তাবিত আইনে বলা হয়েছে, যেসব ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান খাবার নষ্ট করবেন তাদের জরিমানা করা হবে। যেমন কোনও ব্যক্তি যদি রেস্টুরেন্টে খাবার শেষ না করে উঠে যায়, তাহলে তাকে জরিমানা দিতে হবে। বর্তমানে খাবার নষ্টের জন্য কোনও ব্যক্তিকে জরিমানা করার আইন নেই।
শুরা কাউন্সিলের সোশ্যাল অ্যাফেয়ার্স কমিটি খাবার নষ্ট বন্ধে একটি ন্যাশনাল সেন্টার প্রতিষ্ঠারও প্রস্তাব করেছে, যেটি এ বিষয়ে নির্দেশনা ও সচেতন করতে প্রচারণা চালাবে।
মক্কায় সৌদি ফুডব্যাংক ইতামের সিইও আব্দুল্লাহ আল দারবাহ বলেন, খাবার নষ্টের অন্যতম কিছু কারণ হচ্ছে এটি নিয়ে সমাজে সচেতনতার অভাব, ডিনারে আয়োজক ব্যক্তিদের দেখানোর মানসিকতা এবং অনেক রেস্টুরেন্ট ও হোটেলে খাবার ব্যবস্থাপনা সিস্টেম খুব দুর্বল। খাবার নষ্ট করা সীমিত রাখতে এখন আইনও আছে।
ইতামকে দেশটির প্রথম ফুডব্যাংক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তারা উচ্ছিষ্ট খাবার স্বাস্থ্যকর পন্থায় বা রিসাইকেল করে ৪৮ ঘণ্টার নোটিশে ব্যক্তি ও সংস্থাকে খাবার সরবরাহ করে থাকে।
সংস্থাটি বলছে, রমজান মাস শুরু হওয়ার পর তাদের ৩৬০ জন স্বেচ্ছাসেবীর মাধ্যমে দরিদ্র পরিবারগুলোকে ১ কোটি ৭ লাখ ৪০ হাজার মিল সরবরাহ করছে। আর পুরো বছরজুড়ে তারা গড়ে প্রতিদিন ৯ হাজার মিল বাঁচিয়েছে।
এদিকে সৌদি আরবের প্রায় ৫৯ দশমিক ৪ ভাগ লোক অতিরিক্ত ও স্থূলতার সমস্যায় ভুগছেন। এছাড়া ২৩ দশমিক ৯ ভাগ লোকের ডায়াবেটিস রয়েছে। আর ৪০ দশমিক ৫ ভাগ মানুষ উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন।