logo
আপডেট : 12 June, 2018 13:34
দু’দেশের মধ্যে নতুন সম্পর্কের সূচনা
সিঙ্গাপুরে ট্রাম্প-কিম ঐতিহাসিক বৈঠক

সিঙ্গাপুরে ট্রাম্প-কিম ঐতিহাসিক বৈঠক

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও উত্তর কোরিয়ার প্রধান নেতা কিম জং উন

মেইল রিপোর্ট :

সকল জল্পনা-কল্পনা ও উত্তেজনার অবসান ঘটিয়ে সিঙ্গাপুরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও উত্তর কোরিয়ার প্রধান নেতা কিম জং উন এর মধ্যে ঐতিহাসিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিশ্ব ইতিহাসে সূচনা হল নতুন এক অধ্যায়ের। সিঙ্গাপুরের সেন্তোসা দ্বীপের ক্যাপেলায় হোটেলে স্থানীয় সময় মঙ্গলবার সকাল ৯টায় এই বৈঠক শুরু হয়। বৈঠক শেষে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, আমাদের মধ্যে দারুণ সম্পর্কের সূচনা হয়েছে। খবর বিবিসি, রয়টার্স ও আল জাজিরার।

প্রথমেই দুই দেশের পতাকার সামনে দাঁড়িয়ে হাত মেলান ট্রাম্প ও কিম। ১২ সেকেন্ড ধরে হ্যান্ডশেক করেন তারা। বৈঠকের সময় তাদের সঙ্গে শুধুমাত্র একজন দোভাষী ছিলেন। বৈঠকের আগে দুই নেতাই হাসিমুখে হাত মেলান। বৈঠক থেকে বের হয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, খুবই ভালো আলোচনা হয়েছে। আমাদের মধ্যে এখন দারুণ সম্পর্ক।

৩৫ মিনিট ধরে চলা একান্ত বৈঠকের পর দ্বিপাক্ষিক বৈঠক শুরু হয়। দুই দেশের কর্মকর্তারা দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে অংশ নিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে অংশ নিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও, হোয়াইট হাউসের চিফ অব স্টাফ জন কেলি ও জাতীয় নিরাপত্তা পরামর্শক জন বোল্টন। 

বৈঠক শুরুর আগে ট্রাম্প বলেন, ‘আমি মনে করি এ বৈঠক সফল হবে এবং আমাদের মধ্যে নতুন সম্পর্ক তৈরি হবে। এতে কোনো সন্দেহ নাই।’ এদিকে কিম বলেন, ‘এই বৈঠকে বসা আমাদের জন্য সহজ ছিল না। অনেক বাধা অতিক্রম করে শেষ পর্যন্ত আমরা বৈঠকে বসতে পেরেছি।’

উত্তর কোরিয়ার পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ বিষয়ে বহু প্রতীক্ষিত এ ঐতিহাসিক বৈঠক উপলক্ষে সিঙ্গাপুরে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। বৈঠকের মূল বিষয়- যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে উত্তর কোরিয়ার পরমাণু অস্ত্র সংবরণ এবং উত্তর কোরিয়ার পক্ষ থেকে নিজেদের পূর্ণ নিরাপত্তা।

এই বৈঠককে শান্তির লক্ষ্যে 'একটি সুযোগ' হিসেবে অভিহিত করেছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম থেকে আশা করা হয়েছে, এর মাধ্যমে উত্তর কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে নতুন সম্পর্কের সূচনা হবে। যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বৈঠক ইতিবাচক হলে উত্তর কোরিয়াকে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে অভূতপূর্ব নিরাপত্তা দেওয়া হবে।

৩০ একর জায়গার ওপর নির্মিত ক্যাপেলা হোটেলটি মূলত ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক আমলের ভবনেই গড়ে উঠেছে। এই ভবনগুলো সংস্কার করে বানানো হয়েছে হোটেলটি। সেখানে এক সময় ছিল ব্রিটিশ সেনাদের অফিসার্স মেস। মোট ১১২টি রুম ও কয়েকটি ভিলা রয়েছে হোটেলটিতে। 

সেন্তোসা দ্বীপটিকে বৈঠকের ভেন্যু হিসেবে বাছাই করার সবচেয়ে বড় কারণ নিরাপত্তা। সিঙ্গাপুরের মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন দ্বীপটিতে চারদিক থেকে নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা অনেকটাই সহজ।

এখন অত্যন্ত চকচকে আর আলো ঝলমল একটি জায়গা হলেও সেন্তোসা দ্বীপের রয়েছে অন্ধকার এক অতীত। ইতিহাসের এক কালো অধ্যায় রচিত হয়েছে এখানে। সে অধ্যায়ের পাতাজুড়ে হত্যা আর রক্তপাতের কাহিনী।