মেসিডোনিয়া নামটি আসলে কার? ১৯৯১ সালে স্বাধীন হওয়ার পর থেকে মেসিডোনিয়ার সঙ্গে গ্রিসের নাম নিয়ে বিবাদ চলছিল। দীর্ঘ ২৭ বছরের বিতর্কের অবসান ঘটিয়ে অবশেষে ঐতিহাসিক সমঝোতায় পৌঁছেছে দুটি দেশ।
সাবেক যুগোস্লাভিয়ার দেশটির নাম বদলে রিপাবলিক অব নর্থ মেসিডোনিয়া বা উত্তর মেসিডোনিয়া হচ্ছে।
এখন থেকে গ্রিসের উত্তরের প্রতিবেশী মেসিডোনিয়ার নাম হবে ‘উত্তর মেসিডোনিয়া’।
মেসিডোনিয়ার প্রধানমন্ত্রী জোরান জায়েভ বলেন, ‘পেছনে ফেরার কোনো উপায় নেই। আমাদের লক্ষ্য ছিল সুনির্দিষ্ট ও সঠিক নাম, যা হবে সম্মানজনক ও ভৌগোলিকভাবে মানানসই।’
জায়েভ বলেন, এখন থেকে তাঁর দেশের দাপ্তরিক নাম হবে ‘গণপ্রজাতন্ত্রী উত্তর মেসিডোনিয়া।’
যখন যুগোস্লাভিয়া ভেঙে যায় তখন একটি অংশ নিজেদের নাম রাখে মেসিডোনিয়া। কিন্তু এর দক্ষিণের প্রতিবেশী দেশ গ্রিস তাতে আপত্তি জানায়। কারণ, গ্রিসেও মেসিডোনিয়া নামের একটি অঞ্চল রয়েছে। দুটি দেশের পক্ষ থেকেই মেসিডোনিয়া নামটি তাদের বলে দাবি করা হয়। গ্রিসের উত্তরাঞ্চলীয় একটি রাজ্যের নাম মেসিডোনিয়া। আবার দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় প্রতিবেশীর নামও মেসিডোনিয়া। গ্রিকদের দাবি, মেসিডোনিয়া নামটি শুধুই তাদের। এ নামে অন্য কোনো দেশ হতে পারে না।
গ্রিসের প্রধানমন্ত্রী আলেক্সিস সিপ্রাস বলেছেন, ‘আমাদের চুক্তি হয়েছে। গ্রিসের পক্ষ থেকে যেসব শর্ত দেওয়া হয়েছিল, সেগুলো সব পূরণ করা হয়েছে।’
এর আগে নাম নিয়ে বিবাদের জেরে মেসিডোনিয়ার ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ন্যাটোর সদস্য হওয়ার ক্ষেত্রে ভেটো দিয়ে আসছে গ্রিস।
বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, এ চুক্তির ফলে পশ্চিম বলকান এলাকায় শান্তি ও স্থিতিশীলতা তৈরি হবে। ন্যাটো জোটে মেসিডোনিয়ার যুক্ত হওয়ার পথ সুগম হবে।
জায়েভ জানিয়েছেন, এই নাম পরিবর্তনের মাধ্যমে তার দেশের ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ন্যাটোর সদস্য পদ পাওয়ার পথ সুগম হলো। এর আগে গ্রিসের আপত্তির কারণে মেসিডোনিয়ার জন্য এই সুযোগ বন্ধ ছিল।
গত ফেব্রুয়ারি মাসে মেসিডোনিয়া গ্রিসের নাম বলে ১ লাখ ৪০ হাজার মানুষ গ্রিসে বিক্ষোভ করেন। গত সপ্তাহে নাম পরিবর্তনের বিষয়টি নিয়ে দুই দেশেই বিক্ষোভ হয়।