logo
আপডেট : 20 June, 2018 01:32
সামরিক মহড়া স্থগিতের ঘোষণা কার্যকরে তৎপর ট্রাম্প প্রশাসন
শিগগিরই দ. কোরিয়া থেকে সেনা সরাবে যুক্তরাষ্ট্র
মেইল রিপোর্ট

শিগগিরই দ. কোরিয়া থেকে সেনা সরাবে যুক্তরাষ্ট্র

শিগগিরই দক্ষিণ কোরিয়া থেকে সেনাঘাঁটি উঠিয়ে আনবে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন সামরিক খাতের অতিরিক্ত খরচ বাঁচাতেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। বুধবার রাতে ফক্স নিউজকে দেয়া এক ঘরোয়া সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘শিগগিরই দক্ষিণ কোরিয়া থেকে মার্কিন সেনা ঘাঁটি প্রত্যাহার করা হবে। যত দ্রুত সম্ভব এটি আমরা বাস্তবায়ন করব। কারণ এতে অনেক খরচ। কাঁড়ি কাঁড়ি ডলার গুনতে হয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘দক্ষিণ কোরিয়া থেকে সেনা সরিয়ে আনার বিষয়টি উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের সঙ্গে আলোচনার কোনো অংশ ছিল না। আলোচনার টেবিলেও ওটা তোলা হয়নি। আমি নিজেই চাই সেনারা কোরীয় উপদ্বীপ থেকে ফিরে আসুক।’

বৈঠকে দুই দেশের সম্পর্কের অগ্রগতি সম্পর্কে ট্রাম্প বলেন, আমি মনে করি আমার আর কিমের মধ্যে একটা দারুণ বোঝাবুঝি হয়েছে। আমরা সহজেই একে অপরের মন বুঝি। এর পরই তিনি বলেন, আমি নিশ্চিত কিম এটা পছন্দ করতেন। কিন্তু আমি কখনই বিষয়টি আলোচনায় তুলিনি। তবে বিশেষজ্ঞদের ধারণা যুক্তরাষ্ট্রের জনগণকে শান্ত করতেই এমন ছলচাতুরী করছেন ট্রাম্প। বাস্তবে কোরিয়ার মাটি থেকে একটা সেনাও ফিরিয়ে আনবে না ট্রাম্প প্রশাসন। দক্ষিণ কোরিয়ায় সাড়ে ২৮ হাজার সেনা রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের।

উত্তর কোরিয়া দীর্ঘদিন থেকে এসব সেনা ফিরিয়ে নেয়ার দাবি জানিয়ে আসছে। কিমের সঙ্গে গত মঙ্গলবার বৈঠকের পর করা এক সংবাদ সম্মেলনেও কোরীয় উপদ্বীপ থেকে মার্কিন সেনা ফিরিয়ে নেয়ার কথা বলেছিলেন ট্রাম্প। 

ইতিমধ্যে আগস্টে অনুষ্ঠিতব্য সামরিক মহড়া স্থগিতের পরিকল্পনা করছে যুক্তরাষ্ট্র। হোয়াইট হাউসের প্রভাবশালী কয়েক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে সিএনএন জানিয়েছে, বৃহস্পতিবারই ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ সংক্রান্ত আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসার কথা রয়েছে।

আগস্টে উলচি ফ্রিডম গার্ডিয়ান নামের সামরিক মহড়াটি করার দিনক্ষণ আগেই নির্ধারণ করে রাখা হয়েছিল। এ নিয়ে কয়েকটি দেশের সামরিক বাহিনীর সঙ্গে চূড়ান্ত পর্যায়ের পরিকল্পনা চলছিল। ২০১৭ সালে বার্ষিক মহড়ায় সাড়ে ১৭ হাজার মার্কিন সেনা অংশ নিয়েছিল। এর মধ্যে ৩ হাজার সেনা দক্ষিণ কোরিয়ার বাইরে থেকে এসেছিল। অতীতে অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, কলম্বিয়া, ডেনমার্ক, নিউ জিল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস ও যুক্তরাজ্য এসব মহড়ায় অংশ নিয়েছিল।

মঙ্গলবার সিঙ্গাপুরে উ. কোরীয় নেতা কিমের সঙ্গে সমঝোতার পর কোরীয় উপদ্বীপে ‘যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা’ বন্ধের ঘোষণা দেন ট্রাম্প। ট্রাম্পের এই ঘোষণায় এশীয় মিত্রদের মধ্যে উদ্বেগের জন্ম দেয়। তবে পেন্টাগনসহ প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের আশ্বস্ত করা হয়, ওয়াশিংটন মিত্রদেরকে দেয়া নিরাপত্তা প্রতিশ্র“তি রক্ষার প্রশ্নে অটল। 

বুধবার বিবিসিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে পেন্টাগন মুখপাত্র জানান, ‘আমাদের জোট এখনও অটল। আমরা ওই অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে চাই।’ কেউ বলছেন এই সিদ্ধান্তে আদতে লাভ হয়েছে উত্তর কোরিয়ার। আর ট্রাম্পের দাবি, এখনও কিছুই ছেড়ে দেননি তিনি। ডেমোক্র্যাটরা এই ঘোষণাকে নেতিবাচকভাবে নিলেও রিপাবলিকান মহলে এ নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে।