ফিনল্যান্ডের রাজধানী হেলসিনকিতে আগামী ১৬ জুলাই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রাশিয়ান প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মধ্যে প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এই ভেন্যুটি ‘শীতল যুদ্ধ কূটনীতির’ জন্য বিশেষভাবে খ্যাত। দুই নেতা বৈঠকে বসতে সম্মতি দেওয়ার পর ক্রেমলিন এবং হোয়াইট হাউজ একই দিনে স্থান ও সময়ের কথা ঘোষণা করে। এটা হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টনের মস্কো সফরের পর পরই।
পুতিনের সঙ্গে বৈঠকের আগে ট্রাম্প ১১ ও ১২ জুলাই ন্যাটো নেতাদের সঙ্গে বৈঠক এবং ব্রিটেন সফর করবেন। এছাড়া ১৫ জুলাই পুতিন নিজ দেশ আয়োজিত বিশ্বকাপের সমাপনী অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন।
আনুষ্ঠানিক এই বৈঠকের আগে তারা বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সম্মেলনের পার্শ্ব আলোচনায় দুই বার মিলিত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ফোনে আলাপ হয়েছে অন্তত আটবার। তারা দু‘জনই পরস্পর সম্পর্কে ইতিবাচক কথা বলেছেন এবং মার্কিন অর্থনীতিকে ট্রাম্প যেভাবে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন তার প্রশংসা করেছেন পুতিন।
তবে পুতিন এবং ট্রাম্পের এই বৈঠক মার্কিন মিত্রদের জন্য বিব্রতকর হতে পারে। এর মধ্যে রয়েছে ব্রিটেন। কারণ ব্রিটেন বরাবরই চেয়েছে পুতিনকে বিচ্ছিন্ন রাখতে। রাশিয়ার প্রতি ট্রাম্পের বন্ধু ভাবাপন্ন মনোভাবে ইউক্রেন বরাবরই শংকিত ছিল।
ন্যাটো মিত্রদের প্রতি ট্রাম্পের অঙ্গীকার নিয়ে যেসব সমালোচকরা প্রশ্ন তোলেন তারা কানাডা এবং জার্মানির সঙ্গে বাণিজ্য নীতি নিয়ে ট্রাম্পের বিরোধের ব্যাপারেও তারা উদ্বিগ্ন। তবে হোয়াইট হাউজের মুখপাত্র লিন্ডসে ওয়াল্টার্স গণমাধ্যমকে বলেছেন, ‘প্রেসিডেন্ট এই বৈঠকের বিষয়ে আগ্রহী জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থেই এবং তিনি নিশ্চিত হতে চান রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্কের কতোটা অগ্রগতি হতে পারে।’ তবে তিনি বলেন, এতে উত্তেজনা প্রশমিত হবে।
মস্কো ও ওয়াশিংটনের সম্পর্ক বর্তমানে তলানিতে রয়েছে। শীতল যুদ্ধের শেষ থেকেই এই পরিস্থিতি বিদ্যমান রয়েছে। ক্রিমিয়াকে রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত করার পরই প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা প্রশাসন রাশিয়ার উপর অবরোধ আরোপ করে। ২০১৬ সালের মার্কিন নির্বাচনে রাশিয়া হস্তক্ষেপ করেছে বলে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা অভিযোগ করেছে, যা রাশিয়া বার বারই প্রত্যাখান করেছে। এই বৈঠকের কারণে ফিনল্যান্ড আবারও আলোচনায় এলো।
শীতল যুদ্ধ সম্পর্কিত বেশির ভাগ বৈঠকই এখানে হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ১৯৭৫ সালে লিওনিড ব্রেজনেভ ও জেরাল্ড ফোর্ড, ১৯৯০ সালে মিখাইল গরভাচেভ ও জর্জ এইচ ডব্লিউ বুশ এবং ১৯৯৭ সালে বরিস ইয়েলিৎসিন ও বিল ক্লিন্টনের মধ্যে অনুষ্ঠিত বৈঠক।