logo
আপডেট : 21 July, 2018 11:57
পাকিস্তানে জয়ের কাছাকাছি ইমরান খান
মেইল রিপোর্ট

পাকিস্তানে জয়ের কাছাকাছি ইমরান খান

পাকিস্তান নির্বাচনে ইমরান খান বিজয়ের দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন বলে আপাত দৃষ্টিতে মনে হচ্ছে। অবশ্য এক্ষেত্রে সেনা যোগসাজশের অভিযোগ করছেন প্রতিদ্বন্দ্বীরা। 

পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেটার ইমরান খান দেশটির প্রধান বিরোধী রাজনীতিবিদদের একজন। বিবিসিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, আসন্ন নির্বাচনে তার প্রতিদ্বন্দ্বীরা নিজেদের অতীত কার্যকলাপের জন্যই হারবেন।
 
এ নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে কিনা সে নিয়ে পাকিস্তানে যে উদ্বেগ রয়েছে, তাও নাকচ করে দিয়ে তিনি বলেন, অন্য দলগুলো হঠাৎই বলতে শুরু করেছে যে নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে না। এর কারণ হল, জনমত জরিপে দেখা যাচ্ছে- পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ এগিয়ে রয়েছে।

তিনি বলেন, তারা আসলে ইতিমধ্যে ভাগ্যের লিখন দেখতে পাচ্ছে।

গত পাঁচ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকা নওয়াজ শরিফের পাকিস্তান মুসলিম লীগ দলটির সমর্থক ও দেশটির মানবাধিকারকর্মীরা অভিযোগ করছেন, ইমরান খানের দলকে জেতাতে দেশটির সেনাবাহিনী নির্বাচনের ফল সাজাচ্ছে।

পাকিস্তানে এবারের নির্বাচনকে মূলত এ দুটি দলের মধ্যে প্রতিযোগিতা হবে বলে মনে করা হচ্ছে।

ইমরান খান বলেন, পাকিস্তানের উত্থান মাথায় রেখেই নির্বাচনের প্রচার চালিয়েছে তার দল। পাকিস্তানের নির্বাচনে তিনি দেশটির দুর্নীতি দমনকে তার প্রধান নীতি হিসেবে ব্যবহার করছেন।

তার প্রতিদ্বন্দ্বী নওয়াজ শরিফকে এ মাসের শুরুতে ১০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন দেশটির দুর্নীতি দমন আদালত। ১৩ জুলাই যুক্তরাজ্য থেকে দেশে ফিরেই গ্রেফতার হন নওয়াজ শরিফ ও তার মেয়ে।

ওই দিনই তাদের কারাগারে পাঠানো হয়। গত বছর দুর্নীতির অভিযোগে তিনি ক্ষমতাচ্যুত হন। ইমরান খান বেশ কিছু দিন ধরে যে অভিযোগে তিনবার প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করা নওয়াজ শরিফের বিরুদ্ধে তদন্ত দাবি করছিলেন, সেই অভিযোগেই তার সাজা হল।

ইমরান খান আরও বলেন, দুর্নীতির কারণে একটি দেশের ব্যয়ভার বহন করার অর্থ থাকে না। মানব উন্নয়নের জন্য অর্থ থাকে না। এ সম্পর্কে এই মামলাটি জনসচেতনতা তৈরি করেছে।

তবে রাজনীতির বিশ্লেষকরা বলছেন, নওয়াজ শরিফের কারাদণ্ডের পেছনের কারণ আসলে তিনি ক্ষমতায় থাকাকালীন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রনীতি ও নিরাপত্তা ইস্যুতে সেনাবাহিনীর সঙ্গে বিবাদে জড়িয়েছিলেন।


 
পাকিস্তান রাষ্ট্র জন্মের অর্ধেকটা সময়ই দেশটির সব কিছুর নিয়ন্ত্রক হিসেবে কাজ করেছে সেখানকার সেনাবাহিনী।

নওয়াজ শরিফ দাবি করেছেন, তার দল যাতে জয়ী না হয়, তাই দেশটির সেনাবাহিনী ভোটের আগেই ফল কারচুপির কার্যকলাপে নেমেছে।

তার দলের বেশ কয়েকজন প্রার্থী অভিযোগ তুলেছেন যে, গোয়েন্দা সংস্থাগুলো তাদের দল ত্যাগ করার পরামর্শ দিয়েছে। সাংবাদিকরা দাবি করেছেন, নওয়াজ শরিফ সম্পর্কে কোনো ধরনের সহানুভূতি দেখানো প্রতিবেদন না করতে তাদের প্রতি নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

লাহোরে এক সমাবেশে ইমরান খানের সমর্থকরা বলেছেন, দুর্নীতির দায়ে যে নওয়াজ শরিফের সাজা হয়েছে, সেদিক থেকে জনগণের মনোযোগ সরিয়ে নিতে এসব গল্প ফাঁদছে তার দল।

পাকিস্তানে রাজনীতির একটি সংস্কৃতি হল দলের নেতারা বংশগতভাবে এর সঙ্গে জড়িত। ইমরান খানের সেই ইতিহাস নেই। তার দলের ক্ষমতায় থাকারও কোনো অভিজ্ঞতা নেই।

নিয়মিত দল পরিবর্তন করে এমন কিছু ধনী রাজনীতিবিদের সম্প্রতি দলে জায়গা দিয়ে বেশ সমালোচনার শিকার হয়েছেন ইমরান খান।

কিন্তু এই নেতাদের একটি বিষয় হল যে, দলের হয়েই তারা লড়ুক না কেন তারা বিপুল পরিমাণে ভোটার আকর্ষণ করতে পারেন। ইমরান খান তার এই সিদ্ধান্তের পক্ষে সাফাই গেয়ে বলেন, এরা হলেন এমন নেতা যারা জানে কীভাবে নির্বাচনে প্রতিযোগিতা করতে হয়।

তারা দলের মতাদর্শকে কলুষিত করবেন না বলে ইমরান খান দাবি করছেন।

তবে কোনো দলই নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে না বলেই জনমত জরিপে ইঙ্গিত মিলছে। ইমরান খান স্বীকার করেছেন যে সেক্ষেত্রে তাকে জোট সরকার গঠন করতে হতে পারে।