হঠাৎই ইরানের সামরিক বাহিনীকে ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা ঘোষণা দিয়েছে দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।
ইরানের ইসলামী বিপ্লবী গার্ড বাহিনী ও সেনাবাহিনীকে (আইআরজিসি) অতিরিক্ত ৮০০ যুদ্ধ ট্যাংক সরবরাহ করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রতিরক্ষা উপমন্ত্রী রেজা মোজাফফারিনিয়া।
বুধবার বার্তা সংস্থা তাসনিম নিউজকে তিনি জানান, দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি হবে এসব ট্যাংক। আকস্মিকভাবে ইরানের প্রতিরক্ষা বিভাগের এমন ঘোষণায় নতুন শঙ্কার জš§ দিচ্ছে।
ইরানের উপ-প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, সেনাবাহিনী ও আইআরজিসির চাহিদা পূরণের জন্য ইরান প্রতি বছর ৫০ থেকে ৬০টি ট্যাংক তৈরি করে। গত বছরের ১২ মার্চ ইরান উন্নতমানের কারার ট্যাংকের উদ্বোধন করে। উভচর শ্রেণীর এ ট্যাংককে ইরানি প্রতিরক্ষা খাতের গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্র হিসেবে গণ্য করা হচ্ছে। নতুন অস্ত্র তৈরির পরিকল্পনায় কারার ট্যাংকও সংযুক্ত করা হবে। তবে কতদিনের মধ্যে এসব ট্যাংক তৈরির কাজ শেষ হবে তা বলেননি মোজাফফারিনিয়া। বিশ্বের ছয় জাতির রাষ্ট্রের সঙ্গে স্বাক্ষরিত ইরান পরমাণু চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সরে আসার পর থেকে তেহরান সামরিক সক্ষমতার দিকে নজর দিয়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, পরমাণু চুক্তি বাতিল হয়ে গেলে ইরান আবারও সামরিক অস্ত্রাগার সজ্জায় মনযোগী হবে। তবে তেহরান বলছে, এসব অস্ত্র শুধু দেশের নিরাপত্তা প্রতিরক্ষা ও প্রতিরোধের কাজে ব্যবহৃত হবে। কোনো দেশের ক্ষতির কারণ হবে না।
কারার ট্যাংকের সক্ষমতা বিষয়ে সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী হোসেইন দেহকান বলেছিলেন, ‘গোলাবর্ষণের ক্ষমতা, নিখুঁতভাবে গোলা নিক্ষেপ ও চলাচলের ক্ষমতার কারণে এ ট্যাংক বিশ্বের সবচেয়ে উন্নত ট্যাংকগুলোর অন্যতম। এতে রয়েছে উন্নত প্রযুক্তির সমন্বয় ও ট্যাংকগুলো দিনে ও রাতে সমানভাবে কাজ করতে সক্ষম।’
কারার হচ্ছে ইরানের তৈরি প্রথম ট্যাংক, যার পুরোটাই নিজস্ব প্রযুক্তিতে নির্মিত। এতে রয়েছে ইলেক্ট্রো-অপটিক্যাল ফায়ার কন্ট্রোল ব্যবস্থা, লেসার রেঞ্জফাইন্ডার ও ব্যালাস্টিক কম্পিউটার অ্যান্ড অ্যাবিলিটি। এ ট্যাংকের সাহায্যে রাতে ও দিনে একইভাবে অভিযান চালানো যাবে। এছাড়া এসব ট্যাংক গর্ত বা ছোট নালা ডিঙিয়ে চলতে সক্ষম।
কারার ট্যাংকগুলো রাশিয়ার টি-৯০ ট্যাংকের মতোই হুবহু দেখতে। তবে এ প্রকল্পে রাশিয়ার প্রযুক্তি ব্যবহার বা তাদের নকশা অনুসরণের অভিযোগ অস্বীকার করেছে ইরান। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ইরান সামরিক খাতে বিপুল অগ্রগতি লাভ করেছে। ইরানের প্রতিরক্ষা বিভাগের তৈরি নানা ধরনের অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম এরই মধ্যে বিভিন্ন মহড়ায় পরীক্ষা করা হয়েছে।