আন্তর্জাতিক ত্রাণ সহায়তা সংস্থাগুলোতে মহামারীর আকার ধারণ করেছে যৌন হয়রানির ঘটনা।
যৌন হয়রানিতে জড়িত অক্সফাম ও সেভ দ্য চিলড্রেনের মতো বিশ্বের প্রথমসারির ত্রাণ সংস্থাগুলো। জড়িত বিশ্বের সর্বোচ্চ সংস্থা জাতিসংঘের কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও। এসব সংস্থার গার্ড থেকে শুরু করে ড্রাইভার পর্যন্ত, মাঠকর্মী থেকে শুরু করে পরিচালক পর্যন্ত সবার বিরুদ্ধেই অভিযোগ উঠেছে।
ত্রাণ সহায়তার নামে অসহায় নারী ও কিশোরী মেয়েদের ফাঁদে ফেলছে তারা। একদিন, দু’দিন নয়, দুই দশক ধরে ঘটছে এমন নারকীয় ঘটনা। বিচারহীনতা আর দায়মুক্তির সংস্কৃতির কারণে পার পেয়ে যাচ্ছে দুর্বৃত্তরা। যুক্তরাজ্য সরকারের এক প্রতিবেদনে যৌন হয়রানির এই ভয়াবহ তথ্য ফুটে উঠেছে।
‘হাউস অব কমনস ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট কমিটি’র তদন্ত প্রতিবেদনটি মঙ্গলবার প্রকাশ করা হয়।
প্রতিবেদনটিতে আফ্রিকার লাইবেরিয়া, গিনি, সিরিয়া ও সিয়েরালিয়নের মতো দেশগুলোর শরণার্থী শিবিরগুলোতে যৌন নির্যাতনের লোমহর্ষক সব গল্প উঠে এসেছে। যৌন হয়রানির শিকার ১৩ থেকে ১৮ বছরের কিশোরীরা।
হয়রানির শিকার হয়ে যৌন রোগ ও অনাকাক্সিক্ষত গর্ভধারণের শিকার হয়েছে তাদের অনেকেই। হাইতির এক গৃহহীন বালিকা (নাম উল্লেখ করা হয়নি)। ২০১০ সালে মাত্র এক ডলার সহায়তার বিনিময়ে তাকে ধর্ষণ করে যুক্তরাজ্যভিত্তিক বেসরকারি ত্রাণ সহায়তা সংস্থা অক্সফামের এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা।
আরেক কিশোরী জানান, ত্রাণ সহায়তার প্রলোভন দেখিয়ে তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করে এক ত্রাণকর্মী। এতে তিনি গর্ভবতী হয়ে পড়েন।
সংস্থাগুলোর কর্মীদের বিরুদ্ধে এ বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ ওঠার পরিপ্রেক্ষিতে নতুন করে তদন্তের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। প্রায় ছয় মাসের তদন্ত শেষে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বহু বছর ধরে চলা এ ধরনের ঘটনাগুলোর সমাধানে সংস্থাগুলোর পক্ষ থেকে কোনো পদক্ষেপই নেয়া হয়নি।
কমিটি প্রধান এমপি স্টিফেন টুইগ বলেন, কমপক্ষে ১৭ বছরের বিশাল সময় ধরে চলা নানা ব্যর্থতার চিত্র প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছে। সহায়তাকারী সংস্থাগুলো তাদের সুনাম ধরে রাখতে বিভিন্ন সময় ঘটা ঘটনাগুলো ধামাচাপা দেয়ারও চেষ্টা করেছে।
প্রতিবেদনে আরও দেখা যায়, ২০০১ সালে জাতিসংঘসহ অন্যান্য সহায়তাকারী সংস্থার কর্মীরা লাইবেরিয়া, ঘানা, সিরিয়া ও সিয়েরালিয়নের শরণার্থী শিবিরে থাকা ১৩ থেকে ১৮ বছরের মেয়েদের ওপর যৌন নিপীড়ন চালিয়েছে।