কোনোভাবেই সড়কে শৃঙ্খলা ফেরানো যাচ্ছে না। নিরাপদ সড়কের দাবিতে ছাত্র আন্দোলনের পর চলছে পুলিশের ট্রাফিক সপ্তাহ। কিন্তু এর মধ্যেও যানবাহন চলছে বেপরোয়াভাবে।
বেশি যাত্রী তুলতে ও আগে যেতে বাসের রেষারেষিও চলছে। মালিক ও শ্রমিক নেতাদের ঘোষণা মানছেন না অনেক মালিক। ফলে চুক্তিতেই চলছে বেশিরভাগ বাস। পথচারীরাও ফুটওভার ব্রিজ রেখে যে যেভাবে পারছেন সড়ক পার হচ্ছেন।
যদিও পুলিশের তৎপরতা আগের চেয়ে বেড়েছে। শুধু তাই নয়, সড়কে এখনও চলছে লক্কড়ঝক্কড় বাস। অনেক বাসের জানালা, সিগন্যাল লাইট ও আরামদায়ক সিট নেই।
আগের মতোই বাড়তি ভাড়াও আদায় হচ্ছে। সিএনজি অটোরিকশা চালকদের কেউই মিটারে চলেন না, ভাড়া নেয়া হয় ইচ্ছেমতো।
অন্যদিকে সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে চেকপোস্ট বসিয়ে যানবাহনের ফিটনেস সনদ, ড্রাইভিং লাইসেন্স ও রুট পারমিট পরীক্ষা করতে দেখা গেছে পুলিশকে। আগের চেয়ে যানবাহনের বিরুদ্ধে মামলা দেয়ার হার প্রায় দ্বিগুণ বেড়েছে।
রাজধানীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়কে রোববার এ চিত্র দেখা গেছে।
সড়কে শৃঙ্খলা না ফিরলেও পুলিশের তৎপরতা থাকায় গণপরিবহনের সংখ্যা অন্য সময়ের চেয়ে কম। এতে দুর্ভোগে পড়ছেন যাত্রীরা। দীর্ঘ বিরতিতে গাড়ি এলেও যাত্রী ভরপুর থাকায় উঠতে পারছেন না অনেকেই।
ভোগান্তির কথা জানিয়ে আগারগাঁও থেকে উত্তরাগামী যাত্রী আবদুল আলিম বলেন, ভূঁইয়া পরিবহনের বাসে চলাচল করি। রোববার বিকালে দুটি বাস পেলেও ভিড় থাকায় উঠতে পারিনি। পরে বাধ্য হয়ে বিকল্প পথে রওনা হয়েছি।
তিনি বলেন, ভূঁইয়া পরিবহনের অনেক বাসেই আরামদায়ক সিট নেই। প্রায় সব বাসেই অতিরিক্ত আসন বসানো হয়েছে। এটি আইনের লঙ্ঘন হলেও তার কোনো প্রতিকার নেই।
ফার্মগেটে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাইফুল ইসলাম বলেন, সড়কের বিশৃঙ্খলায় কোনো পরিবর্তন নেই। সেই একই ট্রাফিক জ্যাম, কোনো রুলস নেই। যে যেভাবে পারছে চলছে, নিত্যকার সেই অবস্থাই দেখছি। রাস্তায় বাস অনেক কমে গেছে।
গাড়ি ও ড্রাইভারের লাইসেন্স চেক হওয়ার কারণে বাস নেই। ফলে বিপদে পড়েছি আমরা। আজ ভার্সিটিতে আসার সময় বাস পাইনি, ভেঙে ভেঙে আসতে হয়েছে। সাইফুল ইসলাম বলেন, ফার্মগেটে ৫০০ গজের মধ্যে তিনটি ফুটওভারব্রিজ রয়েছে।
তবুও সড়ক আইন লঙ্ঘন করে শত শত মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়েই রাস্তা পার হচ্ছে। এটা কেমন কথা?
সড়কে শৃঙ্খলার বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কালাম দাবি করেন, সড়কে আগের চেয়ে অনেক শৃঙ্খলা ফিরেছে। প্রতিটি বাস টার্মিনালে রেজিস্ট্রেশন ও ফিটনেস চেক করে গাড়ি চলতে দেয়া হচ্ছে।
আমরা সড়কে শৃঙ্খল পরিবেশ দেখতে চাই। ২৯ জুলাই রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে বাসচাপায় দুই কলেজ শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার পর নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনে নামে শিক্ষার্থীরা। পরে সরকারের নানা পদক্ষেপে শিক্ষার্থীরা ক্লাসে ফিরে যায়।