উত্তর কোরিয়ার পরমাণু ও ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি যেন যুক্তরাষ্ট্রের গলার কাঁটা। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এ ‘যন্ত্রণা’ থেকে মুক্ত চাই তাদের। এজন্য চেষ্টা-তদবিরের কোনো কমতি নেই।
সামরিক শক্তি প্রয়োগের হুমকি থেকে শুরু করে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা, কূটনৈতিক বোঝাপড়া, শর্ত প্রদান সবই রয়েছে এর মধ্যে। জুনে দুই পক্ষের শীর্ষ বৈঠকের পর এগুলোর সমান ব্যবহার করে যাচ্ছে ওয়াশিংটন।
তবে কোনোটাই ঠিকমতো কাজ করছে না। গত দুই মাসে পরমাণু নিরস্ত্রীকরণের ব্যাপারে বেশ কয়েকটি প্রস্তাব দিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। এগুলোর সবই প্রত্যাখ্যান করেছে উত্তর কোরিয়া। পিয়ংইয়ং বলছে, আগে যুক্তরাষ্ট্রকে শর্ত মানতে হবে। তাহলেই শর্ত মানবে তারা।
নিউইয়র্ক টাইমস এক প্রতিবেদনে বলেছে, সিঙ্গাপুর বৈঠকের পরই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দাবি করেছিলেন, ‘উত্তর কোরিয়া এখন আর পরমাণু হুমকি নয়। তারা খুব দ্রুতই নিরস্ত্রীকরণ শুরু করবে।
এরপরই নিরস্ত্রীকরণের লক্ষ্যে পিয়ংইয়ংয়ের কাছে পরমাণু অস্ত্রের মজুদ, পরমাণু অস্ত্র উৎপাদন ব্যবস্থা এবং তাদের ক্ষেপণাস্ত্রের ব্যাপারে নির্দিষ্ট লিখিত তথ্য চেয়েছে ওয়াশিংটন। এছাড়া সম্পূর্ণ নিরস্ত্রীকরণের নির্দিষ্ট সময়সীমা ও প্রক্রিয়ার ব্যাপারে দাবি করে আসছে তারা। এসব তথ্য সরবরাহ করার জন্য কিম জং উনের সরকারের ওপর চাপ প্রযোগ অব্যাহত রেখেছে।
একই সঙ্গে পিয়ংইয়ংয়ের ওপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা অব্যাহত রাখার পাশাপাশি অন্যান্য দেশকেও নিষেধাজ্ঞা প্রদানের আহ্বান জানাচ্ছে। কিন্তু এসব শর্ত ও প্রস্তাবে কান দিচ্ছে না পিয়ংইয়ং।
ট্রাম্প প্রশাসনের শীর্ষ কূটনীতিক সূত্রের বরাত দিয়ে সিএনএন বলেছে, এসব শর্তকে ‘গ্যাংস্টার’র মতো অভিহিত করে তা নাকচ করে দিয়েছে পিয়ংইয়ং। সূত্র আরও বলছে, ট্রাম্পের প্রশাসন রকেট গতিতে উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক শুরু করেছিলেন। কিন্তু তা এখন রকেটের গতিতেই পৃথিবীতে আছড়ে পড়েছে।
ট্রাম্প প্রশাসন বলছে, উত্তর কোরিয়া পরমাণু নিরস্ত্রীকরণে পদক্ষেপ না নেয়া পর্যন্ত অবরোধ প্রত্যাহার করা হবে না। আর উত্তর কোরিয়া বলছে, পরমাণু নিরস্ত্রীকরণে তারা অনেক পদক্ষেপ নিয়েছে।
আর কোনো পদক্ষেপ নেয়ার আগে যুক্তরাষ্ট্রকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করতে হবে। কূটনৈতিক সূত্র দাবি করেছে, কিম জং উন বলেছেন, তারা পরমাণু নিরস্ত্রীকরণে আরও পদক্ষেপ নেবেন। তবে তার আগে যুক্তরাষ্ট্র্রকে শান্তি প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে।
এছাড়া তারা অগ্রসর হবেন না। সূত্র বলছে, ১২ জুন ট্রাম্প এবং কিম জং উন বৈঠক করলেও পরমাণু নিরস্ত্রীকরণের কোনো সময়সীমা উল্লেখ করেননি তারা। তাদের মধ্যকার সব অঙ্গীকারই ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়েছে।