আবারও বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছে পশ্চিমবঙ্গে মমতা ব্যানার্জির সরকার। রাজ্যের অষ্টম শ্রেণির পাঠ্য বইয়ে ভারতের কয়েকজন স্বাধীনতা বিপ্লবীকে ‘সন্ত্রাসী’ হিসেবে উল্লেখ করার পর এই বিতর্কের শুরু হয়েছে।
বইয়ে ‘বিপ্লবী সন্ত্রাসবাদ’ শিরোনামের অধ্যায়ে ক্ষুদিরাম বসু, যতীন্দ্রনাথ মুখার্জি এবং প্রফুল্ল চাকীর মতো স্বাধীনতা সংগ্রামীদের ব্যাপারে লেখা ছাপা হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের এ ধরনের ভুলকে ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস বিকৃতি বলে উল্লেখ করেছেন প্রখ্যাত ইতিহাসবিদরা।
তারা বলছেন, বোর্ডের এই ভুল ব্যাখ্যা স্বাধীনতা সংগ্রামীদের ব্যাপারে ব্রিটিশদেরই দৃঢ় অবস্থানের প্রতিফলন।
সুপরিচিত ইতিহাসবিদ অতীশ দাসগুপ্ত বলেন, যারা ক্ষুদিরাম বসু ও প্রফুল্ল চাকীর মতো স্বাধীনতা সংগ্রামীদের দেশবিরোধী হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন তারা কী নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বোসকেও একজন সন্ত্রাসী বলবেন? তারা কেবল তথ্য বিকৃতিই করছেন না, আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামের সমৃদ্ধশালী ঐতিহ্যকেও ক্ষতিগ্রস্ত করছেন।
তবে মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডে সরকারিভাবে নিয়োগ পাওয়া বর্ষীয়ান ইতিহাসবিদরা বলছেন, ওইসময়কার প্রকৃত অবস্থা সম্পর্কে ধারণা দিতে গিয়ে এমনটা করা হয়েছে। এদিকে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঐতিহাসিক গুরুত্ব বিবেচনায় এ ধরনের পরিভাষা ব্যবহারের ক্ষেত্রে কমিটির আরও সতর্ক হওয়া উচিত ছিল।
অন্যদিকে রাজ্য সরকার বলছে, এ ধরনের ইস্যুকে রাজনৈতিক মোড়ক দেয়া হবে না এমন শর্তে যেকোনও অ্যাকাডেমিক আলোচনাকে তারা স্বাগত জানাবে।
এর আগে উচ্চ মাধ্যমিকের ইতিহাসের বই থেকে জার্মান দার্শনিক কার্ল মার্কসের অধ্যায় বাদ দিয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন সরকার।
রাজ্যের উচ্চ মাধ্যমিক সিলেবাস কমিটির ভাষায়, উচ্চ মাধ্যমিকের বইয়ে মার্কস, অ্যাঙ্গেলস এবং বলশেভিক বিপ্লবের মতো অধ্যায়ের পরিবর্তে মহাত্মা গান্ধী, নেলসন ম্যান্ডেলা এবং নারী মুক্তি আন্দোলন থাকা উচিত।