বাংলাদেশে নির্বিচারে গ্রেপ্তার ও আটক করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ।
সংস্থাটির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের সড়কে বিক্ষোভের পর হামলার শিকার হয়ে আহত হওয়ার পর সদ্য সুস্থ হয়েছেন ১৮ বছরের এক শিক্ষার্থী। বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগে ভোগা এই কিশোর অধিকারের কথা বলতে চান। তবে তার ভয়, শুধু নির্বিচারে গ্রেপ্তারেরই নয়, হামলাকারীদের আবারও তাকে চুপ করিয়ে দেয়ার জন্য ফিরে আসারও।
তার মত হাজারো শিক্ষার্থী দুই সহপাঠীর বেপরোয়া বাসের ধাক্কায় মৃত্যুর পর ‘নিরাপদ সড়ক’ এর দাবিতে সড়কে বিক্ষোভে নেমেছিল। নিরাপদ সড়ক ছাড়াও তাদের মুখে ছিল সুশাসন এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার দাবি। ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’ স্লোগানে তারা কাঁপিয়েছিল রাজপথ।
১৮ মিলিয়ন মানুষের শহর ঢাকায় রাস্তা তাদের বিক্ষোভে, আন্দোলনে সরবিত হলেও সরকার শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকে জোরপূর্বকভাবে দমন করেছিল। ব্যবহার করা হয়েছিল টিয়ার গ্যাস এবং রাবার বুলেট। হিউম্যান রাইটস ওয়াচের কাছে হামলার ছবি পাঠায় শিক্ষার্থী, অভিভাবক, শিক্ষক এবং অন্যান্য নাগরিকরা। পাঠানো ছবি এবং ভিডিওতে দেখা যায় শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার চিত্র। যার সঙ্গে জড়িত ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সমর্থকরা।
১৮ বছরের ওই শিক্ষার্থী হিউম্যান রাইটস ওয়াচকে জানান ৩ আগস্ট তিনি বিক্ষোভের ছবি তুলছিলেন এই সময় ছাত্রলীগের কর্মীরা তাকে হামলা করে এবং তার ক্যামেরা ছিনিয়ে নিতে চায়। তিনি জানান, ‘আমাকে স্টিক, পাইপ দিয়ে মারা হচ্ছিল, পুলিশ তা দেখছিল, কিন্তু কিছুই করে নি।’
মানবাধিকার সংস্থাটির ওয়েবসাইটে বলা হয়, হামলাকারীদের সাজা দেয়ার বদলে বাংলাদেশ সরকার সমালোচনা বন্ধ করতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম অ্যাকাউন্টগুলো চিহ্নিত করতে থাকে। নির্বিচারে আটকের সমালোচনা করা অন্তত ২০জনকে গ্রেপ্তার করা হয়, যার মধ্যে রয়েছেন জনপ্রিয় ফটোগ্রাফার এবং অধিকার কর্মী শহিদুল আলম।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ জানায়, এটি বন্ধ করা প্রয়োজন। বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষের উচিত শহিদুল আলমসহ অন্যান্যদের মুক্তি দেয়া। সেই সঙ্গে সহিংসতার বদলে শিশু, শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারী এবং সকলের অধিকার নিশ্চিত করার প্রয়োজন। তরুণ শিক্ষার্থীরা সহ কেউই যেন কথা বলতে গিয়ে গ্রেপ্তার কিংবা নির্যাতনের শিকার হওয়ার ভয়ে ভীত না হয়।