ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) পরিচয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাস থেকে শেখ তাসনিম আফরোজ ইমি নামের এক ছাত্রীকে আটকের ৫ ঘণ্টা পর ছেড়ে দেয়া হয়েছে। সন্ধ্যা ৭টার দিকে তাকে আটক করা হয় এবং রাত ১২টার দিকে ছেড়ে দেয়া হয়।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারের উপকমিশনার (ডিসি) মাসুদুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ফেসবুকে গুজব ছড়ানো সংক্রান্ত বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ইমিকে আটক করা হয়েছিল। পরে মুচলেকা রেখে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়।
এদিকে কোটা সংস্কার ও নিরাপদ সড়ক আন্দোলনে আটক শিক্ষার্থীদের মুক্তি, হামলাকারীদের গ্রেফতারসহ কোটার যৌক্তিক সংস্কারের প্রজ্ঞাপনের দাবিতে ফের আলটিমেটাম দিয়েছেন কোটা আন্দোলনকারীরা।
বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনে (ক্র্যাব) মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের নেতারা ৩১ আগস্টের মধ্যে দাবি মানা না হলে ফের রাজপথে নামার ঘোষণা দেন।
ইমি কোটা আন্দোলনের সক্রিয় কর্মী। তাকে আটকের বিষয়ে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় শামসুন্নাহার হলের সামনে হান্নানের দোকানে চা পান করছিলেন সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের ছাত্রী ইমি। এ সময় ডিবি পরিচয়ে এক নারী ইমির কাছে এসে বলেন, ‘আপনি একটু সামনে আসুন। স্যার আপনার সঙ্গে কথা বলবেন। তিনি ইমিকে পাশে দাঁড়ানো একটি সাদা রঙের মাইক্রোবাসের কাছে নিয়ে যান। এরপর তাকে ওই মাইক্রোবাসে তুলে নেয়া হয়।’ এ সময় নীলক্ষেত পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ সাহেব আলীকেও পাশে দেখা গেছে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান।
আটকের পরপরই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. একেএম গোলাম রাব্বানী বলেন, আমরা বিষয়টি অবহিত আছি। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নেয়া হয়েছে। ইমি কোনো সাইবার অপরাধের সঙ্গে জড়িত কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। রাত সাড়ে ১২টার দিকে তিনি জানান, বিশ্ববিদ্যালয় এবং হল প্রশাসন শাহবাগ থানায় গিয়ে ইমিকে নিয়ে এসেছে।
জানতে চাইলে রাত পৌনে ১০টার দিকে ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার আবদুল বাতেন বলেন, ডিবি আটক বা গ্রেফতার করেনি। সম্ভবত সাইবার ক্রাইম ইউনিট তাকে আটক করেছে। এ বিষয়ে সাইবার ক্রাইম ইউনিটের উপ-কমিশনার (ডিসি) আলীমুজ্জামান এবং অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) নাজমুল ইসলামের সঙ্গে বারবার যোগাযোগ করেও তাৎক্ষণিকভাবে তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। রাত ১২টার দিকে ডিসি আলীমুজ্জামান বলেন, ‘এ বিষয়ে ডিসি মিডিয়া আপডেট জানাবেন।’
ইমি কোটা সংস্কার আন্দোলনে সক্রিয় কর্মী ছিলেন। আন্দোলনে কোটা সংস্কারের পক্ষে বিভিন্ন স্লোগান দিতে দেখা গেছে তাকে। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংস্কৃতিক সংগঠন স্লোগান ’৭১-এর সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় রক্তদাতাদের সংগঠন বাঁধনের সাবেক কার্যকরী পরিষদের সদস্য। তার গ্রামের বাড়ি জামালপুর।