logo
আপডেট : 21 August, 2018 17:20
রাজনীতিবিদরা কে কোথায় ঈদ করবেন
ঢাকা অফিস

রাজনীতিবিদরা কে কোথায় ঈদ করবেন

ঈদ রাজনীতিতে সরগরম দেশ। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ঢেউ অনেকটা রূপ নিয়েছে নির্বাচনী উৎসবে। ভোটের আগে আওয়ামী লীগ সরকারের এটাই শেষ ঈদ। এজন্যই উৎসবকে কাজে লাগাতে ব্যস্ত দলের শীর্ষ নেতারা। 

আওয়ামী লীগ, বিএনপিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সম্ভাব্য প্রার্থীরা আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণের নির্দেশনা না পেলেও তারা প্রস্তুতি এগিয়ে রাখছেন। শুভেচ্ছা বিনিময় করছেন এলাকার মানুষদের সঙ্গে।

মাঠের বিরোধী দল বিএনপি ও সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টিসহ বিভিন্ন দলের অধিকাংশ নেতা নিজের এলাকায় ঈদ করতে করবেন। তাদের পদচারণায় মুখর তৃণমূলের ঈদ রাজনীতি। শুধু তৃণমূল নয়, ঈদঘিরে রাজনীতি জমে উঠেছে রাজধানীসহ বিভাগীয় শহরেও।


আওয়ামী লীগ নেতাদের ঈদ:
আওয়ামী লীগ সরকারের বেশির ভাগ কেন্দ্রীয় নেতা ঈদুল আজহা উদযাপন করতে নিজ নিজ এলাকায় যাচ্ছেন। নির্বাচনী এলাকায় অবস্থান করছেন দলের এমপিরাও। আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজধানী ঢাকায় ঈদ করবেন। দলের অধিকাংশ নেতা ঈদ করবেন নিজ নিজ এলাকায়।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঈদুল আজহা পালন করবেন গণভবনে তার সরকারি বাসভবনে। এদিন সকালে তিনি রাজনীতিবিদ, কূটনীতিক, পেশাজীবীসহ সর্বস্তকরের মানুষের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন।

বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ ভোলায় তার গ্রামের বাড়িতে ঈদ করবেন। প্রতিবারের মতো জনগণের সঙ্গে মিলেমিশে ঈদ করতে গত রোববার তিনি ভোলা গেছেন।

কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী ইতিমধ্যে এলাকা ঘুরে এসেছেন। তার নির্বাচনী এলাকার মানুষ এবং নেতাকর্মীদের সঙ্গে দেখা করেছেন। প্রায় প্রতিটি জনপদে গিয়েছেন। এলাকার এতিমখানায় কোরবানির জন্য পশু কিনে দিয়েছেন।

প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফরুল্লাহ সপ্তাহে অন্তত তিন দিন ফরিদপুরের তার নির্বাচনী এলাকা ভাঙ্গার মানুষদের সঙ্গে কাটান। আসছে ঈদে তিনি এলাকাতেই থাকবেন। এমনটা জানা গেছে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী এবং ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোহাম্মদ নসিম প্রতি বছর কোরবানির ঈদ করেন তার গ্রামের বাড়ি সিরাজগঞ্জের কাজীপুরে। ইতিমধ্যে তিনি এলাকায় চলে গেছেন। গ্রামেই কোরবানি দেবেন। ঈদের দিন নেতাকর্মীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন।

আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আবদুর রাজ্জাক এবার ঈদ নিজ এলাকাতে ঈদে থাকবেন। গত বুধবার তিনি টাঙ্গাইলের নিজ এলাকা গেছেন। যাবেন প্রতিটি ইউনিয়নে। ভিজিএফ কার্ড বিতরণ করছেন।

আওয়ামী লীগের প্রথম যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ পবিত্র হজ পালনে সস্ত্রীক সৌদি আরব অবস্থান করছেন। ঈদে তিনি সেখানেই থাকবেন। তবে যাওয়ার আগে টানা এলাকায় কাটিয়ে গেছেন।

আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ ঈদ করবেন তার গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায়। ঈদের আনন্দ নিজ এলাকার মানুষের সঙ্গে ভাগাভাগি করে পরদিন চট্টগ্রাম শহরে আসবেন।


বিএনপি নেতাদের ঈদ:
বিএনপির সিনিয়র নেতা ও সম্ভাব্য প্রার্থীরা নিজে অথবা প্রতিনিধির মাধ্যমে নির্বাচনী এলাকার গরিব ও দুস্থদের মধ্যে নগদ অর্থ বিতরণ করেছেন। নেতাকর্মীসহ সাধারণ ভোটারদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া কারাগারে ঈদ পালন করেন।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তার নিজ এলাকা ঠাকুরগাঁওয়ে ঈদ করবেন। তিনি মঙ্গলবার ঠাকুরগাঁওয়ে যাবেন এবং ঢাকায় ফিরবেন শুক্রবার।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী গণমাধ্যমকে বলেন, ঈদের দিন বেলা সাড়ে ১১টায় দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে সিনিয়র নেতারা বিএনপির প্রতষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মাজারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। এছাড়া ঈদের দিন বিকালে সিনিয়র নেতারা কারাবন্দি দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করতে যেতে পারেন বলে জানা গেছে। 

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ নেয়াখালীতে, ড. খোন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, লে. জে. (অব.) মাহবুবুর রহমন, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান ঢাকায় ঈদ উদযাপন করবেন বলে জানা গেছে। বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু নিজ এলাকা নোয়াখালীতে ঈদ উদযাপন করবেন।

ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান ও মীর মোহাম্মদ নাসিরউদ্দিন দু’জনই কোরবানি দেবেন চট্টগ্রাম মহানগরের নিজ নিজ বাসায়। কোরবানির পর দুই নেতাই প্রতিবছরের মতো কর্মী-সমর্থকদের জন্য ভোজের আয়োজন করেছেন। ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান ঈদ করবেন নোয়াখালীতে নিজ এলাকায়। বিএনপি ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদ কুমিল্লায়, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বরিশালে, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবীর খোকন নরসিংদীতে, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী লক্ষ্মীপুরে ঈদ করবেন। 

ভাইস চেয়ারম্যান চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ ঈদের দুইদিন পর ফরিদপুর গিয়ে নেতাকর্মীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন। ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু ঢাকায় ঈদ করলেও তার স্ত্রী রুমানা মাহমুদ ঈদ করবেন সিরাজগঞ্জে নেতাকর্মীদের নিয়ে।


২০ দলীয় জোটের শরিক নেতাদের ঈদ: 
২০ দলীয় জোটের শরিক লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এলডিপি সভাপতি কর্নেল (অব.) ড. অলি আহমদ ঢাকায়, কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহম্মদ ইবরাহিম চট্টগ্রামে, ন্যাপের চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গাণি ঢাকায়, মহাসচিব এম গোলাম মোস্তফা ভুইয়া নরসিংদী, ন্যাশনাল পিপলস পার্টি-এনপিপির চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ নড়াইলে ঈদ উদযাপন করবেন বলে জানা গেছে।


জাতীয় পার্টির নেতাদের ঈদ:
ঈদ উদযাপন করার জন্য দলটির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ইতিমধ্যে ছয় দিনের জন্য রংপুরে গেছেন। সেখানেই ঈদ উদযাপন করবেন। জনগণের কাছে গেছেন প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টির নেতারাও।

পার্টির কো-চেয়ারম্যান জিএম কাদের ঈদ উদযাপন করবেন লালমনিরহাটে। মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার পটুয়াখালীর দুমকী উপজেলার আঙ্গারিয়া ইউনিয়নের ঈদ পালন করবেন। আবদুল করিম জামে মসজিদ ঈদগাহে নামাজ পড়বেন।

জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম এমপি ঈদের খুশি দোহার-নবাবগঞ্জের মানুষের সঙ্গে ভাগ করে নেবেন। তিনি নিয়মিতই এলাকার নেতাকর্মী ও সাধারণ ভোটারদের নিচ্ছেন। এলজিআরডি প্রতিমন্ত্রী মশিউর রহমান রাঙ্গা ঈদ পালন করবেন রংপুরে। ঈদের নামাজ পড়বেন রংপুরের আলমদীঘির চর ঈদগাহ মাঠে।

জাতীয় পার্টির অন্য প্রেসিডিয়াম সদস্যদের মধ্যে কাজী ফিরোজ রশীদ পুরান ঢাকার ঈদ পালন করবেন। ধূপখোলা মাঠ ঈদগাহে ঈদের জামাতে অংশ নেবেন। 

জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু ঈদ করবেন চট্টগ্রামে। সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, এসএম ফয়সল চিশতী, আবদুস সবুর আসুদ, সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন ঢাকায় ঈদ করবেন বলে জানা গেছে।