আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আগামী জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার হবে কি হবে না, সে বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়ার এখতিয়ার নির্বাচন কমিশনের। সেটা নির্বাচন কমিশনই ঠিক করবে।
বুধবার বিকালে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ উত্তর ও দক্ষিণ আয়োজিত জাতীয় শোক দিবসের আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের দাবিটি আওয়ামী লীগের নতুন কোনো দাবি নয়। ইলেকশন কমিশনের সঙ্গে সংলাপে আমরা কিন্তু ইভিএম ব্যবহারের দাবি জানিয়েছিলাম এবং আমরা আমাদের দাবিতে এখনো অটল।
গত তিনটি সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের কথা তুলে ধরে বিএনপির উদ্দেশে কাদের আরও বলেন, ইভিএমে এত অবিশ্বাস কেন? একটায় জিতলেন সিলেট? সেখানেও তো ইভিএমে জেতা দিয়েই শুরু।
ইভিএম আজকে বিশ্বস্বীকৃত একটা আধুনিক ভোটিং সিস্টেম দাবি করে তিনি আরও বলেন, ভারতে অনেকগুলো নির্বাচন ইভিএম পদ্ধতিতে হয়েছে এবং উন্নত গণতান্ত্রিক দেশেও এই পদ্ধতি চালু আছে। আপনারা কেন বিরোধিতা করেন? স্বচ্ছ নিরপেক্ষ নির্বাচন যদি চান ইভিএম ব্যবহারে আপত্তি কোথায়?
তবে এ ব্যাপারে ইসির সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে বলে উল্লেখ করে কাদের বলেন, নির্বাচন কমিশন যদি মনে করে যে, ‘এই মুহূর্তে ইভিএমে ভোট করার মতো বাস্তবতা নেই অথবা তারা করতে চান না বা এই সময়ের মধ্যে ইভিএম মেশিন কেনা এবং এর ব্যবহার’-এ বিষয়গুলো যদি যৌক্তিক না হয়, সেটা নির্বাচন কমিশনই ঠিক করবে?
তবে আগামী জাতীয় নির্বাচনে ১০০ ভোট কেন্দ্রে ইভিএম ব্যবহার করা হবে বলে দেয়া নির্বাচন কমিশনের ঘোষণাকে স্বাগত জানান কাদের।
আগামী সেপ্টেম্বরে যুক্তফ্রন্টের জাতীয় ঐক্যের শোডাউন বিষয়টি ভালো দাবি করে কাদের বলেন, ‘নির্বাচন আসলে অনেক ধরনের পোলারাইজেশন হয়! সমীকরণ হয়! ফ্রন্ট হবে অ্যালায়েন্স হবে; এটা সবার গণতান্ত্রিক অধিকার। এখন গণফোরামের সঙ্গে যদি যুক্তফ্রন্টের মিলন হয়, এই সুখের মিলন নির্বাচন পর্যন্ত স্থায়ী হোক, আমরা এর শুভ কামনা করি। তবে শোডাউন বলতে যা বোঝায়, সেখানে যদি ২০১৪ সালের কোনো আগুন সন্ত্রাসের গন্ধ পাওয়া যায়, আন্দোলনের নামে সহিংসতা সৃষ্টি করা হয়? তাহলে কিন্তু জনগণ প্রতিরোধ করবে।
আন্দোলন যদি রাজনৈতিকভাবে ইতিবাচক আন্দোলন হয় তাহলে আমরা রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করবো আর সহিংসতার সমুচিত জবাব জনগণই দেবে। জনগণকে সঙ্গে নিয়েই জবাব দেয়া হবে বলেও কঠোর হুশিয়ারি উচ্চারণ করেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক।
ঢাকা মহাগর আওয়ামী লীগের কমিটিতে অন্তর্ভুক্তি নিয়ে কিছু কিছু জায়গায় সমস্যা আছে স্বীকার করে কাদের আরও বলেন, ছোটখাটো বিভেদগুলো সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক; আপনারা এটার সমাধান করতে পারেন না? এই নিয়ে আর কত কাল অভিযোগ শুনতে হবে? আমি আবারও ১০ দিন সময় দিচ্ছি। এটা লাস্ট। আর কোন সময় দেব না। আমাদের নেত্রী পরিষ্কারভাবে আমাকে যে নির্দেশ দিয়েছেন আমি সেটাই জানিয়ে দিচ্ছি।
তিনি বলেন, ১০ দিনের মধ্যে অন্তর্কলহ হতে পারে এ রকম বিষয়গুলো সমাধান করুন। যারা সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক হয়ে গেছেন, তাদের তো হারাবার কিছু নেই। নির্বাচন সামনে, ঐক্যের স্বার্থে একোমোডেট করলে অসুবিধা কোথায়?
নেত্রীর নির্দেশ, আগামী সেপ্টেম্বরের ২৫ তারিখের মধ্যে মহানগরের সব কেন্দ্রভিত্তিক কমিটি গঠন করতে হবে বলেও কঠোর হুশিয়ারি উচ্চারণ করেন তিনি।
মহানগর দক্ষিণের সভাপতি আবুল হাসনাতের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কর্নেল (অব.) ফারুক খান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক শামীম, মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, দফতর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, আইন সম্পাদক শ.ম রেজাউল হক, উপদফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, মহানগর দক্ষিণ ও উত্তরের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ এবং সাদেক খান প্রমুখ।