আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজধানীতে ১ অক্টোবর থেকে শুরু হচ্ছে আওয়ামী লীগের সপ্তাহব্যাপী গণসংযোগ কর্মসূচী। আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদকদের নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় নেতারা প্রতিদিন চারটি ভাগে ভাগ হয়ে রাজধানীর তিনটি করে মোট ১২টি ওয়ার্ডে এ কর্মসূচী পালন করবেন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ৩০ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় রাজধানীর ধানমণ্ডিস্থ আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের সম্পাদকমণ্ডলীর এক সভা শেষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আগামীকাল (১ অক্টোবর) থেকে আমরা ঢাকা শহরে সপ্তাহব্যাপী গণসংযোগ কর্মসূচী পালন করব। দলের চার যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদকদের নেতৃত্বে চারটি টিমে ভাগ হয়ে এ কর্মসূচী পরিচালনা করবেন।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফের নেতৃত্বে বিকেল চারটায় ওয়ারী থানার তিনটি ওয়ার্ডে গণসংযোগ কর্মসূচী পরিচালিত হবে। এ টিমে দলের সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, একেএম এনামুল হক শামীম, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক এডভোকেট মৃনালকান্তি দাস, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেনসহ অন্যান্য কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত থাকবেন।
রাজধানীর উত্তরার তিনটি ওয়ার্ডে সকাল এগারোটায় দলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ডা. দীপুমণি এমপির নেতৃত্বে গণসংযোগ কার্যক্রম পরিচালিত হবে। এ টিমে দলের সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যরিস্টার মুহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল এবং শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক শামসুন নাহার চাঁপাসহ অন্যান্য কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত থাকবেন।
রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকার তিনটি ওয়ার্ডে দলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানকের নেতৃত্বে গণসংযোগ কর্মসূচি পরিচালিত হবে। এ সময় দলের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এমপি, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী এবং শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক আব্দুস সাত্তারসহ অন্যান্য কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত থাকবেন।
রাজধানীর পল্টন এলাকার তিনটি ওয়ার্ডে দলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান এমপির নেতৃত্বে গণসংযোগ কার্যক্রম পরিচালিত হবে। এ কর্মসূচীতে দলের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক এমপি, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন এমপি, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক এডভোকেট আফজাল হোসেনসহ অন্যান্য কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত থাকবেন।
রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যাণে বিএনপির জনসভা সম্পর্কে জানতে চাইলে সেতুমন্ত্রী কাদের বলেন, বিএনপির সমাবেশে জনগণের উপস্থিতি দেখে মনে হয়েছে জনগণ তাদের সঙ্গে নেই। দলটি ক্রমেই সংকুচিত হচ্ছে। নেতিবাচক রাজনীতির জন্য বিএনপির তার জনসমর্থন হারিয়ে ফেলেছে।
তিনি বলেন, আমরা দেশের উত্তরবঙ্গে রেলযাত্রা ও চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে সাংগঠনিক সফর করেছি। ট্রেনযাত্রা ও সাংগঠনিক সফরের সময় পথসভাগুলো বিশাল সমাবেশের রূপ নিয়েছে। এত বড় বড় সমাবেশ হওয়ার পরও কোনো মারামারির ঘটনা ঘটেনি।
কাদের বলেন, আওয়ামী লীগের ওই দুটি কর্মসূচী পালনের সময় দিনাজপুরের বিরামপুরে ও কক্সবাজারের চকরিয়ার সমাবেশে যে জনসমাগম হয়ে বিএনপির সোহরাওয়াদী উদ্যানের কেন্দ্রীয় কর্মসূচীতেও তা হয় নি। তারপর বিএনপির সমাবেশে মারামারির যে ঘটনা ঘটেছে তা গণমাধ্যমে দেখতে পেয়েছি। আর তাদের জনসভার মঞ্চে সেলফি তোলার হিড়িকও দেখা গেছে।
তিনি বলেন, বিএনপির আজকের সমাবেশে তাদের ক্ষমতার সীমারেখা দেখলাম। ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও মারামারির ঘটনাও দেখলাম। এ দলের কেউ কাউকে মানে না।
জাতীয় নির্বাচন নিয়ে বিএনপির দাবির বিষয়ে তিনি বলেন, দেশের সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে। আর এ সংবিধানের কোনো পরিবর্তন ও সংকোচনের কোনো সুযোগ নেই। বিশ্বের অন্যান্য সংসদীয় দেশের মত আমাদেও দেশেও ক্ষমতাসীন সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে। নির্বাচন কমিশনকে সরকার প্রয়োজনীয় সহায়তা দান করবে।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, নির্বাচনে আগে আরো মেরুকরণ ও সমীকরণ হবে। এ সমীকরণ কোনো দিকে যায় তা জানার জন্য আরো ধৈর্য্য ধরতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান এমপি, ডা. দীপুমনি এমপি, এডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক এমপি, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম এমপি, বিএম মোজাম্মেল হক এমপি, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, তথ্য ও গবেষনা সম্পাদক এডভোকেট আফজাল হোসেন, বন ও পবিবেশ বিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, কেন্দ্রীয় কার্য নির্বাহী সংসদের সদস্য এস এম কামাল হোসেন ও মারুফা আক্তার পপি প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।