ইরানের ওপর ফের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করায় যুক্তরাষ্ট্রকে কঠোর তিরস্কার করেছে আন্তর্জাতিক বিচার আদালত। পাশাপাশি মানবিক বাণিজ্য, খাদ্য, ওষুধ ও বেসামরিক বিমানের ওপর আরোপ করা বিধিনিষেধ উঠিয়ে নিতেও ওয়াশিংটনকে নির্দেশ দিয়েছে।
বুধবার সকালে হেগের আদালত এ নির্দেশ দিলে এটাকে নিষেধাজ্ঞায় বিধ্বস্ত ইরানের বিজয় হিসেবে দেখা হচ্ছে।
চলতি বছরের জুলাইয়ে ২০১৫ সালের বহুপক্ষীয় পারমাণবিক চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করার ঘোষণা দেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
আদালতে অভিযোগে ইরান বলেছে, পারমানবিক চুক্তি থেকে একতরফা সরে গিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ১৯৫৫ সালের বিপ্লব-পূর্ব বন্ধুত্বের চুক্তি লঙ্ঘন করেছে। এছাড়াও জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবে অনুমোদিত পারমাণবিক চুক্তির শর্তাবলী অমান্য করেছে দেশটি।
আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা(আইএইএ) অন্তত ১২ বার ইরানের পরমাণু কার্যক্রম পরিদর্শন করে নিশ্চিত করে বলেছে, তেহরান চুক্তির সবগুলো শর্ত মেনে চলছে।
গত আগস্টে আদালতের শুনানিতে ইরানের আইনজীবী বলেছেন, ওয়াশিংটনের নিষেধাজ্ঞা ইরানের অর্থনীতির গলা চেপে ধরেছে। সাধারণ মানুষের জীবনের সবগুলো দিকে এ নিষেধাজ্ঞা ক্ষতিকর প্রভাব ফেলছে।
আদালতের বুধবারের নির্দেশকে আপাতত হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। বিচারকরা সর্বসম্মতভাবে এ রায় দিয়েছেন। তবে চূড়ান্ত রায় পেতে কয়েক বছর লাগতে পারে।
এ রায় মেনে চলা বাধ্যতামূলক। এমনকি আপিল করারও কোনো সুযোগ নেই। কিন্তু তা কার্যকর করতে আন্তর্জাতিক আদালতের কিছু করার নেই।
ওয়াশিংটনের যুক্তি হচ্ছে, এটা তাদের জাতীয় নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়।
রায়ের পর ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভেদ জারিফ টুইটারে বলেন, এটা নিষেধাজ্ঞা আসক্ত মার্কিন প্রশাসনের আরেকটি ব্যর্থতা। পাশাপাশি আইনের শাসনেরও বিজয়।
একতরফা মার্কিন আধিপত্যের বিরুদ্ধে সম্মিলিতভাবে প্রতিরোধ করা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জন্য অপরিহার্য বলে তিনি মন্তব্য করেন।