মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দাবি তিনি নাকি নিজের চেষ্টায় ধনী হয়েছেন। কিন্তু মঙ্গলবার দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমসের এক বিশ্লেষণে বলা হচ্ছে, ট্রাম্পের এমন দাবি মিথ্যা।
সেখানে বলা হয়, ১৯৯০-র দশকে ‘তার বাবা-মাকে কর ফাঁকি’ দিতে সাহায্য করে যে অর্থ জমিয়েছেন তাই দিয়ে আজকের সম্পদের মালিক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। বাবার আবাসন ব্যবসা থেকে আজকের মূল্যে ৪১৩ মিলিয়ন ডলার অর্থ পেয়েছিলেন ট্রাম্প।
টাইমসের ওই বিশ্লেষণ অনুযায়ী, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও তার ভাইবোনেরা মিলে তাদের বাবা-মায়ের লাখ লাখ ডলারের সম্পদ উপহার হিসেবে একটি ‘ভুয়া কর্পোরেশনে’ লুকিয়ে রেখেছিলেন। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তার বাবাকে ‘অন্যায়ভাবে কয়েক লাখ ডলারের কর কর্তনে’ সাহায্য করেছিলেন।
রেকর্ড পর্যালোচনা করে টাইমসের ওই বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, করের বিল কমাতে বাবা-মায়ের আবাসন খাতের সম্পদের কম মূল্যের দেখাতে ‘একটি কৌশল তৈরি’ করেছিলেন ট্রাম্প।
টাইমস কয়েক মাস তদন্তের পর ওই বিশ্লেষণ তৈরি করেছে। এসময় তারা এক লাখের বেশি আর্থিক নথিপত্র-ব্যাংকের বিবৃতি, আর্থিক হিসাব, নগদ ব্যয়ের বিবরণ ও বাতিল হওয়া চেক পর্যালোচনা করেছে। এছাড়া ট্রাম্পের বাবা ফ্রেড সি. ট্রাম্প ও পরিবারের অন্যান্য অংশীদার এবং ট্রাস্টের ২০০-র বেশি আয়কর রিটার্নও পর্যালোচনা করেছে টাইমস। এমনকি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বাবার সাবেক কর্মচারী ও উপদেষ্টাদেরও সাক্ষাৎকার নিয়েছে তারা।
তবে বুধবার টাইমসের ওই রিপোর্টকে এক টুইটের মাধ্যমে প্রত্যাখ্যান করেছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। তিনি লিখেন, এটি ‘খুব পুরনো, বিরক্তিকর এবং মানুষদের মত পরিবর্তনের চেষ্টা’। যদিও তিনি ওই প্রতিবেদনটির সরাসরি যুক্তিখণ্ডন করেননি।
ট্রাম্পের আইনজীবী চার্লস হার্ডার সোমবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, প্রতারণা ও কর ফাঁকির বিষয়ে দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমসের অভিযোগ শতভাগ মিথ্যা এবং চরম মানহানিকর।
ওই বিবৃতিতে আরও বলা হয়, কেউই কোনও প্রতারণা করেনি বা কর ফাঁকি দেয়নি। পুরোপুরি ভুল তথ্যের ভিত্তিতে এই মিথ্যা অভিযোগপূর্ণ রিপোর্ট তৈরি করেছে টাইমস।
ট্রাম্পের ভাই রবার্ট ট্রাম্প এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, সব ‘প্রয়োজনীয় কর পরিশোধ’ করা হয়েছে।
এদিকে টাইমস জানাচ্ছে, শিশু বয়স থেকে বাবার কাছ থেকে টাকা পেতে শুরু করেন ট্রাম্প এবং কলেজ পাসের পর বাবার কাছ থেকে প্রতি বছর ১০ লাখ ডলার করে পেতেন তিনি। যখন ট্রাম্পের বয়স ৪০-র এবং ৫০-র কোঠায় তখন তার আয় ৫০ লাখ ডলারের বেশি।
টাইমস বলছে, নিজের চেষ্টায় সফল হওয়ার ব্যাপারে ট্রাম্প যে দাবি করেন সেটি ঠিক নয়। বরং তার বাবার সম্পদের ওপর ভর করেই এতো অর্থের মালিক হয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।