দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে সিরিয়াদের। জঙ্গিগোষ্ঠী আইএসের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াচ্ছে গ্রামবাসী। পরিবার-প্রিয়জন বাঁচাতে তরুণরা তুলে নিচ্ছে অস্ত্র। সহায়-সম্পদ আর আপনজনদের রক্ষায় পালা করে পাহারা দিচ্ছে নিজেদের গ্রামগুলো।
৭ বছর আগে এই এলাকাটিই সবচেয়ে শান্তিপূর্ণ ছিল। অথচ দক্ষিণাঞ্চলীয় এই সোয়াইদার প্রদেশের প্রত্যন্ত এলাকাগুলোতে এখন তরুণদের কাঁধে কাঁধে অস্ত্র। আইএস নিধন লড়াইয়ে নেমেছে দলবেঁধে। আর তাদের অস্ত্র ও গোলাবারুদ দিয়ে সার্বিক সহযোগিতা করছে প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের বাহিনী।
সিরিয়ার বেশিরভাগ অঞ্চল থেকে পরাজিত ও বিতাড়িত হয়ে দক্ষিণ ও পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশের পাহাড়ি এলাকাগুলোতে আশ্রয় নিয়েছে আইএস। পাহাড়ি এই এলাকাতে দ্রুজ সম্প্রদায়ের বাস। মাস তিনেক আগে এ অঞ্চলে প্রথমবারের মতো বড় আকারের হামলা চালায় আইএস।।
হত্যা করে ২০০ জন গ্রামবাসীকে। বন্দি করে নিয়ে যায় আরও অন্তত ৩০ জন নারী ও শিশুকে।
এরপর থেকে নিয়ম করে হামলা চালাচ্ছে আইএস। চলতি সপ্তাহেই থারওয়াত আবু আম্মার নামে ২৫ বছর বয়সী এক নারীকে গুলি করে হত্যা করা হয়। আইএসের এ নির্মম হত্যাকাণ্ড ও অপহৃত নারী ও শিশুদেরকে কেন্দ্র করে গোটা অঞ্চলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
রাগে-ক্ষোভে একপর্যায়ে হাতে অস্ত্র তুলে নেয় এলাকার তরুণ-যুবকরা। এই দলের মধ্যে ১৪ বছরের কিশোরও রয়েছে। গ্রামের চারপাশে এবং রাস্তাগুলোতে পাহারা বসিয়েছে তারা। কেউ সামরিক ইউনিফরম পরা। আবার কারও ঐতিহ্যবাহী কালো ঢিলেঢালা জামা-পায়জামা ও সাদা টুপি পরা।
সুয়াইদার সীমান্তের প্রায় সাত-আটটি গ্রামে চলছে এই পাহারা। সবচেয়ে বেশি ক্ষুব্ধ ‘রামি’ গ্রামের বাসিন্দারা। এই গ্রামের অনেক তরুণই এখন আইএসের বিরুদ্ধে লড়ছে। শুধু তরুণরাই নয় তরুণীরাও লড়াই করছে সমানে। এমনই একজন সাহসী তরুণী মাইসোন সাব।
তিন মাস আগে আইএসের হামলায় বাবা-মা ও পরিবারের আরও ৩৪ জনকে হারান তিনি। নিজের সবকিছু হারিয়ে এখন গ্রামবাসীর রক্ষায় কাজ করছেন সাব। এপিকে এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, আমাদের সঙ্গে যা ঘটেছে আমরা এখনও তার ধকল কাটিয়ে উঠতে পারিনি। ওই ঘটনাকে আমার একটা স্বপ্ন বা দুঃস্বপ্নের মতো মনে হয়।