ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠায় পাঁচ দফা দাবিতে অভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামবে বিএনপি, যুক্তফ্রন্ট এবং জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া।
এক্ষেত্রে জামায়াতে ইসলামীকে বাইরে রেখেই পথ চলবে তারা। তবে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটে থাকবে জামায়াত। সেক্ষেত্রে বৃহত্তর জাতীয় ঐক্যে তাদের প্রকাশ্যে দেখা যাবে না।
রোববার প্রথমবারের মতো বিএনপি, যুক্তফ্রন্ট ও জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার শীর্ষ নেতাদের আনুষ্ঠানিক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়। রাত সোয়া ৯ টায় গুলশানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনের বাসায় অনুষ্ঠিত হয় এ বৈঠক।
বৈঠকে বিএনপির পক্ষে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, যুক্তফ্রন্টের পক্ষে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের- জেএসডি সভাপতি আসম আব্দুর রব, সহ-সভাপতি তানিয়া রব, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, বিকল্পধারা বাংলাদেশের মহাসচিব মেজর(অব.) মান্নান, জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার পক্ষে অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, মোস্তফা মহসীন মন্টু, সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহম্মেদ ও আবম মোস্তফা আমীন অংশ নেন।
এছাড়াও গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী এ সময় ছিলেন।
বৈঠক চলার মাঝপথে বেরিয়ে যাওয়ার সময় সাংবাদিকদের তিনি বলেন, দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও সংসদ ভেঙে দিয়ে নির্দলীয় সরকারের অধীনে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং গ্রহণযোগ্য ভোটের দাবিতে বিএনপি, যুক্তফ্রন্ট ও জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া এক সঙ্গে পথ চলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
অভিন্ন দাবিতে এক সঙ্গে কর্মসূচি পালন করবে তারা বলে জানান তিনি।
জানতে চাইলে এ প্রসঙ্গে জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব বলেন, স্বাধীনতাবিরোধী শক্তিকে বাইরে রেখে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী দেশের সব অসাম্প্রদায়িক, গণতন্ত্রমনা ও প্রগতিশীল শক্তির সমন্বয়ে আমরা দেশে একটি বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এই বৈঠক থেকে এ বিষয়টি আরও স্পষ্ট করা হল।
সূত্র জানায়, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তিসহ পাঁচ দফা দাবিতে একমঞ্চে থেকে আগামী দিনে আন্দোলন করার নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয় বিএনপি, যুক্তফ্রন্ট ও জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া।
তাদের অন্যান্য দাবির মধ্যে রয়েছে- নির্বাচনের আগে সংসদ ভেঙে দেয়া, প্রধানমন্ত্রীসহ মন্ত্রিসভার পদত্যাগ, নিরপেক্ষ সরকার গঠন, সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দিয়ে নির্বাচনের আগে ও পরে মোতায়েন রাখা, নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন ও ইভিএম ব্যবহার না করা, নিরাপদ সড়কের দাবি ও কোটা সংস্কার আন্দোলনে যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে তাদেরসহ সব রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তি দেয়া।
বৈঠক শেষে বিষয়টি নিশ্চিত করে বৃহত্তর জাতীয় ঐক্যে জামায়াতে ইসলামীর সম্পৃক্ত থাকাসম্পর্কিত এক প্রশ্নের জবাবে আ স ম আব্দুর রব বলেন, ‘আমরা বিএনপির সঙ্গে ঐক্য করছি। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সব দল এখানে থাকতে পারবে। তবে বিএনপির সঙ্গে অন্য কেউ থাকবে কি-না তা আমরা বলতে পারব না। বাংলাদেশের জনগণ চায় আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে বর্তমান স্বৈরচারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করি।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, ‘খালেদা জিয়ার মুক্তিসহ পাঁচটি মৌলিক দাবিতে আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়েছি। এগুলোর ওপর ভিত্তি করে বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলব। এই দাবিগুলো আদায় করে বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলন করব।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের দাবি- খালেদা জিয়ার মুক্তিসহ সব রাজনৈতিক নেতাদের মুক্তি এবং কোটা সংস্কার, নিরাপদ সড়কের দাবিতে আদোলনকারীদের মুক্তি, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচন, সংসদ ভেঙে দেয়া, নিরপেক্ষ সরকার গঠন, নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন ও নির্বাচনে সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দিয়ে মোতায়েন করা।’