২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলা মামলার রায় গুরুত্ব দিয়ে প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম। বিবিসি, আলজাজিরা, এনডিটিভি ও এবিসি নিউজসহ প্রভাবশালী গণমাধ্যমে এই খবর প্রকাশ করা হয়।
বুধবার ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায়ে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সাবেক উপমন্ত্রী আব্দুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনের ফাঁসি ও বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান, বেগম খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, বিএনপি নেতা কাজী শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন কায়কোবাদসহ ১৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
কাতারভিত্তিক আল জাজিরা তাদের অনলাইন সংস্করণে এই সংবাদের শিরোনাম করেছে, ‘২০০৪ সালের হামলার ঘটনায় ১৯ জনকে মৃতুদণ্ড দিল বাংলাদেশর আদালতে’। আলজাজিরা লিখেছে, ‘কারাবন্দি সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ছেলে তারেক রহমনাকে এই মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
তারেক রহমান বর্তমানে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এবং আগে মায়ের সাথে একই দুর্নীতি মামলায় তার ১০ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়। ২০০৮ সাল থেকে তারেক লন্ডনে নির্বাসিত জীবন যাপন করছেন।
আল জাজিরা আরও লিখেছে, বাংলাদেশর আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, তারেকের মৃতুদণ্ড পাওয়ার আশায় সরকার উচ্চ আদালতে আপিল করবে। তিনি বলেন, তারেককে লন্ডন থেকে দেশে ফেরাতেও আমরা কূটননৈতিক পদক্ষেপ নেব। এই রায়কে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদীত হিসেবে আখ্যায়িত করেছে বিএনপি।
বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিস তাদের অনলাইন সংস্করণে এ খবরে লিখেছে, মৃতুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের মধ্যে রয়েছেন একজন সাবেক মন্ত্রী ও একজন উপমন্ত্রী- যারা উভয়ই ওই ঘটনার সময় ক্ষমতাসীন বিএনপির নেতা ছিলেন। দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে তার অনুপস্থিতিতেই যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগের সমাবেশে ওই গ্রেনেড হামলায় নিহত হয়েছিলো ২৪ জন। দলটির প্রধান শেখ হাসিনা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী সংবাদ মাধ্যম এবিসি নিউজ লিখেছে, ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড ও বিরোধী দলীয় নেতার উত্তরাধীকারীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে বাংলাদেশের একটি ট্রাইবুনাল। ২০০৪ সালে তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেতা ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সমাবেশে গ্রেনেড হামলার ঘটনায় এই রায় দেয়া হয়েছে।
ভারতের এনডিটিভি অনলাইন এ সংক্রান্ত খবরের শিরোনাম করেছে, ২০০৪ সালের গ্রেনেড হামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার পুত্রের যাবজ্জীবন’। খবরের শুরুতেই লেখা হয়েছে, ২০০৪ সালের গ্রেনেড হামলার ঘটনায় বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার পলাতক পুত্র তারেক রহমানের যাবজ্জীবন ও অন্য ১৯ আসামির মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে বুধবার একটি আদালত। ওই হামলা ২৪জন নিহত ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ আরও ৫০০ জন আহত হয়েছিলেন।
কলকাতার বাংলা দৈনিক আনন্দবাজার শিরোনাম করেছে, ‘হাসিনার উপর হামলা: মৃত্যুদণ্ড ১৯, খালেদা-পুত্রসহ যাবজ্জীবন ১৭ জনের’। আনন্দবাজার লিখেছে, ‘২০০৪ সালের ২১ অগস্ট বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের জনসভায় শেখ হাসিনাকে খুনের চেষ্টায় গ্রেনেড হামলা হয়। ওই ঘটনায় প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্ত্রী, মহিলা আওয়ামী লীগের তদানীন্তন সভানেত্রী আইভি রহমান-সহ ২২ জন মারা যান। গুরুতর জখম হন কয়েকশো। তবে ওই সময় বাংলাদেশের বিরোধী নেত্রী শেখ হাসিনা জখম হলেও, ভাগ্যক্রমে প্রাণে বেঁচে যান।’
এছাড়া ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, পার্সটুডে, টাইমস অব ইন্ডিয়া বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েট প্রেসসহ বিশ্বের অনেক সংবাদ মাধ্যম খবরটি গুরুত্বের সাথে প্রকাশ করেছে।