কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দানবাক্সে মাত্র ৯৬ দিনে জমা পড়েছে এক কোটি ১৩ লাখ ৯৬ হাজার ৬৮৫ টাকা। সেইসঙ্গে পাওয়া গেছে বিপুল পরিমাণ স্বর্ণালঙ্কার ও বৈদেশিক মুদ্রা।
শনিবার সকালে জেলা প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে পাগলা মসজিদের পাঁচটি দানবাক্স খোলা হয়েছে। প্রথমে দানবাক্স থেকে টাকাগুলো বস্তায় ভরা হয়। এরপর শুরু হয় টাকা গণনা। প্রতিবারই এসব দানবাক্সে পাওয়া যায় প্রায় কোটি টাকা।
কিশোরগঞ্জ শহরের নরসুন্দা নদীর তীরে ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদ অবস্থিত। এই মসজিদে ইবাদত-বন্দেগি করলে বেশি সওয়াব পাওয়া যায় বলে বিশ্বাস অনেকের।
পাশাপাশি রোগ-শোক, বিপদে-আপদে এই মসজিদে মানত করলে মনের বাসনা পূর্ণ হয় এমন বিশ্বাস থেকে প্রতিদিন জেলার বিভিন্ন অঞ্চলের বাসিন্দা ছাড়াও দূর-দূরান্ত থেকে অসংখ্য মানুষ বিভিন্ন ধরনের জিনিসপত্র দান করেন।
শনিবার সকালে কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. হাবিবুর রহমান, সিনিয়র নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবু তাহের মো. সাঈদসহ আরও ছয়জন ম্যাজিস্ট্রেট ও মসজিদ পরিচালনা কমিটির সদস্যরা স্থানীয় মুরুব্বিদের উপস্থিতিতে মসজিদের পাঁচটি দানবাক্স খোলেন। পরে ১০টি বস্তায় টাকা ভর্তি করা হয়। পাশাপাশি স্বর্ণালঙ্কার ও বৈদেশিক মুদ্রা আলাদা করা হয়।
টাকা গণনা কার্যক্রম তদারকির দায়িত্বে থাকা জেলা প্রশাসনের সিনিয়র নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবু তাহের মো. সাঈদ জানান, তিন মাস পর শনিবার সকালে পাগলা মসজিদের পাঁচটি দানবাক্স খোলা হয়। এবার ৯৬ দিনে পাঁচটি দানবাক্সে পাওয়া গেছে এক কোটি ১৩ লাখ ৯৬ হাজার ৬৮৫ টাকা, স্বর্ণালঙ্কার ও বৈদেশিক মুদ্রা। নগদ টাকা গণনার কাজ শেষে সন্ধ্যায় নিরাপত্তা প্রহরীসহ টাকাগুলো রূপালী ব্যাংকে পাঠানো হয়েছে।
মসজিদ কমিটি সূত্রে জানা যায়, সর্বশেষ গেল সাত জুলাই মসজিদের পাঁচটি দানবাক্স খোলা হয়েছিল। তখন দুই মাসে ৮৮ লাখ টাকা পাওয়া যায়। এর আগেরবার তিন মাসে এক কোটিরও বেশি টাকা পাওয়া যায়।
কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক পদাধিকার বলে পাগলা মসজিদের সভাপতির দায়িত্ব পালন করে আসছেন। মসজিদের আয় থেকে জেলার বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে অনুদানসহ বিভিন্ন সেবামূলক খাতে সাহায্য দেয়া হয়। বিভিন্ন জটিল রোগে আক্রান্ত দরিদ্র মানুষকে চিকিৎসার জন্য মসজিদের তহবিল থেকে অর্থ সহায়তা দেয়া হয়। টাকা গণনার জন্য বিভিন্ন ব্যাংকের কর্মকর্তাদের দায়িত্ব দেয়া হয়। টাকা গণনায় সহযোগিতা করছেন মসজিদ কমপ্লেক্স মাদরাসার ছাত্ররা।
এসময় রূপালী ব্যাংকের কর্মকর্তারা ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শফিকুল ইসলাম, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নাজির হোসেন, খোদাদাদ, মীর তমাল ও সাগুফতা হক।