সাংবাদিক জামাল খাশোগি হত্যাকান্ডের ঘটনায় সৌদি কর্তৃপক্ষ শুক্রবার স্বীকারোক্তি দিয়েছিল সৌদি কর্তৃপক্ষ। কিন্তু এর এক দিন না যেতেই আবার 'নতুন তথ্য' দিলেন দেশটির এক শীর্ষ কর্মকর্তা।
১৫ কর্মকর্তাকে সৌদি আরব থেকে ইস্তাম্বুলে পাঠানো, খাশোগিকে কনস্যুলেটের ভেতরে ভয়ভীতি দেখানো, অপহরণ করা হয় এবং শেষে প্রতিরোধের মুখে টুকরো টুকরো করে কাটার বিষয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে রয়টার্স নতুন তথ্য দিয়েছেন ওই কর্মকর্তা।
সৌদি কর্মকর্তা বলেন, কনস্যুলেটের মধ্যেই খাশোগিকে হত্যা করা হয় এবং হত্যার পর খাশোগির পোশাক পরে এক কর্মকর্তা কনস্যুলেট থেকে বেরিয়ে গিয়েছিল। জামাল খাসোগি কনস্যুলেট থেকে বেরিয়ে গেছেন এটা প্রমাণ করতেই এ কৌশল নেয়া হয়।
সৌদির ওই কর্মকর্তা জানান, রাজপরিবারের সাবেক এই উপদেষ্টাকে রিয়াদে ফিরিয়ে নিতে চেয়েছিল সরকার। এজন্য ১৫ সদস্যের একটি দলকে ইস্তাম্বুলে পাঠানো হয়।
সৌদির জেনারেল ইন্টেলিজেন্স প্রেসিডেন্সির উপ-প্রধান আহমেদ আসিরি এই ১৫ জনের দল গঠন করেন। তারা খাশোগির সঙ্গে সাক্ষাত করে তাকে বুঝিয়ে দেশে ফিরিয়ে আনতে চেয়েছিলেন।
তাকে ফিরিয়ে আনতে শান্তিপূর্ণ উপায় অবলম্বনের স্থায়ী আদেশ জারি ছিল ওই ১৫ সদস্যের দলের প্রতি। তবে এই আদেশে অনুমতি ছাড়া যেকোনো সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা ছিল।
দলটির পরিকল্পনা ছিল, ইস্তাম্বুলের বাইরে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত খাশোগিকে আটকে রাখার হবে। শেষ পর্যন্ত যদি ফিরতে না চান তাহলে তাকে ছেড়ে দেয়া হবে।
তিনি বলেন, এরকমই নির্দেশনা ছিল কিন্তু শুরুতেই সবকিছু ভুল পথে পরিচালিত হতে থাকে। এক পর্যায়ে এই কর্মকর্তারা আদেশ লঙ্ঘন করে দ্রুত সহিংস হয়ে উঠেন। তারা খাশোগিকে কনসাল জেনারেলের কার্যালয়ে নেয়। যেখানে মাহের মুতরেব নামের এক কর্মকর্তার সঙ্গে তিনি তর্কবিতর্কে জড়িয়ে পড়েন।
খাশোগি মুতরেবকে বলেন, যদি তিনি এক ঘণ্টার মধ্যে কনস্যুলেট ভবন থেকে বের না হন, তাহলে তুরস্ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন বাইরে থাকা ওই নারী।
মুতরেব কূটনৈতিক নীতি-নৈতিকতা লঙ্ঘন করছেন উল্লেখ করে খাশোগি তাকে বলেন, আপনি আমার সঙ্গে কী করতে যাচ্ছেন। আপনি কী আমাকে অপহরণ করতে চান?
মুতরেব বলেন, হ্যাঁ। আমরা তোমাকে ড্রাগ প্রয়োগ করবো এবং তুলে নিয়ে যাবো। এরপর খাশোগি চিৎকার শুরু করলে তাকে শান্ত করতে মুখে কাপড় ঢুকিয়ে দেন। চিৎকার থামানোর চেষ্টা ব্যর্থ হয় এবং শ্বাসরোধে মারা যান খাশোগি।