logo
আপডেট : 29 October, 2018 18:00
তফসিলের আগেই ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে সংলাপে বসবে আওয়ামী লীগ
ঢাকা অফিস

তফসিলের আগেই ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে সংলাপে বসবে আওয়ামী লীগ

আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেই জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে সংলাপে বসবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সোমবার আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমণ্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

তিনি বলেন, সংলাপের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দরজা সবার জন্য সব সময় খোলা। পার্টির পক্ষ থেকে আমরা জানিয়ে দিচ্ছি এই সংলাপে আমরা সম্মত। খুব শীঘ্রই জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে এই সংলাপের স্থান ও সময় জানিয়ে দেয়া হবে।

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ১১ দফা কর্মসূচি ও ৭ দফা দাবি মেনে নেয়া হবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, কোন দাবি মেনে নেয়া হবে আর কোনটা মেনে নেয়া হবে না আমরা এখন এ বিষয়ে কিছুই বলতে চাইনা, সংলাপে সব বিষয়ে আলোচনা হবে।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও বলেন, আমরা কারও চাপের মুখে নতি স্বীকার করিনি। আমাদের পক্ষ থেকে আমরা কাউকে সংলাপে ডাকিনি। একাদশ সংসদ নির্বাচনের পূর্বক্ষণে কোনো চাপের মুখে এই সংলাপ হচ্ছে না এবং তার কোনো পূর্বশর্তও দিচ্ছে না।

এর আগে, গতকাল রোববার প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা এবং দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে সংলাপে বসার জন্য চিঠি দেন গণফোরাম সভাপতি ও বিশিষ্ট আইনজীবী ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট।

সাত দফা দাবি এবং ১১ দফা লক্ষ্য সম্বলিত চিঠিটি গ্রহণ করেন আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপ। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের দুই নেতা গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টু ও জাতীয় ঐক্যপ্রক্রিয়ার সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহম্মেদ চিঠিটি পৌঁছে দেন।

শেখ হাসিনাকে দেয়া ড. কামালের চিঠিতে বলা হয়-

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার ও সভাপতি, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ গণভবন, ঢাকা। বাংলাদেশ।

প্রিয় মহোদয়

শুভেচ্ছা নেবেন

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে এক দীর্ঘ আন্দোলন- সংগ্রাম এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে ত্রিশ লাখ শহীদের আত্মত্যাগ ও দুই লক্ষ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে আমাদের স্বাধীনতা।

যে সকল মহান আদর্শ ও মূল্যবোধ আমাদের জনগণকে জাতীয় মুক্তি সংগ্রামে উজ্জীবিত ও আত্মত্যাগের উদ্বুদ্ধ করেছিল -তার অন্যতম হচ্ছে 'গণতন্ত্র।' গণতন্ত্রের প্রথম শর্তই হচ্ছে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠান। জনগণের ভোটে নির্বাচিত প্রতিনিধিগণ জনগণের পক্ষে জনগণের ক্ষমতা প্রয়োগ করবে এবং জনগণকে শোষণ থেকে মুক্তির লক্ষ্যে- রাষ্ট্রের আইন প্রণয়ন ও শাসনকার্য পরিচালনা করবে-এটাই আমাদের সাংবিধানিক অঙ্গীকার।

আপনি নিশ্চয়ই একমত হবেন যে, বাংলাদেশের জনগণ নির্বাচনকে একটি মহোৎসব মনে করে। 'ব্যক্তির এক ভোট' এর বিধান জনগণের জন্য বঙ্গবন্ধুই নিশ্চিত করেছেন- যা রক্ষা করা আমাদের সকলের সাংবিধানিক দায়িত্ব।

ইতিবাচক রাজনীতি একটা জাতিকে কীভাবে ঐক্যবদ্ধ করে জনগণের ন্যায়সংগত অধিকারগুলো আদায়ের মূলশক্তিতে পরিণত করে- তা বঙ্গবন্ধু আমাদের শিখিয়েছেন। নেতিবাচক রুগ্ন-রাজনীতি কীভাবে আমাদের জাতিকে বিভক্ত ও মহাসংকটের মধ্যে ফেলে দিয়েছে, তাও আমাদের অজানা নয়। এ সংকট থেকে উত্তরণ ঘটানো আজ আমাদের জাতীয় চ্যালেঞ্জ। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ৭ দফা দাবি ও ১১ দফার লক্ষ্য ঘোষণা করেছে। একটি শান্তিপূর্ণ ও সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে সবার অংশগ্রহণ ও প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সঙ্গে একটি অর্থবহ সংলাপের তাগিদ অনুভব করছে এবং সে লক্ষ্যে কার্যকর উদ্যোগ প্রত্যাশা করছি।

আপনার সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করছি।

ধন্যবাদান্তে ড. কামাল হোসেন।