মার্কিন কংগ্রেসে প্রথমবারের মতো দু’জন মুসলিম নারী নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন। তাদের বিজয় নিশ্চিত। তাদের একজন হলেন সোমালিয়ার শরণার্থী ইলহান ওমর। আরেকজন ফিলিস্তিনি অভিবাসী পিতামাতার সন্তান রাশিদা তৈয়ব।
মার্কিন প্রশাসন যখন ভীষণভাবে মুসলিম ও অভিবাসন বিরোধী অবস্থানে তখন তাদের এভাবে দায়িত্বে আসা সত্যিই ঐতিহাসিক। আগামী ৬ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেসের মধ্যবর্তী নির্বাচন। এতে নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদের ৪৩৫ টি আসনের সব ক’টিতে এবং উচ্চ কক্ষ সিনেটের ১০০ আসনের মধ্যে ৩৫টিতে নির্বাচন হচ্ছে। তাতে প্রতিনিধি পরিষদে ওই দুই মুসলিম নারীর বিজয় নিশ্চিত।
ইলহান ওমর মিনেসোটা থেকে নির্বাচিত হচ্ছেন। এ অঞ্চলটি ডেমোক্রেটদের ঘাঁটি। সেখানে দল থেকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে ইলহান ওমরকে। ফলে সেখানে জয় তার সুনিশ্চিত। অন্যদিকে রাশিদা তৈয়বা ডেট্রয়েটের একজন সমাজসেবক। অভিবাসী পরিবারে জন্ম হওয়ায় তিনি সামাজিক দায়িত্ববোধ নিয়ে কাজ করেন। প্রথম মুসলিম নারী হিসেবে তিনিই প্রথম ওই রাজ্য থেকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হতে চলেছেন।
এ দু’জন নারীই প্রথম যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেসে মুসলিম প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে যাচ্ছেন। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেসে মোট মুসলিম সদস্যের সংখ্যা দাঁড়াবে তিন জনে।
কারণ, কংগ্রেসে এই মুহূর্তে আরো একজন মুসলিম প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তবে তিনি পুরুষ। তার নাম আঁদ্রে কারসন। তিনি আফ্রিকান বংশোদ্ভুত। তিনি ইন্ডিয়ানা রাজ্যে পুনরায় নির্বাচন করছেন। এ আসনটি ডেমোক্রেটদের জন্য অতি মাত্রায় নিরাপদ। আর সেখানে ডেমোক্রেট দল থেকে নির্বাচন করছেন কারসন। তাই তার জয়ও নিশ্চিত বলে মনে করা হয়।
যুক্তরাষ্ট্রে যখন মুসলিম বিরোধী সেন্টিমেন্ট ক্রমেই বাড়ছে তখন কংগ্রেস নির্বাচনে মুসলিমদের এমন কাঙ্খিত বিজয় এক মাইলফলক সৃষ্টি করবে। কাউন্সিল অন আমেরিকান-ইসলামিক রিলেশনস (কেয়ার) রিপোর্ট করছে যে, ২০১৮ সালের প্রথম ছয় মাসে যুক্তরাষ্ট্রে মুসলিম বিরোধী ঘৃণা থেকে অপরাধ বৃদ্ধি পেয়েছে শতকরা ২১ ভাগ।
রাশিদা তৈয়বা ও ইলহান ওমর দু’জনেই প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প ও তার দল রিপাবলিকানদের ঘোর বিরোধী। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প অভিবাসন পলিসিতে যে বিধিনিষেধ আরোপ করেছেন তার ঘোর বিরোধী এরা দু’জনেই। এ ছাড়া তারা সবার জন্য স্বাস্থ্য সেবাকে সমর্থন করে। তবে রিপাবলিকানরা এর বিরোধী। তৈয়বা ও ওমর দু’জনেই চান যুক্তরাষ্ট্রের ইমিগ্রেশন ও কাস্টমস এনফোর্সমেন্টের (আইসিই) বিলোপ।
এরই মধ্যে দেশজুড়ে ঘেরাও, তল্লাশি অভিযান পরিচালনা করেছে আইসিই। এর ফলে অভিবাসী সম্প্রদায়ের মধ্যে দেশ থেকে বের করে দেয়ার আতঙ্ক বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে মিশিগানে দীর্ঘদিন যেসব ইরাকি শরণার্থী অবস্থান করছেন তাদের মধ্যে এই ভয় বেশি।
এমনই এক প্রেক্ষাপটে জাতি, ধর্ম, বর্ণ, লিঙ্গভেদ সব কিছুকে পিছনে ফেলে রিপাবলিকানদের সামনে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন এসব মুসলিম প্রার্থী।