প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার কাছে রীতিমতো ধরাশায়ী হলেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন আইনজীবী ড. কামাল হোসেন। প্রধানমন্ত্রীর পাঁচ প্রশ্নের একটিরও উত্তর দিতে পারলেন না এই সংবিধান বিশেষজ্ঞ।
বুধবার জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে দ্বিতীয় দফার সংলাপে রীতিমতো নকআউট হন ড. কামাল হোসেন। অথচ কদিন আগেই তিনি বলেছিলেন ‘এক মিনিটেই’ তিনি সংকটের সমাধান দিতে পারবেন। কিন্তু আজ প্রধানমন্ত্রী পাঁচ প্রশ্নের একটিরও সদুত্তর দিতে পারেননি ড. কামাল। প্রধানমন্ত্রীর প্রশ্নগুলো ছিল এরকম:
১. জাতীয় ঐক্য ফ্রন্ট দাবি করে সংসদ ভেঙ্গে দিয়ে নির্বাচন করতে হবে। এই দাবির বিপরীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ড. কামাল হোসেনের কাছে জিজ্ঞেস করেন ‘আপনি তো ৭২ এর সংবিধানের প্রণেতা। ৭২ সংবিধানে কি সংসদ ভেঙ্গে নির্বাচনের বিধান ছিল?’ এর জবাবে ড. কামাল ছিলেন নিশ্চুপ।
২. জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট থেকে দ্বিতীয় দাবি ছিল, নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার। সংবিধানের ১২৩ (খ) প্রয়োগ করে, সংসদ ভাঙার ৯০ দিন পর নির্বাচনের দাবি উত্থাপন করা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ প্রসঙ্গে আবার ড. কামাল হোসেনের কাছে জানতে চান, সংসদের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। সংসদ এখন নিষ্ক্রিয়। এখন কোনো সাংবিধানিক বিধানে সংসদ ভাঙা যায়?’ ড. কামাল এ প্রশ্নের উত্তরে মাথা নিচু করে থাকেন।
৩. জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে তৃতীয় দাবি ছিল প্রধানমন্ত্রী থাকবে। কিন্তু ১০ সদস্যের একটি উপদেষ্টামণ্ডলী দেশ চালাবে। প্রধানমন্ত্রী জিজ্ঞেস করেন, এই উপদেষ্টামণ্ডলী কারা ঠিক করবে? উত্তরে ড. কামাল বলেন, আমরা সবাই মিলে ঠিক করবো। এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী ড. কামাল হোসেনের কাছে জানতে চান, আমাদের সংবিধানে কোথায় আছে এরকম উপদেষ্টাদের দিয়ে দেশ চালানো যায়? এবারও নিরুত্তর ড. কামাল হোসেন।
৪. জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে দাবি তোলা হয়, বেগম জিয়াকে যেন নির্বাচনের আগে জামিন দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী ড. কামাল হোসেনের কাছে জানতে চান, ‘রাষ্ট্রের নির্বাহী বিভাগ কি একজনকে আটক ব্যক্তিকে জামিন দিতে পারে?’ তিনি জিজ্ঞেস করেন, ‘এটা কি বিচার বিভাগের স্বাধীনতার পক্ষে?’ এবারও ড. কামাল নিশ্চুপ থাকেন।
৫. জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েন এবং সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার দেওয়ার দাবি জানানো হয়। প্রধানমন্ত্রী জানতে চান, সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি দেওয়া সংবিধানের পরিপন্থী কিনা? এবারও ড. কামাল মাথা নিচু করেন।
প্রধানমন্ত্রীর যুক্তির কাছে, প্রজ্ঞার কাছে এভাবেই ধরাশায়ী হন ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে ঐক্যফ্রন্ট। প্রধানমন্ত্রী তাদের বলেন, ‘আপনারা সংবিধান বিশেষজ্ঞ, আমি সাধারণ মানুষ। আমাকে যুক্তি দিয়ে বোঝান, সংবিধানসম্মত সব দাবি আমি মেনে নেবো।’